সুন্দরবনের ঝড়খালিতে ২১০ ফুট দৈর্ঘ্যের জাতীয় পতাকা নিয়ে ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবস উৎযাপন
সুভাষ চন্দ্র দাশ, ক্যানিং-
২১০ ফুট জাতীয় পতাকা নিয়ে ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবস পালন করলেন প্রত্যন্ত সুন্দরবনের ঝড়খালি গ্রাম পঞ্চায়েতের সবুজ বাহিনীর শতাধিক মহিলা।রবিবার সকালে বৃহৎ জাতীয় পতাকা নিয়ে মহিলারা এলাকার প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পথ পরিক্রমা করেন। বিশ্বের দীর্ঘতম জাতীয় পতাকা নিয়ে এমন অভিনব প্রভাতফেরী কে নজীরবিহীন বলে আখ্যা দিলেন বিশিষ্ট গুণীজনেরা।
উল্লেখ্য ২০১৯ সালে ১৫ আগষ্ট জাতীয় পতাকা নিয়ে ১৭ কিলোমিটার পথ হেঁটে পৃথিবীর বুকে বিশ্বরেকর্ড সৃষ্টি করেছিল উড়িষ্যার রৌরকেল্লা।এরপর দেশের এ্যাটারী সীমান্তে ৩৬০ ফুট,পূণেতে ৩৫১ ফুট,গৌহাটিতে ৩১৯.৫ ফুট,খোলাপুরে ৩০৩ ফুট,রাঁচিতে ২৯৩ ফুট,হায়দ্রাবাদে ২১৯ ফুট,রায়পুরে ২৬৯ ফুট,ফরিদাবাদে ২৫০ ফুট,ভূপালে ২৩৫ ফুট,মুম্বাই নেভী(এন এম এম সি) তে ২২২ ফুট,কটকে ২১৫ ফুটের জাতীয় পতাকা উত্তোলন হয়েছিল। কিন্তু সমগ্র দেশ তথা বিশ্ববাসীর কাছে শান্তির বার্তা দিয়ে ২১০ ফুট দৈর্ঘ্যের জাতীয় পতাকা নিয়ে পাঁচ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে প্রভাত ফেরী করলো সুন্দরবনের ঝড়খালির সবুজ বাহিনীর মহিলারা। যা কিনা বিশ্বে তৃতীয়তম এবং দেশের মধ্যে এমন উদ্যোগ দ্বিতীয়তম।
উল্লেখ্য সমগ্র দেশ ব্যস্ত হয়ে পড়েছে মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট নিয়ে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া,মোবাইলে এবং হোয়াটস অ্যাপ এ মেসেজ পাঠিয়ে পালন করছে স্বাধীনতা দিবস। মানুষ এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে যে, বিন্দুমাত্র সময় নেই বাড়ির পাশের কোন বিদ্যালয়ে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সাথে কিছু টা সময় কাটিয়ে স্বাধীনতা দিবস পালন করা এবং বিপ্লবীদের সম্পর্কে দুচার কথা বলার। ঠিক সেই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে সুন্দরবনের ঝড়খালির সবুজবাহিনীর মহিলাদের এমন মাতৃত্ব সূলভ উদ্যোগ নজীরবিহীন এবং নজর কেড়েজে দেশের মানুষের।
জানাগেছে এলাকার যুবক প্রশান্ত সরকারের মাথায় এমন অভিনব চিন্তা শুরু হয়েছিল। গ্রাম কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ও বিশ্ব দরবারে দেশ তথা সুন্দরবনকে পৌঁছে দেওয়াই ছিল উদ্যোগের প্রধানতম উদ্দেশ্য।
বলতে দ্বিধা নেই এমন নজীরবিহীন অনন্য উদ্যোগ আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন সুন্দরবন কে কয়েকধাপ এগিয়ে নিয়ে গেল।
প্রশান্ত সরকার ও সবুজবাহিনীর অন্যতম সদস্য অন্ধ আকুল বিশ্বাসদের একান্ত প্রচেষ্টাতেই তেরঙ্গা পতাকা তৈরীর প্রস্তুতি শুরু হয় বিগত প্রায় তিনমাস আগে থেকে।অন্যদিকে ঝড়খালি সবুজ বাহিনীর সদস্যা তথা গ্রামেরই এক গৃহবধু মেরি হালদার তিন দিনের প্রচেষ্টায় এই বৃহৎ তেরঙ্গা জাতীয় পতাকা তৈরী করতে সক্ষম হয়।
করোনা কালে এমন মহতি পরিক্রমা সুন্দরবনে বেড়াতে আসা পর্যটকদের ও তাক লাগিয়ে দেয়। পরিক্রমার পাশাপাশি ছিল শিশুদের বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং করোনা মহামারীর তৃতীয় ঢেউ সম্পর্কে সচেতনতা এবং মাস্ক বিলি।দেশের জাতীয় পতাকা নিয়ে এমন প্রভাতফেরীতে সামিঢ়হল হয়ে গর্ববোধ করেছেন ঝড়খালি সবুজ বাহিনীর কপ্পুরী শীল, দূর্গা শীল, প্রিয়া বৈদ্য, নিবেদিতা মণ্ডল সহ অন্যান্যরা।