শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জিন্নাকে দেশপ্রেমিক সাজাবার জন্যই উত্তরপ্রদেশে অখিলেশের পতন, দাবি জয়দীপ মুখার্জির

News Sundarban.com :
মার্চ ১০, ২০২২
news-image

মনোজ রায়, কলকাতা: জিন্নাকে দেশপ্রেমিক সাজাবার চেষ্টার জন্য অখিলেশ যাদব এবং জাতপাতের রাজনীতি করার জন্য মায়াবতীর উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনে পতন হল। এমনটাই দাবি সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী ও লিগ্যাল এইড ফোরামের সাধারণ সম্পাদক জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, “যে জিন্নার জন্য দেশ ভাগ হয়েছিল এবং হাজার হাজার হিন্দু উদ্বাস্তু হয়ে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিল, সেই জিন্নাকে অখিলেশ মহৎ ও দেশপ্রেমিক সাজাবার চেষ্টা করেছে। ফলে সাধারণ মানুষ সেটা ভালো চোখে নেয় নি। তাই তার বিরুদ্ধে মানুষ জনমত জ্ঞাপন করেছে।”

 

সম্প্রতি পাঁচ রাজ্য উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড, গোয়া এবং মণিপুরে নির্বাচন হয়ে গেল। বৃহস্পতিবার তার ফল ঘোষণা হল। উত্তরপ্রদেশে একক সংখ্যাগিষ্ঠতা অর্জন করেছে বিজেপি তথা যোগী আদিত্যনাথ সরকার। যোগী ঝড়ে কার্যত খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছে অখিলেশ-মায়াবতী-কংগ্রেসরা।

উত্তরপ্রদেশের ফলের বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, “অখিলেশ যাদবের এভাবে পতনের কারণ হল, সমাজবাদী পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মুলায়ম সিং যাদব একজন আদ্যোপান্ত সোস্যালিস্ট লিডার। শুধু তাই নয়, তিনি ভারতের রাজনীতিতে একজন অন্যতম অভিজ্ঞ নেতা এবং তিনি দীর্ঘদিন যাবত জাতীয়তাবাদী হিসেবে কাজ করেছেন। কিন্তু অখিলেশ মুলায়ম সিং যাদবকে ঘরে ঢুকিয়ে ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে ক্ষমতা লিপ্সু হয়ে উঠেছে এবং পুরনো যেসব মানুষ সমাজবাদী পার্টি প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন, তাদের সরিয়ে যেভাবে দলে কর্তৃত্ব কায়েম করেছেন, তাতে তাদের একটা বিশাল অংশ অখিলেশকে নেতৃত্ব হিসেবে মেনে নেন নি। শুধু তাই নয়, তারা আখিলেশের নেতৃত্বকে একটা চ্যালেঞ্জের মুখে নিয়ে এসে ফেলেছে।”

তাঁর কথায়, “সাম্প্রতিক যে পাঁচটা রাজ্যে নির্বাচন হল, তা বিশেষত ২০২৪ এর আগে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। সর্বভারতীয় স্তরে অখিলেশ যাদবের পক্ষে যে রাজনীতি করা সম্ভব নয়, সেটা এই নির্বাচনের ফলাফলের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। এই নির্বাচনে যেটা দেখা গিয়েছে যে উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির নেতৃত্ব দিয়েছেন অখিলেশ যাদব ও কিরণময় নন্দের মত নেতারা। তাদের গ্রহণযোগ্যতা আজ মানুষের কাছে প্রশ্নের মুখে দাড়িয়েছে।”

জয়দীপ বাবু বলেন, “আমার মনে হয়, মুলায়ম সিং যাদবের যে গ্রহণযোগ্যতা সারা ভারতে আছে, সেই গ্রহণযোগ্যতার সামান্যতম অংশ অখিলেশ যাদবের নেই। সেই জন্যই অখিলেশ যাদবের এই করুণ পরিণতি।” এছাড়াও যে বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলো হল, কংগ্রেস তার প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে ফেলেছে সর্বভারতীয় স্তরে। জয়দীপ বাবু এই প্রসঙ্গে বলেন, “উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনের ফলাফলের কারণে কংগ্রেস একেবারে কোমায় চলে গিয়েছে। শুধু কোমায় চলে যাওয়া নয়, কংগ্রেসের যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন, তারা মাত্র একটা পরিবার থেকেই বিদ্যমান। সেজন্যই সাধারণ মানুষ আজ তাদের সমর্থন করে নি।”

মায়াবতী প্রসঙ্গে জয়দীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “মায়াবতী যেভাবে জাতপাতের রাজনীতি করতে গিয়েছেন, তার ফল এই নির্বাচনে হাতেনাতে পেয়েছেন।

আর সর্বোপরি উত্তরপ্রদেশে বিগত পাঁচ বছরে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ যেভাবে সর্বস্তরের মানুষের জন্য বিভিন্ন সমাজকল্যাণ মূলক কাজকর্ম করেছেন, সেজন্য সেখানকার বিভিন্ন জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ তাকে গ্রহণযোগ্য নেতা হিসেবে মনে করেছেন এবং যোগী আদিত্যনাথ চেষ্টা করেছেন একটা সুশাসন দেওয়ার জন্য। যে সুশাসনটা মায়াবতী বা অখিলেশের আমলে অনেকাংশেই ছিল না। এই কারণগুলো বিশ্লেষণ করা দরকার।”