বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আম্ফান বিধ্বস্ত মিনি সুন্দরবনে ত্রাণ দিলেন বাসন্তীর অমল

News Sundarban.com :
জুন ৪, ২০২০
news-image

নিজস্ব প্রতিনিধি, ক্যানিং -মঙ্গলবার পিয়ালী ষ্টেশন সংলগ্ন মিনি সুন্দরবনে গিয়ে সুপার সাইক্লোন আম্ফান বিধ্বস্ত শতাধিক পরিবারের হাতে ত্রাণ তুলে দিলেন বিশিষ্ট সমাজসবী শিক্ষক তথা শিবগঞ্জের চম্পা মহিলা সোসাইটির সর্বময় কর্তা অমল নায়েক। সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার নদীবাঁধ দিয়ে ঘেরা বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ব-দ্বীপ সুন্দরবন। ডাঙায় বাঘ আর জলে কুমীরের সাথে লড়াই করে বৃহত্তম এই ব-দ্বীপে প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ মানুষ বসবাস বসবাস করেন।গত ২০০৯ সালে ২৫ মে সুন্দরবনের বিশাল একটা অংশে ভয়ানক ভাবে আঘাত হানে আয়লা নামক সাইক্লোন। বাড়িঘর,গাছপালা ভেঙে তছনছ করে দেয় সুন্দরনের বেশ কিছু অংশ।আয়লার দাপটে ভেঙে পড়ে ৭৭৮ কিলোমিটার নদীবাঁধ। প্রচুর গবাদী পশু সহ বহু মানুষজন কে জলের প্রবল স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। মৃত্যু হয় অসংখ্য গবাদী পশু সহ প্রচুর মানুষের।বাঁধভাঙা নদীর লবণাক্ত নোনা জল চাষের জমিতে ঢুকে নষ্ট করে দেয় ফসল সহ পুকুরের মাছ।জলের তলায় তলিয়ে যায় অসংখ্য মাটির বাড়িঘর।বেঁচে থাকার জন্য অবশিষ্ট কোন কিছু না থাকায় অসহায় হয়ে পড়েন সুন্দরবনের আধিকাংশ মানুষজন।নদীর গ্রাসে সর্বস্য খুইয়ে দিশাহারা হয়ে খোলা আকাশের নীচে আশ্রয় নিয়েছিল অনেক পরিবার।পরবর্তী ২০০৯ সালের শেষ দিকে সুন্দরবনের মোল্ল্যাখালি,কচুখালি,আমতলি,মরিচঝাঁপি থেকে উদ্বাস্তু হয়ে প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে আশ্রয় নেয় বারুইপুরের পিয়ালী ষ্টেশন সলগ্ন এলাকা কলাড়িয়া, শ্রীকৃষ্ণ পুর,মোল্ল্যাখালি(পিয়ালী)তে। বসবাস শুরু করেন আয়লা বিধ্বস্ত পরিবার গুলো।কয়েক বছরের মধ্যে প্রচুর গাছপালা রোপন করেন এই সমস্ত আয়লা বিধ্বস্ত পরিবারের লোকজন। চারিদিকে শুধু গাছ আর গাছ।আয়লা বিধ্বস্ত পরিবারের লোকজন নতুন এই এলাকার নামকরণ করেন সুন্দরবনের নামে। নামকরণ করেন মিনি সুন্দরবন।গত ২০মে সুপার সাইক্লোন আম্ফানের তান্ডব থেকে রক্ষা মেলেনি এই মিনি সুন্দরবন ও। সুপার সাইক্লোনের দাপটে ভেঙে পড়েছে একের পর এক বাড়িঘর,গাছপালা,বিদ্যুতের খুঁটি।বর্তমানে আম্ফান বিধ্বস্ত মিনি সুন্দরবনের মানুষজন খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছে সবকিছু হারিয়ে।মিনি সুন্দরবনে বসবাস করা আম্ফান বিধ্বস্ত পরিবার গুলোর করুণ দুর্দশার কথা লোক মারফত জানতে পারেন সমাজসেবী তথা শিক্ষক অমল নায়েক। তিনি মঙ্গলবার সকালে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য সামগ্রী ও ত্রিপল নিয়ে পৌঁছে যায় মিনি সুন্দরবনের বিধ্বস্ত পরিবার গুলোর কাছে। ত্রাণ তুলেদেন মিনি সুন্দরবনবাসীদের হাতে।

উল্লেখ্য ১৯৭৮ সালে নবম শ্রেণীতে পড়াশোনা করাকালীন মানুষের বিপদে আপদে তিনি সর্বদাই ঝাঁপিয়ে পড়ে সমাজসেবার কাজ শুরু করেন।একদা সুন্দরবন এলাকার বাসন্তী, গোসাবা ব্লকে দীর্ঘ ৪২ বছর ধরে সমাজসেবা মূলক কাজ করে আসছেন ধারাবাহিক ভাবেই।প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে শুরু করে বাঘের আক্রমণে মৃত পরিবারের কাছে তিনি এযাবৎ ত্রাতা হিসাবে পরিচিত।
মঙ্গলবার সকালে অমলবাবু ত্রাণ নিয়ে পৌঁছে যায় পিয়ালী এলাকার আম্ফান বিধ্বস্ত মিনি সুন্দরবনে। সেখানে যমুনা বাউলিয়া,গঙ্গা তরফদারদের হাতে তুলেদেন ত্রিপল,চাল ডাল আলু সহ অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী।