বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বাংলাদেশ মানবতার পক্ষে দাঁড়িয়েছে : পোপ 

News Sundarban.com :
নভেম্বর ৩০, ২০১৭
news-image

এম এ আহাদ শাহীন:

সফররত রোমান ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস বলেন, বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ বিশাল ত্যাগ স্বীকার করছে।  বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে তাঁর সৌজন্যে দেওয়া সংবর্ধনায় তিনি একথা বলেন।

পোপ ফ্রান্সিস আরো বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে আসা অসহায় মানুষদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মানবতার পক্ষে দাঁড়িয়েছে।

এদিকে, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে পোপের বক্তব্য এ সমস্যা সমাধানে সবাইকে আশান্বিত করেছে।

অনুষ্ঠানে সারা বিশ্বের নিপীড়িত মানুষ বিশেষ করে শরণার্থী এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে পোপের জোরালো অবস্থানের কথা তুলে ধরেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়েও পোপের এযাবৎকালের বক্তব্য বিশ্বনেতাদের আরো তৎপর করে তুলবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বিমানবন্দর থেকে পোপ ফ্রান্সিস বঙ্গভবনে পৌঁছালে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাঁকে স্বাগত জানান। তাঁরা দুজন এ সময় বৈঠক করেন। বাংলাদেশ ও ভ্যাটিকানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে তাঁরা আলোচনা করেন।

পোপ ফ্রান্সিস বাংলাদেশে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বিকেলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। তাঁকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ক্যাথলিক ধর্মীয় গুরু ও সার্বভৌম ভ্যাটিকান সিটির প্রধান তাঁর তিনদিনের মিয়ানমার সফর শেষে বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে বিকেল ৩টা ৫ মিনিটে ঢাকায় অবতরণ করলে ২১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে তাঁকে স্বাগত জানানো হয়।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ভিভিআইপি টারমাকের কাছে পোপকে স্বাগত জানান। এ সময় দুটি ছোট শিশু পোপকে ফুলের তোড়া উপহার দেয়। পোপকে গার্ড অব অনার ও রাষ্ট্রীয় অভিবাদন প্রদান করা হয়। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে পোপ ফ্রান্সিস অভিবাদন গ্রহণ করেন। এ সময় বাংলাদেশ ও ভ্যাটিকান সিটির জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। এটাই হচ্ছে ক্যাথলিক কোনো পোপের দ্বিতীয় বাংলাদেশ সফর। এর আগে ১৯৮৬ সালে পোপ দ্বিতীয় জন পল বাংলাদেশ সফর করেন।

এরপর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ উপস্থিত মন্ত্রিবর্গ ও অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে পোপের পরিচয় করিয়ে দেন।

পোপকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, তিন বাহিনীর প্রধানরা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব সুরাইয়া বেগম, বাংলাদেশে ভ্যাটিকান সিটি রাষ্ট্রদূত জর্জ কোচেরি ও পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।

বিমানবন্দর থেকে পোপ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যান। এরপর তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

পোপ ফ্রান্সিস ৮০ বছর আগে ১৯৩৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনার বুয়েন্স এইরেসে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ ২৬৬তম পোপ হিসেবে নির্বাচিত হন। একই সঙ্গে ৩১৯ একর আয়তনের ক্ষুদ্রতম রাষ্ট্র ভ্যাটিকান সিটির রাষ্ট্রপ্রধান পদে অধিষ্ঠিত হন।