বৃহস্পতিবার, ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কোন ও আগাম ঘোষণা ছাড়াই সৌদি আরবে ফরাসি প্রেসিডেন্ট

News Sundarban.com :
নভেম্বর ১১, ২০১৭
news-image

সৌদি আরব ও লেবাননের মধ্যে সংকট ঘনীভূত হওয়ার প্রেক্ষাপটে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ কোন আগাম ঘোষণা ছাড়াই সৌদি আরব সফরে গেছেন।

শুক্রবার বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সা’দ হারিরির পদত্যাগের কয়েক দিন পর ম্যাক্রোঁ রিয়াদে এলেন।

পদত্যাগের কারণ হিসেবে হারিরি বলেছিলেন, তার জীবনের ওপর হুমকি রয়েছে। লেবাননের ইরানপন্থি গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ বলেছে, সৌদি আরবের চাপের মুখেই হারিরি পদত্যাগ করেছেন।

লেবাননের সঙ্গে ফ্রান্সের ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত লেবানন ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিল।

সৌদি আরব যাওয়ার আগে বৃহস্পতিবার ফরাসি প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) সফর করেন।ফ্রান্সের বিখ্যাত জাদুঘর ল্যুভরের আদলে তৈরি ‘ল্যুভর আবুধাবি’ উদ্বোধন করতে ইউএই যান তিনি। সেখান থেকেই পরে রিয়াদ যান ম্যাক্রোঁ।

দুবাই সফরকালে মাক্রোঁ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সকল লেবানিজ নেতার স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে।তিনি আরও বলেন, ‘যারা কোন নেতার জীবনের প্রতি হুমকি হতে পারে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে হবে।’

সা’দ হারিরির কথিত ‘জীবননাশের ষড়যন্ত্র’ নিয়ে কোন বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। হারিরির বর্তমান অবস্থা নিয়েও অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। তাকে রিয়াদে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে বলেও গুজব রয়েছে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ জানান, তার সঙ্গে হারিরির অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাননি তিনি। অন্যদিকে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, হারিরি স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরা করতে পারছেন। এরই মধ্যে লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন সা’দ হারিরিকে দেশে ফেরত দেবার দাবি জানিয়েছেন বলে জানা গেছে। লেবাননের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, প্রেসিডেন্ট আউন লেবাননে সৌদি রাষ্ট্রদূতকে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে হারিরির পদত্যাগের প্রেক্ষাপট গ্রহণযোগ্য নয়।

শনিবার একটি ভিডিও বার্তায় হারিরি হিজবুল্লাহ ও ইরানের সমালোচনা করেন।

অনেকে আশংকা করছেন, সুন্নি-প্রধান সৌদি আরব ও শিয়া-প্রধান ইরানের মধ্যে চলমান বিবাদে লেবাননও জড়িয়ে যেতে পারে। সৌদি আরব ইতোমধ্যেই লেবানন থেকে তার সব নাগরিককে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, সৌদি আরবের কাছ থেকে ইরান সম্পর্কে বেশ ‘কঠোর মতামত’ তিনি শুনেছেন, যার সাথে তার নিজস্ব মতামত মেলে না।

ম্যাক্রোঁ ইরানের সঙ্গে ২০১৫ সালে সম্পাদিত পারমাণবিক চুক্তির বড় সমর্থক, যেটা সৌদি আরব ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কঠোরভাবে সমালোচনা করেছে।

হারিরির পদত্যাগের পর থেকে ইরান, সৌদি আরব ও লেবাননের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে।

গত শনিবার ইয়েমেন থেকে রিয়াদের বিমানবন্দর লক্ষ্য করে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হলে সৌদি আরব ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি সামরিক আগ্রাসনের অভিযোগ তোলে।

সৌদি আরব বলছে, লেবাননের হিজবুল্লাহ বাহিনী ইয়েমেন থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করে, যেটা ইরান সরবরাহ করেছিল।

ইরান সৌদিদের এই অভিযোগ ‘বানোয়াট ও বিপজ্জনক’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।