রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাট থেকে ব্যাগভর্তি বাজার নিয়ে বাড়ি ফিরলেন দুঃস্থ মানুষজন
সুভাষ চন্দ্র দাশ,ক্যানিং –
কবিগুরু রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের ১৫৯ তম জন্ম জয়ন্তী উপলক্ষে শুক্রবার সাকলে হাট বসেছিল। জমজমাট হাট বসেছিল সুন্দরবনের সিংহদূয়ার ক্যানিং ষ্টেশন সংলগ্ন এলাকায়।সেই হাট থেকে বিনামূল্যে ব্যাগভর্তি বাজার নিয়ে খুশিতে বাড়ি ফিরলেন দুঃস্থ মানুষজন।
বিশ্বকবি কবিগুরু রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর লিখেছিলেন “হাট বসেছে শুক্রবারে,বক্সিগঞ্জের পদ্মাপারে”।বর্তমানে দেশ তথা বিশ্বজুড়ে চলছে করোনার দাপট। আর সেই দাপটে জর্জরিত সাধারণ মানুষজন।ভাইরাস আক্রমণের ভয়ে গৃহবন্দি সাধারণ মানুষ।বাজারহাট করতে পারছেন না অনেকেই।কবি গুরুর ১৫৯ তম জন্মদিন উপলক্ষে ঐতিহাসিক ‘হাট’ বক্সিগঞ্জের পদ্মাপারে বসার পরিবর্তে হাট বসলো ক্যানিং ষ্টেশন সংলগ্ন এলাকায়।এদিন কবিগুরুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে হাটের সূচনা করেন সমাজসেবী সমরেশ দলুই।উল্লেখ্য করোনা ভাইরাস আটকাতে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখেই সকালে সেই ‘হাট’ বসলো সুন্দরবনের সিংহদূয়ার তথা প্রবেশদ্বার ক্যানিং ষ্টেশনে।নানান প্রাকৃতিক ও সামজিক দুর্যোগ উপেক্ষা করে ঐতিহাসিক হাটের সূচনা করেন সমাজসেবী সমর দোলুই।এদিন হাট থেকে প্রায় ২০০ রিক্সাচালক,মুটিয়া মজুদূর সহ দুঃস্থ মানুষজন আসেন বাজার হাট করতে। হাট থেকে উচ্ছে,বেগুন,পটল,কুমড়ো,লাই,আলু,পিয়াজ,সাবান,মাস্ক সহ অন্যান্য শাকসবজী বিনামূল্যে ব্যাগ ভর্তি করে নিয়ে হাসিমুখে বাড়িতে রওনা দেন।উল্লেখ্য কবিগুরু রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর হ্যামিলটন সাহেবের ডাকে সাড়া দিয়ে ১৯৩২ সালে ২৯ ডিসেম্বর সুন্দরবনের গোসাবা দ্বীপে গিয়েছিলেন।তৎকালীন সময়ে রেলযোগে ক্যানিং ষ্টেশন নামেন। সেখান থেকে ক্যানিংয়ের ডকথেকে স্টীমারে করে রওনা দিয়েছিলেন গোসাবার উদ্দ্যেশে।সেই সুবাদে বিশ্বকবির পদধূলিতে ধন্য সুন্দরবনের প্রবেশদ্বার ক্যানিং সহ সমগ্র গোসাবা দ্বীপ।বর্তমানে করোনার দাপটে সর্বত্র চলছে ত্রাহি ত্রাহি রব। লকডাউনের জন্য অধিকাংশ মানুষজন বাড়ির মধ্যে আবদ্ধ রয়েছেন।একদিকে বাজার হাট বন্ধ।অন্যদিকে লকডাউনে কাজকর্ম হারিয়ে অর্থনৈতিক ভাবে সমস্যায় জর্জরিত সাধারণ মানুষ।অসহায় হয়ে মহাফাঁপরে পড়েছেন দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলো।আর সেই কারণে কবি গুরুর ১৫৯ তম জন্ম দিনে তাঁরই সেই ঐতিহাসিক শুক্রবারের “হাট” বসেছিল সুন্দরবনের সিংহদূয়ার ক্যানিং ষ্টেশনে।হাটে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে চলে সাধারণ মানুষের আনাগোনা।হাট মালিক সমর দোলুইয়ের একক সহযোগিতায় সাধারণ মানুষ শুক্রবারের ঐতিহাসিক হাট থেকে পর্যাপ্ত পরিমান খাদ্যসামগ্রী বিনামূল্যে সংগ্রহ করতে পেরে খুশি।
হাট মালিক সমর দলুন বলেন “করোনার তান্ডবে অসহায় হয়ে পড়েছেন দুঃস্থ পরিবার গুলি। তাদের কে সাহায্য করার ইচ্ছাছিল। বর্তমানে রাজ্য সরকারে সৌজন্যে তাঁরা রেশন থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ চাল,আটা পাচ্ছেন।সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে একান্তভাবে সবজীর দরকার দুঃস্থ পরিবার গুলির।সেই কারণেই বরীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিনে এই হাট বসিয়ে দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি মাত্র।”