প্রয়াত শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সমাজকর্মী সুধীররঞ্জন ঘোষ

বিবেকানন্দ বসাক
(১৯৩৯-২০২১)
আলিপুরদুয়ার জেলার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক তথা সমাজকর্মী সুধীররঞ্জন ঘোষের প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এলো জেলাজুড়ে।
১৯৩৯ সালের ১২ অক্টোবর অধুনা বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জে তাঁর জন্ম। দেশভাগের পর পাকাপাকিভাবে পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ারে বসবাস শুরু করেন। এখানে মামাবাড়িতেই থাকতেন তিনি। বরাবরই মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচিত সুধীররঞ্জন ঘোষ আলিপুরদুয়ার হাইস্কুলে পড়াশুনো করেন। পরবর্তীকালে উচ্চশিক্ষার জন্য কলকাতা পাড়ি দেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে কৃতিত্বের সঙ্গে স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হন।
কর্মজীবনের গোড়ার দিকে অসমের বরাক উপত্যকার করিমগঞ্জ কলেজে ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। তারপর অবশ্য আলিপুরদুয়ারে ফিরে আসেন। বাদ বাকি জীবন আলিপুরদুয়ার মহাবিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপক হিসেবে কর্মজীবন কাটিয়েছেন। তিরিশ বছরের অধ্যাপনা জীবনে সুধীররঞ্জন ঘোষ তথা এসআরজি শিক্ষক হিসেবে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে জনপ্রিয় ছিলেন।
রাজনৈতিক জীবনে পীযূষ মুখার্জির আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে কংগ্রেস রাজনীতির সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন। পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ সাতের দশকের শেষে তিনি জনরা দলের সাথে যুক্ত হন।
প্রয়াত সুধীররঞ্জন ঘোষের ছেলে তথা কৃতী সাংবাদিক শুভজ্যোতি ঘোষ বলেন, “বাবা বেশ কয়েকবার ইউরোপ ভ্রমণ করেছিলেন। ইউরোপ ভ্রমণে বেরিয়েও বাবার চিরকালীন পোশাক ধুতি-পাঞ্জাবির ক্ষেত্রে অন্যথা হয়নি। ধুতি পরেই লন্ডনের কাছে শেক্সপিয়রের জন্মস্থান বেড়াতে গিয়েছিলেন বাবা। সেখানে পূর্ববঙ্গের স্মৃতি রোমন্থন করতে ধুতি পরেই নৌকো বেয়েছিলেন।”
২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে প্রয়াত শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, বিভিন্ন গণ আন্দোলনের পথিকৃৎ সুধীররঞ্জন ঘোষের মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে জেলার সাহিত্য-সংস্কৃতি-শিক্ষা আন্দোলনের এক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের যুগাবসান হল।