শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রাজ্য খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে আছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে রিপোর্ট ধনখড়ের

News Sundarban.com :
জুলাই ২০, ২০২০
news-image

নিউজ সুন্দরবন ডেক্স: রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহকে বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থতা, আম্পানের ক্ষতিপূরণ দুর্নীতি, বিরোধী নেতা কর্মীদের ওপর শাসক দলের হামলা, পুলি্শের পক্ষপাত দুষ্টতা, বেহাল শিক্ষা ব্যবস্থা সব কিছু নিয়েই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে তাঁদের মধ্যে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আলোচনা হয়।

রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করতে সোমবার দিল্লি গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। অমিত শাহর বাস ভবনে গিয়ে বৈঠকের পর বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে দেন ধনখড়। পরে সন্ধ্যায় রাজ্যপালের তরফে এক বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার বিষয়বস্তু জানিয়ে দেওয়া হয়।পরে একটি টুইটবার্তায় রাজ্যপাল বলেন, ‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে এক ঘণ্টার বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলির উপর জোর দিয়েছি – করোনাভাইরাসে মৃত্যু এবং পজিটিভ কেসের উদ্বেগজনক বৃদ্ধি, আইনশৃঙ্খলার অভাব এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের টার্গেট করা, আমফান ত্রাণবণ্টনে সীমাহীন দুর্নীতি।’রাজ্যপাল রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রেকর কাছে। তিনি বলেন দিন দিন রাজ্যে কোভিড রোগীর সংখ্যা বাড়ছে কিন্তু সরকার উপযুক্ত স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে পারছে না। এর ফলে রোগ ছড়াচ্ছে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে কোভিড আক্রান্তের সমস্যা বাড়ছে। এনিয়ে রাজ্যের মনুষ উদ্বিগ্ন। আমফানের ত্রাণে দুর্নীতি নিয়েও অভিযোগ করেছেন রাজ্যপাল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে তাঁর বার্তা, ত্রাণ দেওয়ার থেকে শাসক দলের লোকজন ত্রাণের টাকা সরিয়েছে। এই ধরনের দুর্নীতি রোখার জন্য রাজ্য সরকার উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়নি। বরং তা চাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে।প্রসঙ্গত, আমফানের ত্রাণ বন্টনে যে দুর্নীতি হয়েছে তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি কোনও কোনও ক্ষেত্রে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়াও হয়েছে। রাজ্যে বিরোধী দলের সদস্যদের ওপরে আক্রমণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ধনখড়। এতে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হয়েছে। গত এক বছর ধরে এই অবস্থা চলছে।

সংবিধান লঙ্ঘন বহু কাজ করা হচ্ছে। আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিস দল দেখে ব্যবস্থা নিচ্ছে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পুলিস আধিকারিদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে জানিয়েছেন রাজ্যপাল। হেমতাবাদের বিধায়কের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি নেতারা। রাজ্যপালের কাছেও তাঁরা দরবার করেন।অমিত শাহের সঙ্গে আলোচনায় রাজ্যে উচ্চশিক্ষার প্রসঙ্গও টেনে আনেন ধনখড়। উচ্চশিক্ষায় রাজনীতি ঢোকানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্যপাল। সম্প্রতি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে সংঘাত বাধে রাজ্যপালের। তা নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন ধনখড়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-রাজ্যপালের সেই বৈঠক নিয়ে রাজ্য সরকার বা তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে আপাতত মুখ খোলা হয়নি। যদিও রাজ্যপালের বৈঠক নিয়ে রাজভবন-নবান্নের মধ্যে যে নতুন করে দ্বন্দ্ব তৈরি হবে, তা বলাই বাহুল্য। এমনিতেই বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্যপালের ‘অতি সক্রিয়তা’ ভালোভাবে নেয়নি তৃণমূল সরকার। এবার সেই দূরত্ব আরও বাড়বে বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের।