শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বিষধর সাপ দেখলেই ডাক পড়ে ক্যানিংয়ের সাপের ত্রাতা ক্ষ্যাপা সুব্রত’র

News Sundarban.com :
জুলাই ২৭, ২০২০
news-image

বিশ্লেষণ মজুমদার, ক্যানিং
অন্যান্য বছরের ন্যায় চলতি বছর বর্ষার শুরু থেকেই গ্রাম বাংলা সহ সুন্দরবনের ক্যানিং মহকুমা এলাকায় বর্ষার শুরু থেকেই সাপের উপদ্রব শুরু হয়েছে।এলাকার বাসিন্দাদের কথা এবছর আম্ফান ঝড়ের দাপটে সাপের উপদ্রব কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে।বিশেষ করে মাঠের জলাশয়ে মাছ ধরার জালে,আটল কিংবা মাছ ধরার ঘুণিতে প্রায় প্রতিনিয়ত বিষধর সাপ আটকে পড়ছে।পাশাপাশি সন্ধ্যার পরেই প্রকাশ্যে রাস্তা ঘাটে বেরিয়ে আসছে বিষধর বিষাক্ত সাপ।পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য সাপ মেরে ফেলা একে বারেই অনুচিৎ।তা স্বত্বেও ভয়ে আতঙ্কে নিরুপায় হয়ে গ্রামবাসীরা সাপ মেরে ফেলছেন। তাছাড়া ও গ্রামবাসীদের অভিযোগ যেসব সংস্থার লোকজন সাপ ধরেন,তাঁদের কে ফোন করে ডাকলে আসতে চান না। তারপর যদিও বা আসতে রাজী হয় তার জন্য বড় অংঙ্কের টাকার দাবী করে বসেন।এছাড়াও বনদফতরের সাথে যোগাযোগ করার ইচ্ছা থাকলেও সাধারণ গ্রামবাসীদের হাতের কাছে কোন যোগাযোগের ফোন নম্বর না থাকায় অসহায় হয়ে পড়ে সাপ মেরে নিষ্কৃতি পাওয়ার চেষ্টা করেন।
এমন পরিস্থিতির মাঝে নিজ উদ্যোগে সাপ কে মেরে না ফেলে বাঁচানোর একক উদ্যোগ গ্রহন করেছে ক্যানিংয়ের দিঘীরপাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের শরৎপল্লীর যুবক ক্ষ্যাপা সুব্রত। এলাকার গ্রামবাসীদের দাবী চলতি বছরের জুন জুলাই মাসে এলাকার বিভিন্ন নালা নিকাশী এবং গৃহস্থের বাড়ি থেকে সুব্রত ১০/১২ টি বিষধর কেউটে সাপ ধরে মাতলা নদীর তীরবর্তী জঙ্গলে ছেড়ে দিয়েছে সুব্রত রায়(ক্ষ্যাপা)।পেশায় দীনমজুর এই যুবক বাউল গান করেন। এবং এঢ়াকার বাসিন্দারার ক্ষ্যাপা নামেই চেনেন এবং জানেন। সাপ ধরা পড়েছে কিংবা কোন গৃহস্থের বাড়িতে বিষধর সাপ ঢুকেছে খবর পাওয়া মাত্র ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে সাপ কে উদ্ধার করে অন্যত্র জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়ার কাজ করে চলেছেন যুবক ক্ষ্যাপা।গ্রামবাসীদের কথায় রাত ১২ টায় যদি ক্ষ্যাপা কে খবর দেওয়া হয়।
ঘটনাস্থলেই হাজীর হবেই হবে। স্থানীয় বাসিন্দা কালিদাস দেবনাথ,সুব্রত মন্ডল,সর্বজিৎ মন্ডলরা জানিয়েছেন সুব্রত(ক্ষ্যাপা)না থাকলে চলতি মাসে জালে আটকে পড়া ১০/১২ টি বিষধর কেউটে সাপ মেরে ফেলতেন গ্রামবাসীরা।ক্ষ্যাপা কে খবর দিলে সাপ গুলো উদ্ধার করে মাতলা তীরবর্তী জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেয়।সুন্দরবনের বিশিষ্ট সমাজসেবী ফারুক আহমেদ সরদার বলেন “পরিবেশের ভারসাম্য সামঞ্জস্য রাখার জন্য সাপর একেবারেই মেরে ফেলা অনুচিত।পরিবেশের স্বার্থে সাপ কে বাঁচিয়ে রাখা অত্যন্ত জরুরী।পরিবেশের স্বার্থে ক্ষ্যাপা যে ভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাপ উদ্ধার করে জঙ্গলে ছেড়ে দিচ্ছে এবং সাধারণ মানুষ কে সাপ সম্পর্কে সচেতন করছেন তা এক কথায় অনবদ্য।
সাপ ধরে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া প্রসঙ্গে ক্ষ্যাপা সুব্রত রায় জানিয়েছেন “সাপ আমাদের পরিবেশের বন্ধু।ফলে পরিবেশ কে বাঁচিয়ে রাখতে বন্ধু কে মেরে ফেলা অনুচিৎ। তাই খবর পেলেই সাপ ধরে জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে আসি।”