শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বাড়িতে বসে লকডাউন পালন করুন,খাদ্য সংকটে আমাকে ফোন করুন —পরেশ

News Sundarban.com :
এপ্রিল ১৮, ২০২০
news-image

 

সুভাষ চন্দ্র দাশ,ক্যানিং –

দীর্ঘ প্রায় একমাস হতে চললো লকডাউন। করোনা ভাইরাস প্রতিকারের একটিই মাত্র উপায় সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে লকডাউন মেনে চলা। দীর্ঘ প্রায় একমাস ধরে লকডাউন চলায় সাধারণ শ্রমজীবী মানুষজন থেকে,শ্রমিক,কৃষক,পরিবহন কর্মী সহ অন্যান্যরা পড়েছেন মহাবিপদে। লকডাউনের জন্য সমস্ত কিছুই বন্ধ রয়েছে। ফলে নিজেদের ভাঁড়ারে যা কিছু সঞ্চিত ছিল তা প্রায় একপ্রকার শেষাগত।ফলে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট!
এমন চরম মহামারীর মুহূর্তে খাদ্য সংকটের জেরে সাধারণ মানুষ যাতে গৃহবন্দি অবস্থা থেকে লকডাউন পালন করেন তারজন্য সোস্যাল মিডিয়ায় কাতর আবেদন জানালেন ক্যানিং ১ ব্লকের তৃণমূল যুবসভাপতি পরেশ রাম দাস।
পরেশ বাবু ক্যানিং ১ ব্লকের সাধারণের উদ্দেশ্যে জানিয়েছেন “আপনারা বিনা কারণে বাড়ির বাইরে বেরোবেন না।খাদ্য সংকট থেকে যে কোন প্রয়োজনে আমাকে ফোন করুন। সমস্ত রকম সাহায্য সহযোগিতা আপনার বাড়ির দরজায় পৌঁছে যাবে।প্রয়োজনে ৯৬০৯৮২১০২২/৯৫৬৪৫৫৬৩৮৩ নম্বরে ২৪ ঘন্টাই ফোন করে আপনার অসুবিধার কথা জানাতে পারেন। ”
স্যোসাল সাইটে এমন পোষ্ট ঘিরে সাধারণ মানুষজন ফোন করে সুবিধা অসুবিধার কথা জানিয়েছেন। উপকৃতও হচ্ছেন। ফলে একান্ত প্রয়োজন ছাড়াই বাইরে বের হচ্ছেন না কেউ।
বিগত ৮ এপ্রিল সাধারণ মানুষের ফোন পেয়েই ক্যানিং বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখেই এক হাজার দুঃস্থ পরিবারের হাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য সামগ্রী তুলে দিয়েছিলেন পরেশ রাম দাস। আবার গত ১৩ এপ্রিল ক্যানিংয়ের হেড়োভাঙ্গা বাজার সংলগ্ন এলাকায় হাজীর হয়ে অসহায় দুঃস্থ ১২০জন প্রতিবন্ধী সহ প্রায় চারশো দুঃস্থ পরিবারের হাতে শিশুখাদ্য সহ পর্যাপ্ত পরিমান খাদ্যসামগ্রী তুলে দিয়েছিলেন।
এদিকে সাধারণের ফোনে যেমন সাড়া দিচ্ছেন পরেশ রাম দাস,ঠিক তেমনই সাধারণ মানুষজন ও পরেশ রাম দাসের কথা রেখে বাড়িতেই আবদ্ধ রয়েছেন।এই দুইয়ের মেলবন্ধনে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে পালিত হচ্ছে লকডাউন।
হেড়োভাঙ্গার বাসিন্দা বাদুলি দেওয়াসী। তিনি কলকাতায় পরিচারিকার কাজ করতে কলকাতায় যেতেন। লকডাউন চলায় তিনি বাড়িতে বসে রয়েছেন। পড়েছেন অর্থ এবং খাদ্য সংকটে। পাড়ার এক যুবকের কাছ থেকে সোস্যাল মিডিয়ায় দেওয়া পরেশ রাম দাসের ফোনে যোগাযোগ করে সুরাহা পেয়েছেন।বদুকুল গ্রামের বাসিন্দা সেখ আনসার।তিনিও একই ভাবে ফোন করে অভাব অভিযোগ জানিয়েছিলেন সমস্যা মিটেছে।লকডাউনের জেরে বাড়িতে নিজেদের খাদ্য সামগ্রী নেই। তারপর বাড়ির দুবছরের শিশুটির কোন শিশু খাদ্য নেই।এমনই চরম সংকটে পড়েছিলেন মিনতী মন্ডল।তিনি পরেশ রাম দাস কে ফোন করতেই মিলেছে সমস্যা।
একদিক করোনা ভাইরাস আক্রমণ ঠেকাতে চলছে লকডাউন।সেই সংকটময় পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষের সাহায্যে পরেশ রাম দাসের যেভাবে এগিয়ে এসেছেন তার জন্য প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন দুঃস্থ সাধারণ মানুষজন।
ক্যানিং এক ব্লকের বাসিন্দা নিমাই মন্ডল,নিতাই সরদার,সাবীর সেখদের দাবী পরেশ রাম দাসের মতো দরদী মানুষ আমাদের পাশে ছিলেন বলে আমাদের মতো দুঃস্থ অসহায় মানুষ এই মহাসংকটেও বেঁচে রয়েছে।
যদিও সাধারণ মানুষজনদের কে এমন সহযোগিতা করা প্রসঙ্গে পরেশ রাম দাস কোন মন্তব্য করতে নারাজ। তবে তিনি জানিয়েছে নির্দিষ্ট সুচি অনুযায়ী রবিবার বিকালে ক্যানিংয়ের মাতলা ১ ও ২ পঞ্চায়েত এলাকার এক হাজার প্রতিবন্ধী মানুষকে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী পর্যাপ্ত পরিমান তাদের হাতে তুলে দেবেন।