বৃহস্পতিবার, ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল চত্বর থেকে ৯ দিনের কন্যাশিশু চুরি! উধাও চোর

News Sundarban.com :
ডিসেম্বর ২২, ২০২০
news-image

নিউজ সুন্দরবন ডেস্ক: একন্যাশিশু চুরির ঘটনায় তুমুল উত্তেজনা ছড়ালো হাসপাতাল চত্বরে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার দুপুরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার খোদ ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে।জানাগেছে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে গত ১৩ ডিসেম্বর ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ক্যানিং থানার মাতলা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের আমড়াবেড়িয়া গ্রামের গৃহবধু আকিবা (সেখ)মোড়ল। তিনি একটি শিশু কন্যার জন্ম দেন। পরে সুস্থ হয়ে গেলে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল থেকে ১৫ ডিসেম্বর ছুটি দেওয়া হয় এই গৃহবধু কে।সোমবার সকালে শিশুকন্যাকে নিয়ে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে এসেছিলেন এই গৃহবধু। জন্ম সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য শিশু কন্যা কে কোলে নিয়ে হাসপাতাল চত্বরে বসেছিলেন অপেক্ষায়।

গৃহবধু আকিবার সাথে ছিলেন তাঁর দিদিমা মোদিনা সেখ।আকিবা শিশুকন্যা কে তাঁর দিদিমার কোলে দিয়ে হাসপাতালের মধ্যে যায় জন্ম সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য।মোদিনা বিবি শিশুকন্যা নিয়ে হাসপাতাল চত্বরে বসেছিলেন। আচমকা এক মাঝ বয়সী বোরখা পরিহিতা মহিলা এসে বন্ধুত্ব পাতায় তাঁর সাথে। স্বস্নেহে আদর করে শিশু কন্যা কে জোর করে কেড়ে নিয়ে কোলে নেয়। আদর করতে থাকে।মোদিনার হাতে জোর করে কুড়ি টাকা দিয়ে প্যামপাস আনতে বলে।

তিনি রাজী না হলেও জোর করে পাঠায় দোকানে।অঞ্জাত পরিচয় বরখা পরিহিত মহিলা মুহূর্তে চোখের পলকে শিশুকন্যা কে নিয়ে হাসপাতাল চত্বর থেকে দৌড়ে পালিয়ে। হাসপাতালের দ্বিতীয় গেটের কাছ থেকে একটি টোটোয় চেপে ক্যানিং বাসষ্ট্যান্ডের দিকে পালিয়ে যায়।শিশুকন্যাকে না পেয়ে কান্না ভেঙে পড়ে এই মহিলা ও তার পরিবারের লোকজন। ঘটনায় তুমুল শোরগোল পড়ে যায় ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে।

ঘটনার খবর পেয়ে হাজীর হয় ক্যানিং থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। অন্যদিকে ক্যানিং থানার পুলিশ আকিবা ও তাঁর দিদিমা মোদিনা কে নিয়ে হাসপাতালের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ খতিয়ে দেখে অভিযুক্ত মহিলা কে সনাক্তকরণ করার চেষ্টা শুরু করে।উল্লেখ্য বিগত প্রায় বছর আটেক আগে ক্যানিংয়ের আমড়াবেড়িয়ার আমিন উদ্দিন মোড়লের সাথে বিয়ে হয় কুলতলি থানার কচিয়ামারা এলাকায়।দম্পতির একটি কন্যা রয়েছে। এদিন তাঁদের আসিয়া নামে ৯ দিনের কন্যাশিশু ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল চত্বর থেকে চুরি হয়ে যাওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন আকিবা ও তারঁ পরিবার পরিজনেরা।

ঘটনার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সুপার অপূর্ব লাল সরকার বলেন গত ১৩ ডিসেম্বর হাসপাতালে এক কন্যা সন্তান জন্ম দেয় গৃহবধূ আকিবা মোড়ল।১৫ ডিসেম্বর গৃহবধূকে ছুটি দিয়ে দেয় চিকিৎসকরা।এদিন গৃহবধূ আকিবা মোড়ল তার ৯ দিনের শিশু কন্যা নিয়ে হাসপাতালে আসে।সঙ্গে গৃহবধূর দিদি মা ছিলেন।দিদিমা মোদিনা সেখের কাছে কন্যা শিশু ছিল।হাসপাতালের মেন গ্রেটের কাছ থেকে এক বোরখা পড়া মহিলার সাথে পরিচয় হয় মোদিনা সেখের।অপরিচিত মহিলা মোদিনা সেখকে ২০ টাকা দিয়ে প্যামপাস আনতে বলে।প্যামপাস আনতে গেলে সেই সময় অপরিচিত মহিলা কন্যাশিশু কে নিয়ে চম্পট দেয়।তিনি আরও বলেন এ বিষয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পুলিশ কে তুলে দেওয়া হয়েছে।”

অন্যদিকে এই ঘটনায় পুলিশ চিরুনি তল্লাশি শুরু করেছে। সড়ক পথ,রেলপথ ও জলপথে চলছে পুলিশি তল্লাশি।তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত উদ্ধার হয়নি কন্যাশিশু টি।এদিকে যে অপরিচিত মহিলা শিশুকন্যা কে নিয়ে যে টোটোতে গিয়ে ছিল,সেই টোটো চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।টোটো চালক জানিয়েছে হাসপাতালের দ্বিতীয় গেট থেকে এক বোরখা পরা মহিলা এক কন্যাশিশু নিয়ে আমার টোটোতে ওঠে।আমায় বলে ক্যানিং বাসস্ট্যান্ডে যাবো।আমি তাকে বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দিই।এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।