মঙ্গলবার, ১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নদীবাঁধ ভাঙন রুখতে এবার খেজুর-তাল গাছ রোপণে জোর

News Sundarban.com :
জুন ২৩, ২০২০
news-image

সুভাষ চন্দ্র দাশ, ক্যানিং –

নদীবাঁধের ভাঙন রুখতে সুন্দরবনের নদীবাঁধের পাড়ে ম্যানগ্রোভের পাশাপাশি এবার খেজুর গাছ রোপণ শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক ‘আম্ফান’ ঝড় থেকে শিক্ষা নিয়ে খেজুর এবং তাল গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। এবং এই কাজটি করা হচ্ছে ‘একশো দিনের কাজ’ এর মাধ্যমে।
সাম্প্রতি আম্ফান ও বুলবুল,ফণী ঝড়ে প্রচুর বড় বড় গাছ উপড়ে পড়েছে। তাই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছা, এবার সুন্দরবনে ঝড় সইতে পারে এমন-সব গাছ লাগাতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর সেই ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে আপাতত খেজুর গাছ রোপণ শুরু হয়েছে ক্যানিং-১ নম্বর ব্লকের নিকারীঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। সোমবার রথের দিন থেকে শুরু হয়েছে এই কাজ। এদিন মতলা নদীর বাঁধে সাড়ে তিন’শো খেজুরের চারাগাছ লাগানো হয়েছে। এরপর তালগাছ এবং তাল পাকলে তালে বীজ বপন করা হবে।

জেলার এমজিএনআরজিএ দপ্তরের জেলা আধিকারিক সৌরভ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন ‘বাস্তবে দেখা গেছে এবারের ঝড়ে খেজুর এবং তাল গাছ কিন্তু উপড়ে পড়েনি। এইসব শাখাপ্রশাখাহীন দন্ডায়মান গাছের শিকড় মাটির অনেক গভীরে র নীচ পর্যন্ত পৌঁছায়। মাটিকে শক্তপোক্ত ভাবে ভালো করে আঁকড়ে ধরে রাখে। অনেকটাই ম্যানগ্রোভের মতো। সেই কারণে তাল-খেজুরের উপরেও রোজ দেওয়া হয়েছে। এইসব তাল-খেজুর গাছ বাঁধ রক্ষায় ভাল কাজ করবে।’
জেলা প্রশাসনের নির্দেশে নিকারীঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েত ‘একশো দিনের কাজে’যুক্ত শ্রমিকদের দিয়ে গ্রামের বিভিন্ন জায়গায়, বাড়ির আনাচে-কানাচে থেকে বিভিন্ন বয়সের চারাগাছ সংগ্রহ করে এনে নদী বাঁধের ধারে ধারে রোপণ করছে। এই কাজের দায়িত্বে থাকা ‘এমজিএন আরইজিএ’ দপ্তরের জেলা প্রতিনিধি জয়দের দাস জানিয়েছেন, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অধীনে থাকা সুন্দরবন অধ্যুষিত ক্যানিং১, ক্যানিং-২, গোসাব, বাসন্তী, কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা, সাগর-সহ ১৩ টি ব্লকে নদীর ধারে ধরে এই কর্মসূচির কাজ চলছে। বাঁধ ছাড়াও রাস্তার দু’ধারের এই ধরণের গাছ লাগানো চলছে। এতে একদিনে যেমন সৌন্দয্যায়ন বাড়বে অন্যদিকে তেমনি রাস্তার ভাঙনও আটকাবে।

উল্লেখ্য নদীবাঁধ ভাঙন রুখতে নদীর তীরে তাল এবং খেজুর বীজ রোপণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন প্রত্যন্ত সুন্দরবনের ঝড়খালি গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ’সবুজ বাহিনী’। বিগত ২০১৯ সালে অক্টোবর মাসে প্রা ৫ কিলোমিটার নদী বাঁধে তাল ও খেজুর বীজ রোপণ করার সময় অনেকে হাসিঠাট্টা করেছিলেন এমন কাজের জন্য। বর্তমানে নদীবাঁধ ভাঙন রুখতে কিংবা বাজ পড়া রুখতে তাল কিংবা খেজুর গাছের জুড়িমেলা ভার।ফলে বিগত দিনের সেই রহস্য আজ বাস্তবে বাঁচার জন্য এক নবদিগন্ত। ফলে খুশি ঝড়খালি সবুজ বাহিনীর মহিলারা।