বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কেন্দ্রীয় জয়েন্ট, নিট নিয়ে ফের ঘোঁট সোনিয়া-মমতার,কটাক্ষ বিজেপির

News Sundarban.com :
আগস্ট ২৭, ২০২০
news-image

ডাক্তারির সর্বভারতীয় অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা (নিট) এবং সর্বভারতীয় জয়েন্ট মেন পরীক্ষা স্থগিত রাখার আর্জি নিয়ে এবার সব অবিজেপি রাজ্যকে একযোগ সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দিলেন এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।প্রধানমন্ত্রীাকে চিঠি লিখে আপত্তির কথা জানানোর পর এবার পরীক্ষা রুখতে বিজেপি বিরোধী দল গুলোকে একমঞ্চে আনার বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছেন মমতা। পাশে পেযেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গাঁন্ধীকেও।রাজনৈতিক মহলের মতে লোকসভা ভোটে বিজেপির চমকপ্রদ ফলের পর যে রামধনু জোটের পঞ্চত্ব প্রাপ্তি হয়েছিল এই সুযোগে আবার তাকে চাঙ্গা করার প্রয়াস। তবে নিজেদের ঘরোয়া সমস্যা সামলাতে হিমশিম খাওয়া কংগ্রেস আর কথায় কথায় অবস্থান বদল করা অবিজেপি দলের ছত্রভঙ্গ জোটকে ফের চাঙ্গা করা এখন আদৌ সম্ভব কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। অন্যদিকে এই বৈঠক পুরোপুরি নীতি ও সংবিধান বিরোধী বলে দাবি করেছে বিজেপি । দলের জাতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা বলেন, কোন সরকারি ভবনে বসে এই ধরনের রাজনৈতিক বৈঠক হতে পারে না। তিনি বলেন, এই বৈঠক সম্পূর্ণ অবৈধ। নবান্নে বসে এভাবে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এভাবে পরামর্শ করে মুখ্যমন্ত্রী অনধিকার চর্চা এবং সরকারি ভবনকে কলুষিত করেছেন।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে নিট ও জেইই পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার দাবিতে এদিন অবিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেছেন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জেইই ও নিট পরীক্ষা নিয়ে ২৫ লাখ পড়ুয়া মানসিক চাপে আছেন। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ট্রেন, বিমান বা কোনও গণপরিবহনও পূর্ণমাত্রায় চলছে না।কেন্দ্র ইউজিসি-র সিদ্ধান্ত আগেই পরিবর্তন করেছে। প্রধানমন্ত্রীকেও তিনি পরীক্ষা স্থগিতের আবেদন জানিয়ে চিঠি লিখেছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে মমতা ব্যানার্জি বলেন , সুপ্রিম কোর্টের রায় বিবেচনার অনুরোধ বিকল্প পথ প্রধানমন্ত্রীর হাতে থাকলেও তিনি তা করেননি। আইনজীবীদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করার পথেও হাঁটেননি। সেক্ষেত্রে বিরোধী রাজ্যগুলি পড়ুয়াদের স্বার্থে একযোগে সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

অন্যদিকে বৈঠকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রকে বলেন, রাজ্যের করের সমস্ত টাকা কেন্দ্রের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কেন্দ্র রাজ্যের পাওনা মেটাচ্ছে না। মে-জুনে রাজস্বের অংশ বাবদ ৪১০০ কোটি টাকা এখনো মেটানো হয় নি বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে রাজ্য সরকারের কাজকর্ম পরিচালনা করা হবে তা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন।মমতা বলেন, ‘কোভিড চিকিৎসার বিপুল খরচের ভার। আমেরিকা ১০ শতাংশ জিএসটি কোভিড-খাতে ব্যয় করছে। মানুষের হয়ে লড়তে গেলেই আমাদের বিরক্ত করা হচ্ছে। এমন অত্যাচার আগে দেখিনি। কিছু খোলামেলাভাবে বলতে পারি না। প্রতিটি কেন্দ্রীয় পরিকল্পনার অর্ধেক টাকা দিতে হচ্ছে রাজ্যকে। এ সব বললে, আমাকে যদি গ্রেফতার করে, করুক।’

তাঁর আগে, উদ্বোধনী বক্তব্য রাখতে গিয়ে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী অভিযোগ করেন,জিএসটি-র বকেয়া নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য গুলির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। কয়লা খনির বেসরকারিকরণ নিয়েও তিনি প্রতিবাদ জানান।নতুন শিক্ষানীতি ভারতীয় সনাতন মূল্যবোধের পক্ষে ধাক্কা বলে কংগ্রেস সভানেত্রী মন্তব্য করেছেন।

বৈঠকে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং, ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল এবং পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামী আছেন।