মঙ্গলবার, ১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আম্ফান কেড়েছে ঘরবাড়ি,শিশুদের পরনে নেই বস্ত্র,মানুষের সাহায্যার্থে এলেন সমাজসেবী

News Sundarban.com :
মে ৩০, ২০২০
news-image

বিশ্লেষণ মজুমদার, ক্যানিং –

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সুন্দরবনের ক্যানিং মহকুমায় গত ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের দাপটে উড়েগিয়েছে কারোর ঘরের চাল,ভেঙে পড়েছে অজস্র ঘরবাড়ি,গাছপালা,বিদ্যুতের খুঁটি,ছিঁড়ে গিয়েছে বিদ্যুতের তার।এমনকি ভেঙে গিয়েছে এলাকা বিভিন্ন নদীর বাঁধ।সুন্দরবনে নদী গুলিতে জলের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় বাঁধ ছাপিয়ে নোনাজল ঢুকে যায় লোকালয়ে । ফলে হাজার হাজার বিঘের চাষের জমি নষ্ট হয়েছে।নোনা জলে নষ্ট হয়েছে পুকুরের মাছও।ফলে অসহায় সুন্দরবনের সাধারণ মানুষজন থেকে শুরু করে কৃষক, মৎস্যজীবীরা।ঘূর্ণিঝড় আমফানের তান্ডবে ধ্বংস স্তূপের চেহারা নিয়েছে সুন্দরবনে ক্যানিং-১ ও ২,বাসন্তী,গোসাবা ব্লক সহ বিভিন্ন ব্লকের বিভিন্ন অঞ্চলগুলি।বর্তমানে ক্যানিং মহকুমা ১৮ লক্ষ মানুষের বসবাস।১৯ টি ব্লক নিয়ে সুন্দরবন গঠিত।এক দিকে জলে কুমির ডাঙায় বাঘ এই নিয়ে সুন্দরবনবাসীর সহাবস্থান।ঘূর্ণিঝড় আমফানের দাপটে বাদ যায়নি ম্যানগ্রোভ জঙ্গল।ঝড়ের দাপটে পড়ে গেছে সুন্দরী,কেওড়া,গরাণ,হোগল, গোলপাতা সহ বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার গাছ।এমনকি নষ্ট হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের প্রজন্ম।সাধারণত এই সময় মাছে ডিম ছাড়ে।আর সেই সময়ে এই ঘূর্ণিঝড়ে বহু নোনা জলের মাছের প্রজন্ম এবং নোনা জল লোকালয়ে ঢুকে মিষ্টি জলের মাছের প্রজন্ম নষ্ট হয় এমনি মতামত বিভিন্ন মহলে।তবে প্রশাসন সূত্রে জানা যায় ঘূর্ণিঝড় আমফানের দাপটে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলার ১০ লক্ষের বেশী ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।এদিকে ঘূর্ণিঝড় আমফানের তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় এখনও পর্যন্ত ঠিক মতন ত্রাণ পৌঁছায়নি।ফলে অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে বহু ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজন।বাসন্তী ব্লকের আমঝাড়া অঞ্চলে শিকারি পাড়া,তালদা,সাত নম্বর বটতলা,হালদার পাড়া,মাইতিপাড়া,বাঙালপাড়া,সরদার পাড়া,পাকাপোল পাড়া সহ বিভিন্ন গ্রাম গুলি এখন ধ্বংস স্তূপে পরিণত হয়েছে।এখনও পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তরা পায়নি সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা।এমনি অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের।ফলে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের দাপটে কেড়ে নিয়েছে ঘরবাড়ি থেকে সমস্তকিছুই। শিশুদের পরনে নেই বস্ত্র।আর এই সব অসহায় মানুষের সাহায্যার্থে এগিয়ে এলেন বিশিষ্ট সমাজসেবক কার্ত্তিক বোস।তিনি আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্তের পাশে গিয়ে দাঁড়ালেন।বাড়িয়ে দিলেন সাহায্যের হাত।অসহায় মানুষগুলির হাতে তুলে দিলেন চাল,আলু,সাবান,মাক্স সহ খাদ্য সামগ্রী। আবার বিধবা,বৃদ্ধা,বৃদ্ধ,গৃহবধূ এবং শিশুদের হাতে তুলে দিলেন বস্ত্র।এক দিকে লকডাউন,আর অপর দিকে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তান্ডব।যা অসহায় করে তুলেছে সুন্দরবনবাসীকে।সোদা মাটির নোনা জলে জালের ফাঁক থেকে স্বপ্ন দেখাটা এখন তাদের কাছে অতীত হয়ে গেছে।এখন তাদের কাছে দু মুঠো ভাত,আর পরনের সামান্যটুকু পোষাক অনেক মূল্যবান।একের পর এক ঘূর্ণিঝড় কখনও আয়লা,কখনও বুলবুল এবং আম্ফান কেড়ে নিয়েছে জমে থাকা বহু স্বপ্ন।পিছিয়ে পড়া সুন্দরবন,আরো পিছিয়ে পড়লো প্রকৃতির নিয়মে।বিশিষ্ট সমাজসেবক কার্ত্তিক বোস বলেন সারা বিশ্ব জুড়ে করোনা ভাইরাস থাবা বসিয়েছে।সারা দেশ জুড়ে চলছে লকডাউন।ফলে ঘরবন্দি বহু মানুষ।কাজ নেই লকডাউনে।তারপর ঘূর্ণিঝড় আমফানের দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত সুন্দরবনের বহু মানুষজন।তাই ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে এমন ধরনের উদ্যোগ।বাসন্তী ব্লকের আমঝাড়া,ফুলমালঞ্চ পানিখালি সহ বিভিন্ন এলাকায় কয়েকশো ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের হাতে বস্ত্র তুলে দেওয়া হয়।বিশেষকরে শিশু,বৃদ্ধ বৃদ্ধা,গৃহবধূ,বিধবাদের শাড়ি, ধূতি,জামা, পান্ট তুলে দেওয়া হয়।এছাড়া যেদিন থেকে লকডাউন শুরু হয়েছে তখন থেকে কয়েকশো অসহায় পরিবার গুলিকে চাল,ডাল,আলু,সরষের তেল,সাবান,মাক্স সহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী তুলে দেওয়া হয় সম্পূর্ণ ভাবে লকডাউনের নিয়ম কানুন মেনে।