চলে গেলেন কালজয়ী অভিনেত্রী সুপ্রিয়া দেবী

চলে গেলেন কালজয়ী অভিনেত্রী সুপ্রিয়া দেবী। শুক্রবার ভোরে হৃদরোগে আক্রান্ত শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বাংলা চলচ্চিত্র জগতের হারাল এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী। সকাল ৬ টা বেজে ২০ মিনিটে বাথরুমে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন অভিনেত্রী। তারপর সেখান থেকে তাঁকে বের করে আনার পর চিকিৎসকরা তাঁকে মৃৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। বার্ধক্যজনিত কারণে দীর্ঘদিন ধরেই ভুগছিলেন এই অভিনেত্রী। সুপ্রিয়া দেবীর প্রয়াণ বাংলা চলচ্চিত্র জগতের অপূরণীয় ক্ষতি, মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সুপ্রিয়ার চলে যাওয়াটা ভাষায় ব্যক্ত করা যাবে না, প্রতিক্রিয়া বিশিষ্ট পরিচালক তরুণ মজুমদারের। প্রবীণ অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেন- ষাট বছরের বন্ধুত্বে আজ ছেদ পড়ল,যেসময় সুপ্রিয়া দেবী টলিউডে অভিনয় করতেন, সেটা ছিল বাংলা ইন্ডাস্ট্রির স্বর্ণযুগ।
অভিনয় জগতে হাতেখড়ি হয় ১৯৪৩ সালে। তখন তাঁর বয়স মাত্র সাত বছর। দীর্ঘ অর্ধ শতকের অভিনয় জীবনে আভিজাত্যের ছাপ রাখতে সফল হয়েছিলেন অভিনেত্রী সুপ্রিয়া দেবী। ১৯৫২ সালে উত্তমকুমারের বিপরীতে‘বসু পরিবার’ ছবির মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্র জগতে পথ চলা শুরু এই অভিনেত্রীর । ১৯৫৯ সালে মহানায়ক উত্তমকুমারের বিপরীতে ‘সোনার হরিণ’ ছবির সৌজন্যে জনপ্রিয়তা পান সুপ্রিয়া। তারপর তাঁকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তবে ১৯৬০ সালে ঋত্বিক ঘটকের ‘মেঘে ঢাকা তারা’-এ নীতার চরিত্রে সুপ্রিয়ার অভিনয় আজও সকলের হৃদয় নাড়া দেয়। ।অভিনয় দক্ষতার জন্য ফিল্মফেয়ার, পদ্মশ্রী, বঙ্গবিভূষণ সহ একাধিক সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন তিনি।তাঁর অভিনীত ছবির মধ্যে রয়েছে ‘মধ্য রাতের তারা’, ‘কমনগান্ধার’, ‘উত্তরায়ণ’, ‘সূর্যশিখা’, ‘লালপাথর’, ‘দূর গগণ কি ছাঁও মে’, ‘শুধু একটি বছর’, ‘কাল তুমি আলেয়া’, ‘তিন অধ্যায়’, ‘চৌরঙ্গী’, ‘সবরমতী’, ‘মন নিয়ে’, ‘চিরদিনের’, ‘সন্ন্যাসী রাজা’, ‘বাঘবন্দি খেলা’র মতো একাধিক ছবি। দুবার তাঁকে বাংলা ফিল্ম জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশ থেকে সম্মানিত করা হয়।স্বভাবতোই এই অভিনেত্রীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে চলচ্চিত্র মহলে।