শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বিপ্লবী জননেতার জন্মদিন উপলক্ষে রক্তদান

News Sundarban.com :
ডিসেম্বর ১৩, ২০২০
news-image

নিউজ সুন্দরবন ডেস্ক: বিপ্লবী জননেতা ত্রিদিব চৌধুরী ১০৯ তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত হল স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির। প্রত্যন্ত সুন্দরবনের বাসন্তী ব্লকের রাধাবল্লভপুর ত্রিদিব চৌধুরী ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে ১৪ তম বর্ষের রক্তদান উৎসবের আয়োজন হয়েছিল। বিপ্লবীর স্মরণে এই স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরে ৭৫ জন মহিলা সহ ১৩০ জন রক্তদাতা স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষারত্নপ্রাপ্ত সমাজসেবী শিক্ষক অমল নায়েক, প্রাক্তন শিক্ষক তথা সুন্দরবনের বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক প্রভুদান হালদার, সুন্দরবন গবেষক অনিমেষ সিনহা, প্রাক্তন মাধ্যমিক বোর্ড সদস্য হরিপদ বৈদ্য,সংস্থার সম্পাদক চন্দ্রশেখর দেবনাথ, সভাপতি নিমাই চাঁদ বর্মন, বাবুয়া মন্ডল প্রমুখ।

উল্লেখ্য একজন বাঙালি স্বাধীনতা আন্দোলনকারী, সাংসদ ও বিপ্লবী সমাজতন্ত্রী দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নেতা ছিলেন বিপ্লবী ত্রিদিব চৌধুরী।
১৯১১ সালের ১২ ডিসেম্বর তাঁর জন্ম। তাঁর পিতা গনেশ চৌধুরী পদস্থ পুলিশ কর্তা ছিলেন।আদি নিবাস ছিল বাংলাদেশের পাবনায়। পিতার চাকরীর বদলির সুবাদে তিনি মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর চলে আসেন।১৯২৬ সালে কৃষ্ণনাথ কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক ও কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে আই.এ পাশ করেন তিন।

ছাত্রাবস্থাতেই স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। বহরমপুর অনুশীলন সমিতির তরুন সংগঠকদের মধ্যে অন্যতম একজন ছিলেন ত্রিদিব চৌধুরী। ১৯৩০ সালে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনের ঘটনায় আত্মগোপন করেন। কিছুদিন পরে ধরাও পড়েন।১৯৩৭ সাল পর্যন্ত কারাবাসে ছিলেন। কারাবাসে থাকাকালীন ১৯৩৩ সালে বিএ ও ১৯৩৬ সালে অর্থনীতি তে এমএ পাশ করেন। ১৯৩৭ থেকে ১৯৪০ এই তিন বছর নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি।

১৯৪০ সালে কংগ্রেস সোশালিস্ট পার্টি থেকে বেরিয়ে যোগেশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রবি সেন, ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী, প্রতুল গাঙ্গুলিদের সাথে মিলিত হয়ে রেভলিউশনারি সোশালিস্ট পার্টি (RSP)বা বিপ্লবী সমাজতন্ত্রী দল গঠন করেন।১৯৪০-৪৬ আবার কারাগারে থাকেন। স্বাধীনতার পরে ১৯৫৫ সালে গোয়ার মুক্তি আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।সে সময় পর্তুগিজ সরকার তাঁকে গ্রেফতার করে ১৯ মাস আটক রাখেন সালজারের জেলে। আর.এস.পি দলের হয়ে সাতবার তিনি সাংসদ নির্বাচিত হন বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্র হতে।১৯৮৭ সালের পর রাজ্যসভায়ও নির্বাচিত হন এবং আমৃত্যু রাজ্যসভার সাংসদ পদে ছিলেন। সাংসদে তিনি সুবক্তা ও সরকারের অন্যায় নীতির কঠোর সমালোচক হিসেবে সুনাম অর্জন করেছিলেন। বাস্তুহারাদের অধিকার, মতপ্রকাশ ও গণতান্ত্রিক চেতনার পক্ষে একাধিকার সওয়াল করেছেন তিনি। মার্ক্সবাদী দর্শনে গভীর পান্ডিত্য ছিল তাঁর। সারাজীবন অসংখ্য রাজনৈতিক প্রবন্ধ ও বেশকয়েকটি গ্রন্থ লিখেছেন ত্রিদিব চৌধুরী। তিনি অকৃতদার ছিলেন ও সহজ সরল জীবনযাত্রা করেছেন আজীবন।  ১৯৯৭ সালের ২১ ডিসেম্বর তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। ।