শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১০ বছরের সম্পর্কের পাট চুকিয়ে সামনের মৌসুমে পাড়ি জমাবেন আতলেতিকো অন্য ঠিকানায়

News Sundarban.com :
মার্চ ৩০, ২০২১
news-image

সম্পর্কটা ১০ বছরের। আতলেতিকো মাদ্রিদ ছেড়ে ২০১১ সালে যখন ম্যানচেস্টার সিটিতে নাম লিখিয়েছিলেন, মোটামুটি অনেকেরই চোখ কপালে উঠে গিয়েছিল। কারণ, স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে শুরু করে রোমান আব্রামোভিচের চেলসি, রিয়াল মাদ্রিদ থেকে বার্সেলোনা—সবাই তাঁকে দলে চেয়েছিল। কিন্তু আগুয়েরোর লক্ষ্য ছিল ভিন্ন। আগে থেকেই সফল কোনো দলে নয়, বরং এমন একটা ক্লাবে যোগ দিতে চেয়েছিলেন, যে ক্লাবের সাফল্যের শুরুটা তাঁর হাত দিয়েই হয়। সে লক্ষ্যেই তিনি নাম লিখিয়েছিলেন ম্যানচেস্টার সিটিতে।

গত ১০ বছরে সে লক্ষ্যটা যে বেশ ভালোভাবেই পূরণ করেছেন, এ ব্যাপারে কারোরই সন্দেহ থাকার কথা নয়। সিটির আকাশি জার্সি গায়ে এক চ্যাম্পিয়নস লিগ ছাড়া সম্ভাব্য সব শিরোপাই জিতেছেন। নিজেকে প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২৫৭ গোল করে সিটির ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ স্ট্রাইকার তো তিনি বটেই। কার্লোস তেভেজ, এডিন জেকো, মারিও বালোতেল্লি, আলভারো নেগ্রেদো, স্তেভান ইয়োভেটিচ, গ্যাব্রিয়েল জেসুস, উইলফ্রিয়েড বোনি—গত ১০ বছরে সিটিতে কত স্ট্রাইকারই তো এসেছেন, গেছেন। কিন্তু আগুয়েরো থেকেছেন নিজ দ্যুতিতে ভাস্বর। সেই আগুয়েরোই এবার জানিয়ে দিয়েছেন, আর নয়। সিটির সঙ্গে পথচলা থামতে চলেছে মৌসুম শেষে। ১০ বছরের সম্পর্কের পাট চুকিয়ে সামনের মৌসুমে পাড়ি জমাবেন অন্য ঠিকানায়।

১০ বছরের সম্পর্কের পাট চুকিয়ে সামনের মৌসুমে আগুয়েরো পাড়ি জমাবেন অন্য ঠিকানায়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আগুয়েরো নিজেই জানিয়েছেন এই সিদ্ধান্তের খবর, ‘একটা চক্র পূরণ হলে, অনেক অনুভূতি জমে মনের কোণে। ১০ মৌসুম ধরে ম্যানচেস্টার সিটিতে খেলার স্বস্তি ও গৌরব আমার সঙ্গী। এমন এক অর্জন, যা এই যুগে সাধারণত খুব কম ফুটবলারের ভাগ্যেই জোটে। ১০ বছরে অনেক কিছুই জিতেছি। যে ১০ বছরে আমি নিজে ক্লাবের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছি, ক্লাবটাকে যাঁরা ভালোবাসেন তাঁদের সঙ্গে অলঙ্ঘনীয় এক বন্ধন গড়ে তুলেছি। তাঁরা সবাই আমার হৃদয়ে থাকবেন।’

সিটিতে যখন এসেছিলেন, তখন ক্লাবটাকে বিশ্বের অন্যতম সেরা বানানোর দায়িত্ব ছিল তাঁর ওপর, ‘২০১১ সালে যখন আমরা একটা ভাঙাগড়ার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন আমি এখানে আসি। মালিকপক্ষ ও খেলোয়াড়দের সহায়তায় আমরা ক্লাবটাকে বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্লাব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি।’

আগুয়েরোর সেই অবিস্মরণীয় গোল, যে গোলটা নিশ্চিত করেছিল সিটির লিগ শিরোপা।

তবে ঘোষণা দিয়ে দিলেও মৌসুমের শেষ পর্যন্ত সিটির জন্য নিজের সবটুকু ঢেলে খেলে যাবেন, ‘আমি চলে গেলেও সিটিকে বিশ্বের অন্যতম সেরা জায়গায় ধরে রাখার দায়িত্বটা বাকি সবার। আমি নিজেও এই মৌসুমের শেষ পর্যন্ত দলের জন্য খেটে যাব, চেষ্টা করে যাব যত বেশি সম্ভব ট্রফি জিতে সমর্থকদের আনন্দ দেওয়ার জন্য।’

তবে আগুয়েরো যে সিটিতে থাকবেন না, এটা মোটামুটি কয়েক মাস ধরেই নিশ্চিত ছিল। চুক্তি শেষ হয়ে যাচ্ছিল, আর্জেন্টাইন এই স্ট্রাইকারের সঙ্গে চুক্তি নবায়নের ব্যাপারে তেমন আগ্রহ ছিল না সিটির। আগুয়েরো নিজেও বুঝেছিলেন, সিটির মতো ক্লাবের জন্য একটু বেশিই বুড়িয়ে গেছেন হয়তো। শেষমেশ নিজের ঘোষণার মাধ্যমে সব গুঞ্জনেরই সত্যতা দিলেন যেন এই কিংবদন্তি স্ট্রাইকার।

সিটিকে অনেক কিছু জিতিয়েছেন আগুয়েরো।