শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি এবং দুর্নীতির প্রতিবাদে ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ

News Sundarban.com :
ডিসেম্বর ৩০, ২০১৭
news-image

ইরানে বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার করায় নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির দুর্বল অর্থনীতির প্রতিবাদ জানাতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করায় এসব বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে ইরানের পুলিশ।

বৃহস্পতিবার বিক্ষোভের প্রথমদিনে ইরানের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী মাশাদ থেকে ৫২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে বিক্ষোভ রাজধানী তেহরানসহ দেশের অন্যান্য নগরীতেও ছড়িয়ে পড়ে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শুক্রবার হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইরানের বিভিন্ন নগরীতে নাগরিকরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করে সরকারের দুর্নীতি ও দুর্বল আর্থিক ব্যবস্থার এবং সন্ত্রাসবাদকে অর্থের যোগান দেয়ার প্রতিবাদ জানায়।

প্রতিবাদকারীদের গ্রেফতার করায় বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিন্দা জানান।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার থেকে ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়, যা শুক্রবার আরও কিছু শহরে ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা বলছে, জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি এবং দুর্নীতির কারণে তারা ক্ষুব্ধ। ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর কেরমানশাহ এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর শিরাজে বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। এরমধ্যে কেরমানশাহ শহরের বিক্ষোভে বহু মানুষ যোগ দিয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। এর আগে বড় বিক্ষোভ হয় উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর মাশহাদে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশটির আরও অনেক জায়গায় সরকার বিরোধী বিক্ষোভের ডাক দেয়া হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তেহরানের গভর্নর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, এরকম সরকার বিরোধী বিক্ষোভের কোন অনুমতি নেই এবং পুলিশ এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।

বিক্ষোভকারীদের মূল অভিযোগ হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছে। ডিমের দাম এক সপ্তাহেই বেড়ে দ্বিগুন হয়েছে। তবে কোনো কোনো বিক্ষোভে সরকার বিরোধী রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দাবি করা হচ্ছে।

ইরানে এ ধরনের স্বতঃস্ফূর্ত সরকারবিরোধী বিক্ষোভ বেশ বিরল। ইরানের বিপ্লবী বাহিনি এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এরকম বিক্ষোভ যাতে হতে না পারে, সেজন্যে বেশ সতর্ক থাকে।

ইরানের সরকার যথারীতি এই বিক্ষোভের জন্য ‘প্রতি বিপ্লবী’ এবং ‘বিদেশি এজেন্টদের’ দায়ী করছে। একটি জরিপে দেখা যাচ্ছে, গত দশ বছরে ইরানের গড়পড়তা একজন মানুষের আয়-উপার্জন প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গেছে।

অনেকে মনে করে, ইরানের নেতারা বিদেশে যুদ্ধ চালাতে গিয়ে প্রচুর অর্থ খরচ করছেন, যা তাদের দেশেই ব্যয় করা উচিৎ। শিয়া ইসলামের প্রচারের কাজেও তারা শত শত কোটি টাকা খরচ করছে। প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ২০১৫ সালে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর সঙ্গে যে পরমাণু চুক্তি সই করেন, তারপর বলেছিলেন, এর ফলে এখন ইরানের অর্থনীতি ভালো হবে।

এই চু্ক্তির পর ইরানের অর্থনীতি মন্দা থেকে বেরিয়ে আসে, কিন্তু অনেক ব্যবসা-বাণিজ্য এখনো বিনিয়োগের অভাবে সংকটে রয়েছে। -এএফপি ও বিবিসি