বৃহস্পতিবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মায়ের পারলৌকিক ক্রীয়াকার্য্য করার আগেই ত্রাণ তুলে দিলেন ছেলে

News Sundarban.com :
জুন ১১, ২০২০
news-image

সুভাষ চন্দ্র দাশ,ক্যানিং –

মায়ের মৃত্যুতে ধর্মীয় নিয়ম মেনেই পারলৌকিক ক্রীয়াকার্য্য করার আগেই ২৫০ জন আম্ফান বিধ্বস্ত দরিদ্র পরিবারের হাতে ত্রাণ তুলেদিন সুখেন্দু নস্কর।সুখেন্দুর এমন উদ্যোগ কে স্বাগত জানিয়ে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁর পরিবারের সকল সদস্য সহ প্রতিবেশীরা।

চলছে করোনার তান্ডব। চলছে লকডাউনও। বিধ্বস্ত সমস্ত মানুষজন। ইতিমধ্যে গত ২৬ মে বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয় সুখেন্দু বাবুর মা বছর সাতান্ন বয়সের দীপালি দেবী।বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলেও সমস্ত চিকিৎসা পরিষেবা কে উপেক্ষা করে গত ২৮ মে পরলোক গমন করেন দিপালী নস্কর(৫৭)।সুখেন্দু বাবুর বাবা নিরাঞ্জন নস্করও গত প্রায় ৩২ বছর আগেই পরোলোক গমন করেন। একদিকে করোনা আর অপর দিকে লকডাউন জোড়া ফলায় বিধ্বস্ত নস্কর পরিবারের লোকজন। আর এমন কঠিন সময়ে দিপালী দেবীর মৃত্যু হওয়ায় ভেঙে পড়েন নস্কর পরিবারের লোকজন।
নস্কর পরিবারের লোকজন দিপালী দেবীর আত্মার শান্তির কামনায় ক্রীয়াকার্য্যের জন্য পুরোহিত মশাইয়ের সাথে আলাপ আলোচনা করেন।
তখনই দিপালী দেবীর একমাত্র ছেলে সুখেন্দু বাবু সিদ্ধান্ত নেন সামাজিক দুরত্ব মেনে ক্রীয়া কার্য্য হবে। তবে সামাজিক অনুষ্ঠান তিনি করবেন না।সামাজিক অনুষ্ঠানের খরচের টাকায় তিনি দরিদ্র দুঃস্থ জন্য ত্রাণ দেবেন। সুখেন্দুর এমন চিন্তাভাবনা কে স্বাগত জানিয়ে তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন বোন স্বপ্না দাস ও জামাইবাবু হারু দাস ও সুখেন্দু বাবুর স্ত্রী বনশ্রী ও দীপালি দেবীর নাতি নিঃঝড় নস্কর।দীপালি দেবীর আত্মার শান্তির জন্য পারলৌকিক ক্রীয়াকার্য্যে আগেই মঙ্গলবার সকালে দাঁড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের শিবতলা মাঠ নস্কপাড়া এলাকায় প্রায় ২৫০ দুঃস্থ পরিবারের হাতে চাল,ডাল,তেল,আলু,মাস্ক,সাবান সহ নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী তুলেদেন।
একদিকে করোনা আর অপর দিকে আম্ফানের ঝটকায় জর্জরিত সাধারণ দরিদ্র মানুষজন।লকডাউনে কোন উপার্জন না হওয়ায় সকলেই রয়েছেন অসহায়। চরম সংকটময় মুহূর্তে এমন ত্রাণ পেয়ে খুশি এলাকার অসহায় দরিদ্র পরিবার গুলো।
মায়ের শ্রাদ্ধতে কেন ত্রাণ বিতরণ? এমন প্রশ্নের জবাবে সুখেন্দু বাবু বলেন “বর্তমানে সময়ে জর্জরিত সমগ্রদেশ।তারপর আম্ফান তান্ডব চালিয়েছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে দরিদ্র পরিবার গুলো রয়েছেন চরম অসহায় ভাবে।সামাজিক অনুষ্ঠান করলে সামাজিক দুরত্ব নিয়ম কে লঙ্ঘন করা হবে। সাধারণ মানুষের কাছে ভুলবার্তা যাবে।যারজন্য মায়ের আত্মার শান্তির জন্য সামাজিক অনুষ্ঠান বাতিল করে সেই টাকায় দরিদ্র দুঃস্থ পরিবারগুলোর হাতে সামাজিক দুরত্ব মেনে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য সামগ্রী তুলে দিয়েছি।”