বৃহস্পতিবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সুন্দরবনের সুলিশগেট রক্ষা না করলে বিপন্ন হবে কৃষি ও জনজীবন

News Sundarban.com :
আগস্ট ৮, ২০২০
news-image

শশাঙ্ক শেখর মন্ডল

প্রথম পর্ব :

সুন্দরবনের সেকেলে জল সরবরাহ ব্যবস্থার জন্য মার খাচ্ছে এই অঞ্চলের কৃষি কাজ। জনবসতিপূর্ণ দ্বীপের জল-সরবরাহ ব্যবস্থার একমাত্র মাধ্যম হলো সুলিশগেট। এখানকার কৃষি ও নদী বাঁধের সঙ্গে এটি যুক্ত। দ্বীপের ভিতরে থাকা জমিতে জল জমলে গেট দিয়ে জমা জল বের করে জমি ও গ্রামকে কে বাঁচানো হয়। শুধু নদীর ভাটার সময় এই ব্যবস্থা কাজ করে। প্রয়োজনীয় সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বর্তমানে এই ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভাবে বিপর্যস্ত। এর ফলে মার খাচ্ছে এখানকার কৃষি ব্যবস্থা। বেহাল এই ব্যবস্থার জন্য চাষের জমি প্রয়োজনীয় জল এই গেট দিয়ে বেরিয়ে গিয়ে নদীতে মিশে গিয়ে জমিন শুকিয়ে দিচ্ছে। চাষিরা প্রয়োজন মত বৃষ্টির জল কাজে লাগাতে পারছেন না। এখানকার বৃষ্টিপাত এখন হয়ে পড়েছে ভীষণ রকমের বিক্ষিপ্ত এবং তার তীব্রতা অনেক বেড়েছে। গত এক দশকের বেশি বছর সময় দেখা যাচ্ছে সুন্দরবনের আমন ধানের চাষ অনেকটা পিছিয়ে গেছে। প্রারম্ভিক বর্ষা ঋতু বেশিরভাগ বৃষ্টির জল ভগ্নদশা সুলিশ গেট দিয়ে নদীতে বেরিয়ে যাওয়ায় চারা ধান প্রস্তুত করতে চাষীরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।

পরিবেশ বিষয়ক সংস্থান Centre for science and environment CSE সুন্দরবনের উপর চালানোর সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
সুন্দরবনের জলবায়ু বদলে যাচ্ছে। এমনকি বদলে যাছে মাটির চরিত্রও। বিস্তীর্ণ সুন্দরবন এলাকার মানুষের বেঁচে থাকার লড়াই আরো কঠিন হচ্ছে। সমীক্ষা কারী সংস্থার অভিমত, এখানকার জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে পরিবেশ কতটা বদলাচ্ছেন তা ঠিকমত না জেনে উন্নয়নের পরিকল্পনাও নদীবাঁধ তৈরীর প্রকল্প রুপায়ন অসম্ভব।

সুন্দরবনের অর্থনীতির ৭৮ শতাংশ এবং স্থানীয় মানুষের ৬৫ শতাংশ কৃষির উপর নির্ভরশীল। অথচ সেখানকার ৮৫ শতাংশ চাষী হয় ক্ষুদ্র অথবা প্রারম্ভিক। কৃষি শ্রমিকদের মাথাপিছু চাষযোগ্য জমির পরিমাণ কমতে কমতে দাঁড়িয়েছে মাত্র ০.৫ হেক্টরে। সুন্দরবন যেমন দেশের সবচেয়ে অনুন্নত অঞ্চল গুলির অন্যতম তেমনই সেখানকার জনসংখ্যার ঘনত্ব জাতীয় গড় হাড়ের চার গুণ বেশি। প্রতি দশকে সুন্দরবনের জনসংখ্যা বাড়ছে ১৮ শতাংশ করে। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী সুন্দরবনে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে এক হাজার মানুষ বাস করেন।