লকডাউন উপেক্ষা করে সুন্দরবনের জঙ্গলে মধু ভাঙতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে মৃত্যু হল মৌলির

বিশ্লেষণ মজুমদার, ক্যানিং -চলছে লকডাউন।জীবন জীবিকার জন্য সেই লকডাউন উপেক্ষা করে গোপনে মধু ভাঙতে হাজির হয়েছিলেন সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে। হাজির হয়েছিল তিন মৌলি। উদ্দেশ্য ছিল মধু ভেঙে পরিবারের লোকেদের মুখে দুমুঠো অন্নের সংস্থান করা।আর সেই মধু ভাঙতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে মৃত্যু হল এক মৌলি। মৃতের নাম নবীন সরকার(৬০)।ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরবনের বাঘনা ফরেস্টের অন্তর্গত গর্জনতলার জঙ্গলে।সোমবার সকালে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার গোসাবা ব্লকের ছোট মোল্লাখালীর কালীদাসপুর ৯ নম্বর গ্রাম থেকে এদিন সকালে সুন্দরবন জঙ্গলে মধু ভাঙার জন্য রওনা দেয় নবীন সরকার,ছেলে দিলীপ সরকার এবং প্রতিবেশী ধ্রুব মণ্ডল।বনদফতরের কোন বৈধ অনুমতিও ছিল না। আর বিনা অনুমতিতে সুন্দরবন জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে ঘটলো অঘটন।বাঘের আক্রমণে প্রাণ হারালেন নবীন সরকার।

স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে করোনার তান্ডবে চলছে লকডাউন। সেই লকডাউনের জেরে সংসার চলছিল না নবীন সরকার সহ এলাকার অন্যান্য মৌলিদের।ফলে সংসার চালানোর তাগিদে মৃত্যু ভয় উপেক্ষা করে বনদফতরের নজর এড়িয়ে গোপনে সোমবার সকালে যায় সুন্দরবন জঙ্গলে।
এদিন বাঘনা ফরেস্টের অন্তর্গত গর্জনতলার জঙ্গলে সকাল যখন সকলে মধু ভাঙতে ব্যস্ত তখন সবার অলক্ষ্যে সুন্দরবনের গভীর জঙ্গল থেকে একটি বাঘ বেরিয়ে আসে।আচমকা ঝাঁপ দেয় নবীনের উপর।সঙ্গীকে বাঘে আক্রমণ করছে দেখতে পেয়ে অন্যান্যরা
সঙ্গীসাথীরা নবীনকে বাঁচানোর জন্য বাঘের সাথে তুমুল লড়াই করে। অবশেষে ক্ষুধার্ত বাঘ অসহায় হয়ে পড়ে রণে ভঙ্গ দেয়। শিকার ছেড়ে সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে পালিয়ে যায়।নবীন কে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে সঙ্গী সাথীরা নৌকা করে নিয়ে গ্রামে ফিরে আসে।বৈধ অনুমতি না থাকায় কাউকে কিছু না জানিয়ে গোপনে নবীনের শেষকৃত্য করেন পরিবারের লোকজন। এমন ঘটনায় শোকে ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা।
উল্লেখ্য জীবন জীবিকার জন্য লকডাউন উপেক্ষা গত ২০ এপ্রিল গোপনে সুন্দরবনের জঙ্গলে মধু ভাঙতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে নিখোঁজ হয়েছিলেন গোসাবা ব্লকের সুন্দরবন কোষ্টাল থানার লাহিড়ীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জেমসপুরের রথীন সরকার(৩৫)।