শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

দুর্ঘটনাগ্রস্থ পথচারী কে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করালেন সমাজসেবী

News Sundarban.com :
এপ্রিল ১২, ২০২০
news-image

সুভাষ চন্দ্র দাশ,ক্যানিং -দুর্ঘটনায় রক্তাক্ত দুই মৃতপ্রায় বাইক আরোহী কে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে গেলেন জনৈক এক সমাজসেবী। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সকালে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ক্যানিংয়ের মাতলা ব্রীজের উপর।

স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে করোনার দাপটে ঘরের মধ্যে আবদ্ধ মানুষজন।তারপর ও চলছে লকডাউন। রাস্তাঘাট সুনসান। তারমধ্যেও একান্ত প্রয়োজনে কিছু কিছু যানবাহন চলাচল করছে।লকডাউনের জেরে বাড়ীর ভাঁড়ারে টান পড়ায় ব্যাঙ্কে টাকা তোলার জন্য বাসন্তী ব্লকের কাঁঠালবেড়িয়ার বাড়ী থেকে বাইক এ করে দুই যুবক রওনা দিয়েছিলেন ক্যানিংয়ের উদ্দেশ্যে।রীতিমতো দুজনেই হেলমেট পরে ধীরগতিতে বাইক চালিয়ে ক্যানিংয়ে যাচ্ছিলেন ইউসুব সরদার ও হাবিবুল্লা মন্ডল।ক্যানিংয়ের মাতলা ব্রীজ পার হওয়ার সময় একটি দ্রুতগতির মোটর চালিত ইঞ্জিনভ্যানও বাসন্তীর দিকে যাচ্ছিল।সেই মুহূর্তে দ্রত গতির মোটর চালিত ইঞ্জিনভ্যানটি সজোরে বাইক এ ধাক্কা মারলে গুরুতর জখম হয়ে চালক সহ বাইক আরোহী ছিটকে ব্রীজের উপর পড়ে যায়।রক্তাক্ত অবস্থা পড়ে থেকে সাহায্যের জন্য পথচারী ও অন্যান্য গাড়ি চালকদের কাছে কাতর আবেদন জানায় আহতরা।সুযোগ বুঝে ইঞ্জিন ভ্যান চালক তপন হালদার ইঞ্জিন ভ্যান নিয়ে পালিয়ে যায়।দীর্ঘ প্রায় ৪৫ মিনিট ব্রীজের উপর রক্তাক্ত অবস্থায় দুজন পড়ে থাকলেও সাহায্যের জন্য কেউই এগিয়ে আসেননি। সেই মুহূর্তে বাসন্তী ব্লকের আমঝাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ঢুঁড়ি এলাকার সংখ্যালঘু দুঃস্থ পরিবারদের ত্রাণ দেওয়ার জন্য নিজের গাড়ীতে করে ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী কার্তিক বোস ও তার ছেলে সুমিত বোস ও ভাইপো সৌভিক ওরফে বুম্মা বোস।ব্রীজের উপর দুজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে চালক কে গাড়ী থামাতে বলেন। গাড়ী থেকে সটান নেমে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থা জখম দুই বাইক আরোহী কে পাঁজাকোল করে নিজের গাড়ী তে তুলে নিয়ে চিকিৎসার জন্য সোজা ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে হাজীর হয়। সেখানে গিয়ে চিকিৎসকদের কে দ্রুত চিকিৎসার জন্য আবেদনও করে। চিকিৎসকরা গুরুত্ব বুঝে তড়িঘড়ি চিকিৎসা শুরু করেন।
কার্তিক বোস চিকিৎসা ব্যবস্থা করে আহতদের বাড়ীতে দুর্ঘটনার খবর পৌঁছেদেন। খবর পেয়ে আহত দুজনের পরিবার লোকজন ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে হাজীর হয়।আহতদের পরিবারের সদস্য মহিদুল সেখ কার্তিক বাবুর এমন কাজের জন্য কৃতঞ্জতা প্রকাশ করে বলেন “দুর্ঘটনাস্থল থেকে কার্তিক বাবু তড়িঘড়ি দুজন কে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে না গেলে হয়তো বিনা চিকিৎসায় মারা যেতো। কার্তিক বাবুর জন্য তড়িঘড়ি চিকিৎসা কেন্দ্রে পৌঁছাতে পেরে প্রাণে বেঁচে গেছে ইউসুব সরদার ও হাবিবুল্লা মন্ডল।কার্তিক বাবুর এমন কাজের কোন প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। ”
অন্যদিকে কার্তিক বোস জানিয়েছেন “ত্রাণ দিতে বাসন্তী যাওয়ার সময় মাতলা ব্রীজে দুর্ঘটনাগ্রস্থ দুই যুবক মৃতপ্রায় অবস্থায় পড়ে থেকে কাতর আবেদন জানাচ্ছিলেন অন্যান্য গাড়ীচালক ও পথচারীদের কে। কেউ সহযোগিতার হাত না বাড়িয়ে যে যার গন্তব্যে চলে যায়। চোখের সামনে দুই যুবককে এমন অসহায় রক্তাক্ত অবস্থা পড়ে থাকতে দেখে তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাই।সঠিক সময়েচিকিৎসা না পেলে হয়তো আরো বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারতো।”
যদিও দুর্ঘটনা জখম দুই যুবকের মধ্যে ইউসুব সরদারের অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক।