বুধবার, ১৭ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মৃণাল সেনের শেষ স্মৃতি রাখা হলো যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে

News Sundarban.com :
এপ্রিল ১১, ২০২১
news-image

প্রখ্যাত চিত্রপরিচালক মৃণাল সেনের শেষ স্মৃতি রাখা হলো যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে। শেষ স্মৃতি বলতে কিছু চিঠি, চিত্রনাট্য, হাতে লেখা খসড়া আর কিছু পুরস্কার। এক ফেসবুক পোস্টে মৃণাল সেনের ছেলে কুনাল সেন এই খবর জানান।

মৃণাল সেন

কুনাল সেন লিখেছেন, ‘অবশেষে বাবার স্মৃতি বলতে যা ছিল তা সংরক্ষণের জন্য শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিকে দেওয়া হলো। বাবা কখনোই নিজের কিছু সংরক্ষণ করতে চাননি। অথবা অলসতার কারণেই কিছু গুছিয়ে রাখেননি। বাবার সমস্ত স্মৃতি জড়ো করে দেখা গেল, সেখানে রয়েছে কিছু চিঠি, যেগুলো বাবা আমাকেই লিখেছিলেন। তাই আমার কাছে ছিল। কিছু পুরস্কার, মেডেল, চিত্রনাট্য, ছবি আর হাতে লেখা কিছু খসড়া আর বই। এই সবকিছু তিনটা বাক্সেই এঁটে গেল। বাক্সগুলোর দিকে তাকিয়ে ভাবলাম, একটা মানুষের সমস্ত জীবনের এই এতটুকু রইল পড়ে!’

মৃণাল সেনের পুরস্কার, মেডেল ও অন্যান্য

 কুনাল জানান, শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর বাবার স্মৃতি সংরক্ষণে আগ্রহী।আর কুনাল সেন নিশ্চিত, সেখানেই তাঁর বাবার স্মৃতি সবচেয়ে বেশি দিন ভালো থাকবে। আর কুনাল যখন চাইবেন, তখনি তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে এসে বাবার স্মৃতি দেখবেন, স্পর্শ করে যাবেন বাবার হাতে লেখা অক্ষর, চিঠি। কুনাল জানেন না আগামী ১০০ বছরে কেউ তাঁর বাবার সম্পর্কে আগ্রহী হবেন কি না। যদি কেউ আগ্রহী হয়, সে ক্ষেত্রে সে খুব সহজেই সেখানে এগুলো খুঁজে পাবেন।

মৃণাল সেনের চিত্রনাট্য, চিঠি ও পান্ডুলিপি

মৃণাল সেন ছিলেন আশির দশকের চলচ্চিত্র অঙ্গনের এক কান্ডারি। তিনি ছাড়া সেই যুগের চলচ্চিত্র অঙ্গনের দিকপাল ছিলেন সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক। বহু বিখ্যাত চলচ্চিত্র তৈরির কারিগর ছিলেন মৃণাল সেন। ১৮টি ছবির জন্য পেয়েছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। পেয়েছিলেন ১২টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার।

মৃণাল সেন

বাংলা ছাড়াও হিন্দি, উড়িয়া ও তেলেগু ভাষায় ছবি নির্মাণ করেছেন মৃণাল সেন। তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র  ‘রাতভোর’ নির্মিত হয় ১৯৫৫ সালে। এরপরের চলচ্চিত্র ‘নীল আকাশের নিচে’। তৃতীয় ছবি ‘বাইশে শ্রাবণ’ থেকে তিনি আন্তর্জাতিক পরিচিতি পান। একে একে তিনি ২৬টি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। প্রতিটি চলচ্চিত্রেই স্বতন্ত্র আর গুরুত্বপূর্ণ। ১৪টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র আর চারটি প্রামাণ্য চিত্রও নির্মাণ করেছেন। মৃণাল সেনকে নিয়েই কলকাতায় নির্মিত হয়েছে আবার পাঁচটি তথ্য চিত্র।

যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে যাচ্ছে মৃণাল সেনের স্মৃতি

মৃণাল সেন ভারতের বিনোদনজগতের সর্বোচ্চ সম্মান দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারসহ (২০০৫) ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মান পদ্মশ্রী (১৯৮১) পেয়েছেন। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ৯৫ বছর বয়সে মারা যান বাংলা চলচ্চিত্রের এই দিকপাল। তাঁর কলকাতা ট্রিলোজি অর্থাৎ ‘ইন্টারভিউ’ (১৯৭১), ‘কলকাতা ৭১’ (১৯৭২) এবং ‘পদাতিক’ (১৯৭৩) বাংলা চলচ্চিত্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। ‘খারিজ’ ১৯৮৩ সালের কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি পুরস্কার পেয়েছিল।  ‘ভূবন সোম’, ‘এক দিন প্রতিদিন’, ‘মহাপৃথিবী’, ‘অন্তরীণ’, ‘আমার ভুবন’ মৃণাল সেনের পরিচালিত ছবি।