পশ্চিমবঙ্গ গ্রামীণ জন স্বাস্থ্য কর্মী ইউনিয়নের সভা অনুষ্ঠিত হল নামখানা ব্লকে

ঝোটন রয়. নামখানা:
পশ্চিমবঙ্গ গ্রামীণ জন স্বাস্থ্য কর্মী ইউনিয়নের ( সি এইচ জি ও টি ডি ) নামখানা ব্লক ইউনিটের সভা অনুষ্ঠিত হল নামখানার একাডেমিতে ।প্রতাকা উত্তলন ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন গঙ্গাসাগর- বকখালি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি চেয়ারম্যান শ্রীমন্ত কুমার মালি। উপস্থিত ছিলেন নামখানা ব্লকের প্রাণপুরুষ ধীরেন কুমার দাস, উপস্থিত ছিলেন নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষা স্বপ্না বালা দাস, দ্বারিকনগর গ্রামীণ হাসপাতালের B.M.O.H ডা: শুভ্রনীল বাবু, উপস্থিত ছিলেন
সি এইচ জি সভাপতি নিরাপদ রায়, ধনঞ্জয় ডাকুয়া অমলেন্দু দাস চিত্তরঞ্জন জানা, চিত্তরঞ্জন ভূইয়া, সত্যেন্দ্রনাথ মাইতি, ভাগ্যধর গিরি, হামিদন বিবি, প্রফুল্ল মাইতি সহ অন্যান্য সদস্য গন উপস্থিত ছিলেন।
পশ্চিমবঙ্গ গ্রামীণ জন স্বাস্থ্যে সক্রিয় কর্মীরা আজ নামখানা ব্লকে তাঁদের কিছু দাবি নিয়ে হাজির হয়েছিলেন সেই দাবি গুলো হল।
* এই প্রকল্পকে বিলুপ্ত না করে চালু রাখতে হবে সি এইচ জি ও টি.ডি-দের পরিবারের একজন অথবা নিকট আত্মীয়কে চাকুরীতে নিয়োগ করতে হবে।
* স্বাস্থ্য দপ্তরের যেকোনো শূন্য পদ সৃষ্টি হলে সি এইচ জি ও টি.ডি দের বাড়ি হইতে ছেলেদের বহাল করতে হবে। যোগ্যতা অনুযায়ী। যাহা আইনী স্বীকৃত ভাবে।
* প্রতিটি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের হাজিরা প্রথা চালু করতে হবে পাল্স-পোলিও দিনে 75টাকা পারিশ্রমিক বন্ধ করে সরকারি মজুরি দিতে হবে।
* সি এইচ জি ও টি.ডি এর ধাত্রীদের স্বাস্থ্য কর্মসূচীতে বহাল করতে হবে। স্বাস্থ্য কর্মীর মর্যাদা দিতে হবে।
এছাড়া আরো বেশ কয়েকটি দাবি-দাওয়া নিয়ে তাদের এই সভা ছিল। সভাতে উপস্থিত বিভিন্ন জেলা থেকে আসা দু’শোর ও বেশি সক্রিয় কর্মী।
অন্যদিকে এই প্রসঙ্গে গঙ্গাসাগর ও বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ এর চেয়ারম্যান শ্রীমন্ত কুমার মালি বলেন, মা মাটি মানুষের সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প গুলি আজ বাস্তবায়িত হয়েছে। সেই প্রকল্পগুলি এলাকার সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবাই আজ সেই সুবিধাগুলো পাচ্ছে। একসময় স্বাস্থ্যব্যবস্থা অতটা ভাল ছিলনা। কিন্তু তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরই দিকে দিকে করে সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে ব্লক ভিত্তিক শুধু নয়, গ্রামভিত্তিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। সেই সাধারণ মানুষদের চিকিৎসা ক্ষেত্রে যাতে কোনো অসুবিধা না হয় তার ব্যবস্থাও করেছেন। দীর্ঘদিনের আপনাদের এই আন্দোলন এবং আপনাদের এই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে আগামী দিনে যাতে আপনাদের উপার্জনের পরিমাণ বাড়ানো যায় তার আশ্বাস দিচ্ছি।
এই প্রসঙ্গে মেদিনীপুরের নারায়ন সামন্ত বলেন, ন্যূনতম মজুরি আমাদেরকে দেওয়া হোক। বাম আমল থেকে আন্দোলন করে চলছি। দীর্ঘদিন হয়ে গেছে আমাদের এই দাবির প্রতি বাম সরকারতো দুরের কথা বর্তমান সরকারও সহানুভূতিশীল দেখাচ্ছেনা। এর আগেও আমরা বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নভাবে বিক্ষোভ কর্মসূচি করেছি।
দীর্ঘদিনের লড়াই আজও অব্যাহত। সি এইচ জি ও টি.ডি-এর বেশিরভাগ কর্মীর বয়স ৫৫-৬৫এর কোঠায় হলেও সেই লড়াই আজও চলছে। এটি বেঁচে থাকার লড়াই। এটি সমাজের প্রতিটি মানুষকে বাঁচিয়ে রাখার লড়াই।
দীর্ঘ বাম জমানায় এর প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। বলতে বলতে জল অনেকটাই গড়িয়েছে। ২০১১ সালে তৃণমূল সরকার আসার পর সি এইচ জি ও টি.ডি এর কর্মীরা আশার আলো দেখেছিল। হয়তো আমাদেরকে নিয়ে এই নতুন সরকার কিছু ভাববে। আমাদের কর্মপ্রয়াসকে নিয়ে এই সরকার ইতিবাচক দিক দেখাবে। কিন্তু কোথায় সেই আশা, কোথায় ভরষা। দীর্ঘ বেশ কয়েকটা বছর জেলায় জেলায় শুধু নয় ব্লকে ব্লকে ও এরা অল্প মজুরীতে কাজ করে যাচ্ছে। পালস পোলিও থেকে শুরু করে মারণ রোগ এর টিকা দিয়ে যাচ্ছে সমাজের প্রতিটি শিশুকে। যার পরিণতি বর্তমান সরকারের কাছে আজ জিরো।
তবুও গঙ্গাসাগর ও বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ এর চেয়ারম্যান সহ সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে আশার আলো দেখছেন সি এইচ জি ও টি.ডি এর কর্মীরা। শুধু সময়ের অপেক্ষা।