বুধবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ডেঙ্গু পরীক্ষার খরচ নিয়ে জোর কাজিয়া বাধল রাজ্য ও নাইসেড-এর

News Sundarban.com :
অক্টোবর ২৫, ২০১৭
news-image

বেশ কিছুদিন ধরেই রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে পূর্ব ভারতের সবচেয়ে বড় কেন্দ্রীয় চিকিৎসা গবেষণাকেন্দ্র ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এনটেরিক ডিজিজ (নাইসেড)-এর ঠান্ডা লড়াই চলছিল। ডেঙ্গু পরীক্ষার খরচ নিয়ে জোর কাজিয়া বাধল রাজ্য ও নাইসেড-এর। পরস্পরের উপর নির্ভরশীল দু’পক্ষই অভিযোগ পালটা অভিযোগে একে অন্যকে বিঁধেছে।
রাজ্যের অভিযোগ, বাংলার মানুষের এই বিপদের সময়ও ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে লাখ লাখ টাকা নিচ্ছে কেন্দ্রীয় সংস্থা নাইসেড। অন্যদিকে, নাইসেড-এর অভিযোগ, কেন্দ্রের পাঠানো টাকাই আমাদের হাতে তুলে দিয়ে নিজেদের বলে দাবি করছে রাজ্য। তাছাড়া স্বাস্থ্য রাজ্যের বিষয়।
সম্প্রতি স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনকে ফের পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য। পুরোদমে শুরু হয়েছে ডেঙ্গুর পরীক্ষা। নাইসেড নির্ভরতা কিছুটা কেটেছে। এমনকী রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা নাইসেড-এর নমুনা পাঠানোও কিছুদিন আগে কমিয়ে দিয়েছিল। পালটা চাল দিতে ছাড়েনি নাইসেডও। রাজ্যের মানুষের ডেঙ্গুর বাস্তব ছবি জানা উচিত— এই চেনা ফর্মুলায় নাইসেড গত দু’-তিন মাস ধরে রাজ্যের ডেঙ্গু পরিস্থিতির আসল চেহারা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তুলে ধরেছে। বর্তমানে রাজ্যে ডেঙ্গু যে মহামারীর আকার নিয়েছে, তাও জানিয়েছে তারা। যাতে যারপরনাই অস্বস্তি বেড়েছে রাজ্যের। ওয়াকিবহাল মহল সূত্রের খবর, এই কাদা ছোঁড়াছুড়ি আসলে অনেক দিনের পুষে রাখা রাগেরই বহিঃপ্রকাশ।
বছরের পর বছর ধরে ডেঙ্গু ও বিভিন্ন ভাইরাসঘটিত রোগ গবেষণা ও পরীক্ষা নিয়ে ‘ঠান্ডা লড়াই’ চলেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ও ‘নাইসেড’-এর। এবার তা আর ‘ঠান্ডা’ রইল না। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অফিসার ডাঃ বিশ্বরঞ্জন শতপথী তোপ দেগেছেন নাইসেড-এর বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, রাজ্যের বিপদের মধ্যেও ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে টাকা নিচ্ছে ওই কেন্দ্রীয় সংস্থা। রাজ্যে কী ধরনের ডেঙ্গুর উপদ্রব চলছে, তা জানার জন্য রাজ্য তথা দেশের স্বার্থে আমরা বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এক হাজার নমুনার ‘সেরোটাইপিং’-এর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সেই পরীক্ষা করাতে আট লক্ষ টাকা নিয়েছে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে অবস্থিত নাইসেড। ডেঙ্গুর রি-এজেন্ট বাবদ ওরা সেন্টিনাল সার্ভেলেন্স সেন্টার হিসাবে তিন লক্ষ টাকা পায়। তা বাদেও ডেঙ্গু পরীক্ষার রি-এজেন্ট কিনতে টাকা চায় আমাদের কাছে।
রাজ্যের কর্তাদের প্রশ্ন, আমরা কি দেশের বাইরে? কী ধরনের ডেঙ্গু এখানে চলছে, সেটা কি শুধু রাজ্যের স্বার্থে জানছি আমরা? দেশের জন্য এই তথ্য কোনও কাজে লাগবে না? নাইসেড-এর এ ধরনের আচরণে আমরা অবাকই হয়েছি। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে নাইসেডের শীর্ষকর্ত্রী ডাঃ শান্তা দত্ত পালটা বলেন, আমাদের সংস্থাটি চিকিৎসা গবেষণাসংস্থা। কোনও স্বাস্থ্য পরিষেবাদানকারী সংস্থা নয়। যতটুকু জানি, স্বাস্থ্য রাজ্যের বিষয়। কেন্দ্র প্রচুর অর্থসাহায্যও করে রাজ্যকে। সে টাকাই তো ওরা ফের আমাদের দিচ্ছে। যদি এতই সমস্যা হয়, ওরা নিজেরা স্বাবলম্বী হোক না, আমাদের কাছে নমুনা পাঠানোর কী দরকার? পালটা তোপ দেগেছেন এই চিকিৎসাবিজ্ঞানীও।