বৃহস্পতিবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

প্রত্যন্ত সুন্দরবনের দ্বীপে মনসা মেলায় রক্তদান উৎসব 

News Sundarban.com :
সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২১
news-image

নিজস্ব প্রতিনিধি, ক্যানিং – প্রতিবারের ন্যায় প্রত্যন্ত সুন্দরবনের গোসাবা ব্লকে এবারও অনুষ্ঠিত হল ৪৮ তম বর্ষের মনসা মেলা।

স্থানীয় সবুজ সংঘের উদ্যোগেই সাত দিনের এই মনসামেলা অনুষ্ঠিত হয়। মনসা মেলায় স্থানীয় মানুষজন সহ সুন্দরবনের অন্যান্য দ্বীপের মানুষজন আসেন এই মনসা মেলায়। নদীর তীর সংলগ্ন কচুখালি এই দ্বীপে মনসা মেলায় মনসার ভাসান গানের জন্য বিখ্যাত।

যার ফলে অন্যান্য দুর-দূরান্ত দ্বীপ এলাকার সাধারণ মানুষজন ভীড় জমান মনসার ভাসান পালাগান অনুষ্ঠান দেখার জন্য।বিগত প্রায় ১৬ বছর আগে এই মেলা চলাকালীন রক্তের অভাবে এলাকার এক থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত কিশোরের মৃত্যু হয়। প্রথমত রক্তের অভাব,দ্বিতীয়ত দুর্গম এলাকা। এই দুইয়ের মাঝে অসহায় থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত কিশোরের মৃত্যু গভীর ভাবে রেখাপাত করে স্থানীয় সবুজ সংঘের কর্মকর্তাদের।শোকে মেলা বন্ধ রাখেন মেলা কমিটির সদস্যরা।এরপর মেলা কমিটির লোকজন সেই বছরই উদ্যোগ নেন রক্তের অভাবে আর একটিও প্রাণ যেন অকালে ঝরে না পড়ে। সেই থেকেই মনসা মেলায় অনুষ্ঠিত হয় রক্তদান উৎসব।

বিগত ১৬ বছর ধরে প্রত্যন্ত এই দ্বীপে সবুজ সংঘের উদ্যোগে মনসা মেলার পাশাপাশি রক্তদান উৎসবও পালিত হয়ে আসছে।চলতি বছরের ২১ সেপ্টেম্বর প্রত্যন্ত সুন্দরবনের কচুখালির হরিশপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মনসা মন্দির এলাকায় বসেছিল ঐতিহ্যবাহী এই মনসামেলা।অন্যান্য অনুষ্ঠানের মধ্যে ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৫ তম বর্ষের স্বেচ্ছায় রক্তদান উৎসব।রক্তদান শিবিরে স্বেচ্ছায় প্রথম রক্তদান দান করে অনুষ্ঠানের সুচনা করেন বিশিষ্ট সমাজসেবী তাপস মন্ডল।উপস্থিত ছিলেন মনসা মেলা কমিটির সভাপতি সত্যরঞ্জন মন্ডল, সমাজসেবী দিবাকর মিস্ত্রী,মানবেশ হালদার, কচুখালি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কমলেন্দু জোতদার সহ অন্যান্য বিশিষ্টরা।

১৬ তম বর্ষের রক্তদান উৎসবে ১২০ জন রক্তদাতা স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন।উল্লেখ্য ১২০ জন রক্তদাতার মধ্য ৮৫ জন ছিলেন এলাকার মহিলারা।

মেলা কমিটির সম্পাদক তথা বিশিষ্ট সমাজসেবী তাপস মন্ডল বলেন “মনসা মেলার পাশাপাশি আমরা সামাজিক কাজকর্ম করে থাকি।তবে বর্তমানে সুন্দরবন কে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে বাঁচাতে আমাদের ক্লাবের পক্ষ থেকে বৃক্ষরোপণ কর্মসুচী নেওয়া

হয়েছে। পাশাপাশি রক্তদাতাদের হাতে চারা গাছ তুলে দেওয়া হয়েছে। যাতে করে তাঁরা বৃক্ষরোপণে উৎসাহিত হয়ে সুন্দরবন কে রক্ষা করার ভূমিকা পালন করেন’।