শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মিরর অফেন্স

News Sundarban.com :
অক্টোবর ২০, ২০২১
news-image

মিরর অফেন্স
অনিমেষ

অল্প-সল্প আঘাতের পাতা থেকে মুছে ফেলেছি কোনো একটা ঘণ্টা।তুলে রাখছি তুলতুলে ব্যথা। এরপর সব না বাচক কথা। সবার জন্য একটা একটা করে রোদ জমছে।কল তলার নিচে শহরের সমস্ত বড় বড় মানুষ।আবছা। এই যে ডুবে গেলো সব,ডুব দিয়ে দেওয়া অচিরেই সবকিছুর জন্য ভেতর ভেতর একত্রিত হচ্ছে মুখের সরঞ্জাম। তুমি মুখোশ পরোনা!

আমি টেক্সটকে গদ্য বলছি,আর গদ্যকে বলছি তোমার মতো ধর্তব্যের বাইরে থাকা এক অনুভূতির পাঠ। সবকিছুর একটা সিন্ড্রোম থাকে আমি অল্প রাত হলে ঢুকে যেতে থাকি ফাঁপা বুকের ভেতর।এখানে কেউ নেই।কেউ থাকাটা আবশ্যক কখনোই ছিল না যদিও তবুও একবার মাথা নড়ে ওঠে। এই যে ত্রিস্তরীয় আলাপ, এত ভিড় ক্রমশ অগোছালো হয়ে যাচ্ছি।যে যখন পারছে দাবির খাতা খুলছে।আমারও চাই,একটা শান্তিপূর্ণ রাত।যে রাতে খাতা খুলে বিষ খাব, বিষ লিখবো ,বিষ বর্জন করার কথাও দেব। তবুও শহরের মাঝপথে কাঁচাগলি দেখলে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যাই, পঞ্চায়েত আর মিউনিসিপ্যালিটির এই অদ্ভুত সীমারেখা দেখে মনে পড়ে যায় ,পাহাড়ের কথা।

পাহাড়ের গায়ে লেখা মৃত প্রেমের কথা। শহর কলকাতার বুকে বৃষ্টি ভেজা একদিনে মাঝরাস্তায় যে মেয়েটি প্রথম চুমু খেয়ে বুঝিয়েছিল বিষ বলতে আদতে যা আমরা রোজ পান করি তা শরীরের সাথে শরীরের ভাঙাচোরা সম্পর্কের থেকে ক্ষতিকর অনেক কম। যে মেয়েটার চোখ নেমে গিয়েছিল সোজা শার্টের ভেতর তার চোখের কোণে অদ্ভুত এক আত্মহত্যা দেখেছিলাম। এরপর সবটুকু ক্লাউন সেজে লোক হাসানোর খেলা।বাজারে বিক্রি করা সার্টিফিকেট আর মিথ্যে মিথ্যে ক্ষতর স্থান।ক্ষতর ওপরেও আজকাল জিএসটি চলছে,যে যার মতো কাজ করিয়ে নিচ্ছে অমোঘ আবেশে। তারপর ছুঁড়ে ফেলছে ওখানে, পাশ থেকে উঠে আসছে দীর্ঘদিন ঘুমিয়ে থাকা সাপ।বন্ধুকে ভাই মানি,আর ভাইকে শত্রু ।শত্রুর পেটের নিচে কাটা দাগ দেখে ভাইকে বন্ধুর বুকে বসিয়ে দিই ছুরি। এরপর যতটুকু অবশিষ্ট আর আগুন পোড়া দেহের সমাচার পর্ব পুরোটাই খেলার মতো করে গুছিয়ে নিই।এখন একটু একটু করে সংসার থেকে বিলীন হচ্ছি।বুঝতে পারছি চালের দাম আমার মাথার থেকেও বেড়ে গিয়েছে কয়েকগুণ। আশ্চর্য সব ভোগপণ্যের দেশ। সবকিছুতেই কেমন না। নায়ের অতলান্তে ঠেকিয়ে নেওয়া দায়সারা ভাব।ক্লান্তি আসছে, ঘর ভেঙে ফেলছে যাবতীয় কল্পনা।পেটের ভেতর আকাশ ডাকছে,আকাশের নিচে কয়েকশো মানুষের ভিড়।ভিড়ের মধ্যে ভিখিরিদের মিছিল। খাওয়ার চাই।ওই মিছিলে আমারও মুখ।আমার আয়না।

ক্রমশ টিকে থাকতে হলে যেসব ম্যাগাজিনে লেখা উচিত বলে আমাকে তালিকা ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে সেখানে আমার লেখা আর হয়ে ওঠে না।গা গুলোতে থাকে। হারিয়ে ফেলি খেই। ট্যাগলাইন অনুষ্ঠান মঞ্চে সঞ্চালক, আড্ডায় বন্ধুরা জুড়ে দেয় ফেসবুক এর খেতাব।এর বাইরে আমার অস্তিত্ব নেই বলে যারা ক্রমশ ঘুরিয়ে দিচ্ছে আমাকে অনন্ত হাহাকারের পথে তাদের সঙ্গে দেখা হয় মাছবাজারে।

মাছের দরদাম করতে গিয়ে সবাই ঘেমেনেয়ে একশা।আমি ক্রমশ আরও ঘুমের দিকে এগিয়ে যাই। আমার একটি কাব্যগ্রন্থ ছিঁড়ে ফেলি ঝালমুড়িওয়ালার কাছে। ঘুম একটি ব্যতিব্যস্ত শব্দ।যার শুরু শেষ কেবল একটা ট্রাভেল এন্ট্রি আর এগজিট পয়েন্ট। আমার ঘুম আসে খুব এখানে মাঝপথে যতজনের সাথে সাক্ষাৎ হয় তারা সবাই ব্যবসায়ী। কোনো এক গরমের দুপুরে হঠাৎ করে বৃষ্টি নেমে আসে ,বৃষ্টি নেমে আসে সোশ্যাল গ্যাদারিং জুরে।আর ঘুমের শব্দে ভারী হয়ে উঠতে থাকে পরের অধ্যায়।যেখানে জেগে উঠে মৃতস্তূপ থেকে চিহ্নিত করে নিতে হবে আমার অবয়বটা…