শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

হাসপাতাল চত্বরে চুরি যাওয়া কন্যাশিশুকে ৩০ ঘন্টার মধ্যে উদ্ধার করলো ক্যানিং থানার পুলিশ, গ্রেফতার ২

News Sundarban.com :
ডিসেম্বর ২৩, ২০২০
news-image

নিউজ সুন্দরবন ডেস্ক: মঙ্গলবার রাতে ক্যানিং থানার আইসি আতিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্পেশাল পুলিশ টিম অভিযান চালিয়ে ৩০ ঘটনার মধ্যে উদ্ধার করল ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল চত্বর থেকে চুরি যাওয়া১০ দিনের শিশুকন্যা কে।আর এই ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত ফারুক লস্কর ও তার স্ত্রী সাহানারা লস্কর কে গ্রেফতার করেছে।দুজনেরই বাড়ি জীবনতলা থানার ঘুটিয়ারী শরীফের দক্ষিণ মাকালতলা এলাকায়।

উল্লেখ্য ২১ ডিসেম্বর দুপুর ১ টা নাগাদ ৯ দিনের এক শিশু কন্যা কে চুরি করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে।চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে সুন্দরবনের ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল চত্বর এলাকায়।ক্যানিং আমড়াবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা গৃহবধূ আকিবা মোড়ল। তাঁর ৯ দিনের শিশু কন্যা আসিয়া মোড়ল কে নিয়ে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে আসেন তিনি। শিশু কন্যার জন্ম সার্টিফিকেট সংক্রান্ত কাগজপত্র জমা দেওয়ার জন্য।গৃহবধূ শিশু কন্যাকে তাঁর দিদিমা মোদিনা সেখের কাছে রেখে কাগজপত্র জমা দিতে যায় হাসপাতালে। সেই সময় এক অপরিচিত বোরখাপরা মহিলা মোদিনা সেখের সঙ্গে গল্প জুড়ে দেয়।এরপর মহিলা মোদিনা সেখকে শিশুর প্যামপাস আনতে বলে কুড়ি টাকা দেয়।তিনি প্যামপাস আনতে গেলে সেই সুযোগে অপরিচিত বোরখাপরা মহিলা শিশু কন্যা নিয়ে চম্পট দেয়।খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে ক্যানিং থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী।

পুলিশ হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে।আর এই সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ধরে চিরুনি তল্লাশি অভিযান শুরু করে পুলিশ।জীবনতলা থানার ঘুটিয়ারী এলাকায় শিশুকন্যাটি রয়েছে গোপনসুত্রে খবর পায় ক্যানিং থানার পুলিশ।গোপনসুত্রে খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাত সাতটা নাগাদ ক্যানিং থানার এসআই জয়ন্ত পোদ্দারের নেতৃত্বে কনেষ্টবল গোবিন্দ বিশ্বাস,সুবীর কর এবং মহিলা কনষ্টেবল প্রিয়া মজুমদার কে সাথে নিয়ে ঘুটিয়ারীশরীফ এলাকার দক্ষিণ মাকালতলায় তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ।শিশুটির হদিশ পেতে পুলিশ সাহানারার বাড়ির সামনে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেন।

সেই সময় এই অভিযুক্তের বাড়িতে তালা লাগানো ছিল। কোনপ্রকার ক্লু না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে আসার জন্য তোড়জোড় শুরু করে ক্যানিং থানার পুলিশ টীম। ইতিমধ্যে আচমকা ঘরের মধ্যে শিশুকন্যা কেঁদে ওঠে।শিশু কান্নার আওয়াজ পেয়ে পুলিশ অত্যন্ত সতর্কতার সাথে বাড়িটির কাছে এগিয়ে যায়। দরজা খুলতে বলেন। তালা লাগানো দরজা খুলে বেরিয়ে আসেন অভিযুক্তের বাবা ও মা। তাদের জিঞ্জাসাবাদ করে পাশের ঘর থেকে অভিযুক্ত দুই স্বামী-স্ত্রী সহ চুরি যাওয়া শিশু কন্যা কে হাতের নাগালে পেয়ে যায় পুলিশ।আর এই পুলিশি অভিযানে ৩০ ঘন্টার মধ্যে উদ্ধার হয় চুরি যাওয়া শিশু কন্যা।পুলিশ শিশু কন্যা কে তার মায়ের কোলে তুলে দিলে কান্নায় ভেঙে পড়ে শিশু কন্যার মা আকিবা।তিনি জানান “ক্যানিং থানার পুলিশ অতি সক্রিয়তার সাথে খোঁজখবর করে আমার চুরি যাওয়া শিশশুকন্যা উদ্ধার করায় তাঁদের কাছে কৃতঞ্জ।”

এদিকে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে সাহানারা লস্করের সঙ্গে ফারুক লস্করের ৪ বছর আগে বিয়ে হয়।কিন্তু সাহানারা লস্কর কোন সন্তান না হওয়ায় মানসিক ভাবে ভুগছিল সে।সোমবার সাহানারা লস্কর ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে এসেছিল।আর এই সুযোগে পেয়ে শিশু কন্যা কে নিয়ে চম্পট দেয়।তবে এই সাহানারা কোন শিশু পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত রয়েছে কিনা সে বিষয়ে ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

পুলিশ জানান ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল চত্বর থেকে চুরি যাওয়া শিশু কন্যা কে উদ্ধার করা হয়েছে।এই ঘটনায় ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।শিশু কন্যা কে মেডিক্যাল করা হয়েছে।শিশুকন্যা বর্তমানে সুস্থ রয়েছে।তার মায়ের কোলে তুলে দেওয়া হয়েছে।তবে কি কারণে এমন ধরনের ঘটনা ঘটলো সে বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।