শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

লটারী টিকিটে রাতারাতি কোটিপতি সুন্দরবনের মৎস্যজীবী

News Sundarban.com :
ডিসেম্বর ৪, ২০২০
news-image

নিউজ সুন্দরবন ডেস্ক:  লটারীর টিকিট কেটে রাতারাতি কোটিপতি হলেন সুন্দরবনের এক দরিদ্র মৎস্যজীবী। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার প্রত্যন্ত সুন্দরবনের বাসন্তী ব্লকের চড়াবিদ্যা গ্রামপঞ্চায়েতের ৭ নম্বর কুমড়োখালি গ্রামে।প্রত্যন্ত এই গ্রামে দারিদ্রতার সাথে লড়াই করে বসবাস করেন মৎস্যজীবী সুভাষ দোলুই।

চার মেয়ে ও স্ত্রী এবং বাবা-মা কে নিয়ে অভাবের সংসার এই মৎস্যজীবীর।জীবন জীবীকার টানে প্রতিদিনই সুন্দরবনের নদীখাঁড়িতে কাঁকড়া ধরতে যেতেন।মাছ কাঁকড়া ধরে বাজারে বিক্রি করে বাড়ি ফেরার পথে বেশকিছু টাকার লটারীর টিকিট কিনতেন সুভাষ দোলুই। আশা ছিল যদি কোনদিন ভাগ্য পরিবর্তন হয়। অবশেষে ঘটলো ভাগ্যের পরিবর্তন। তাও আবার এক লাখ কিংবা দুলাখ টাকা নয়। একেবারেই এক কোটি টাকা পেলেন লটারীতে।উল্লেখ্য ভাঙাচোরা ঘরের চাঁদের আলোতে কোন মতে সংসার চলে নদীতে নদীতে কাঁকড়া ধরে বাজারে কাঁকড়া ধরে।সেই টাকা থেকে কিছু টাকা সংরক্ষণ করে একটু লটারি টিকিট কাটার নেশা ছিল মৎস্যজীবী। আর সেই লটারির টিকিটে আজ তিনি কোটিপতি। এমনি স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে সাত নম্বর কুমড়োখালি গ্রামের বাসিন্দা মৎস্যজীবী সুভাষ দোলুই।তার স্ত্রী চার মেয়ে এবং বৃদ্ধ বাবা ও বৃদ্ধা মাকে নিয়ে তার সংসার।প্রতিদিন সুন্দরবনের নদীতে নদীতে কাঁকড়া ধরে,সেই কাঁকড়া বাজারে বিক্রি করে যে টাকা টা সে পায়,তাই দিয়ে তার কোন মতে সংসার চলে দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে।

আর এই আয় থেকে মৎস্যজীবী কিছু টাকা সংরক্ষণ করে রাখতো।সেই সংরক্ষণের টাকা থেকে মৎস্যজীবী লটারি কাটতো প্রায় প্রতিদিনই।১ ডিসেম্বর স্থানীয় সরবেড়িয়া বাজারে ভীম সরদারের লটারির দোকান থেকে ডি আর সিকিম কোম্পানির একটি লটারি কাটেন এই মৎস্যজীবী।সেই লটারির টিকিট নম্বর ছিল ৫০ বি ৪০১৩৩।যার প্রথম পুরস্কার ছিল এক কোটি টাকা।বুধবার লটারি খেলা হলে,সেই লটারিতে প্রথম পুরস্কার হিসেবে নম্বর মিলে যায় মৎস্যজীবী সুভাষ দোলুইয়ের টিকিট নম্বর।লটারীতে কোটি টাকা পেয়ে কি করবেন ভেবে উঠতে পারছিলেন না। তিনি দৌড়ে যান স্থানীয় বাসন্তী ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা বিশিষ্ট শিক্ষিক শিবনাথ মন্ডলের কাছে।

তিনি তৎক্ষনাৎ লটারী কাউন্টারে যোগাযোগ করেন।শিক্ষক শিবনাথ বাবুর সহযোগিতায় এই মৎস্যজীবী বৃহস্পতিবার লটারি কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে এক কোটি টাকা তুলে দেন মৎস্যজীবী সুভাষ দোলুইকে।আর এই টাকা পেয়ে রাতারাতি ভাগ্য খুলে গেল মৎস্যজীবী সুভাষ দোলুইয়ের।আর এই টাকা পেয়ে সে এখন কোটিপতি যা সুন্দরবনের বুকে বিরল ইতিহাস।ফলে খুশি মৎস্যজীবীর পরিবারের সদস্য সহ স্থানীয় বাসিন্দারা।তবে এ বিষয়ে মৎস্যজীবী সুভাষ দোলুই জানিয়েছেন নদীতে নদীতে কাঁকড়া ধরে বাজারে বিক্রি যে টাকা পেতাম তা দিয়ে কোন মতে সংসার চলে।

তবে আমার লটারির টিকিট কাটার একটু নেশা ছিল।গত ১ ডিসেম্বর একটি লটারির টিকিট কেটেছিলাম ডি সিকিম কোম্পানির। যার প্রথম পুরস্কার ছিল এক কোটি টাকা। সেই লটারি খেলা হলে আমার টিকিট নম্বর মিলে যায়। যার নম্বর ৫০ বি ৪০১৩৩। শিক্ষক শিবনাথ বাবুর সহযোগিতায় আমি লটারি কোম্পানি থেকে পুরো টাকা পেয়েছি।আমার চার মেয়ে স্ত্রী বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা বাবা মা কে নিয়ে সংসার।এই টাকা দিয়ে আমি চার মেয়েকে লেখা পড়া শিখিয়ে মানুষের মতন মানুষ করে তুলবো।আর ভাঙচোরা ঘরটি মেরামতি করবো।পাশাপাশি হতদরিদ্র মানুষের প্রতি সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবো। শিক্ষক শিবনাথ বাবু আদর্শ কে পাথেয় করে এলাকার দুঃস্থ অসহায় পরিবারের ছেলে মেয়েরা যাতে লেখাপড়া শিখে শিক্ষিত হতে পারে তার জন্য এলাকায় আগামী দিনে একটি স্কুল গড়ার স্বপ্ন রয়েছে।