বুধবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মিডডে মিলের পরিবর্তে বিদ্যালয়ে পিঠেপুলি

News Sundarban.com :
জানুয়ারি ১৮, ২০২০
news-image

ক্যানিং : সারা বাংলা জুড়ে চলছে পৌষ এবং মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে পিঠেপুলি উৎসব।সেই উৎসবে মেতে উঠে মিডডে মিলের পরিবর্তে পিঠেপুলির আয়োজন করলেন প্রত্যন্ত সুন্দরবনের বাসন্তী ব্লকের চুনাখালী অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিমাই মালী।যেমন ভাবা তেমন কাজ। বৃহষ্পতিবার সকাল থেকে বিদ্যালয়ের রাঁধুনী সুষমা বৈষ্ণব, ইমরোজা পিয়াদা, সাইদা মোল্যা, সীমা মাইতি, কহিনুর মোল্যা, সারথী মালীরা পিঠের উপকরণ নিয়ে পিঠেপুলি তৈরীতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে৷পৌষের এই পিঠে খাওয়ার জন্য প্রয়োজন নলেন গুড়।তাই বিদ্যালয়ের কচিকাঁচাদর পিঠের সাথে কোন কিছু খামতি যাতে না থাকে,তার জন্য আগে ভাগেই জয়নগর থেকে আসল নলেন গুড় নিয়ে এসেছিলেন।এদিন দুপুরে বিদ্যালয়ে কম সংখ্যক ছাত্রছাত্রীর উপস্থিত হয়। আর এই কম ছাত্রছাত্রী উপস্থিত অথচ আয়োজন বিশাল।অগত্যা বিদ্যালয়ের শিশু সংসদের কর্মকর্তাদের কে দিয়ে আরো বেশকিছু ছাত্রছাত্রীদের কে ডেকে নিয়ে আসা হয়।বিদ্যালয়ের সর্বমোট ২০৩ ছাত্রছাত্রীর মধ্যে ১৮০ জন উপস্থিত হয়।
অন্যান্যদিনের মতো এই অবৈতনিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী আয়েষা সেখ,মুসলিমা মোল্ল্যা,মোস্তাকিন মোড়ল, রাজীব সরদাররা মিডডে মিল খাওয়ার জন্য হাতপা ধুয়ে টেবিলে বসে পড়ে।মিডডে মিলের ভাত তরকারীর পরিবর্তে পাতে পড়লো পাটিসাপটা,তেলেপিঠে,সরু চুকুলী,নারিকেল পিঠে সহ নাম না জানা আরো হরেক রকম পিঠে।পাশাপাশি নলেন গুড়।নলেন গুড়ের সুবাসে ছাত্রছাত্রী শিক্ষক শিক্ষিকা থেকে সকলে আনন্দে আত্মহারা।
বেশকিছু ছাত্রছাত্রী পিঠে খেয়ে বিদ্যালয়ের মাঠে খেলায় মেতে ওঠে এবং পিঠে খাওয়ার গল্প করতে থাকে। আর বিদ্যালয়ের এমন অভিনব পিঠেপুলি উৎসবের কথা লোকমুখে চাউর হতেই বেশবিছু অভিভাবক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে হাজীর হন।বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিমাই মালী অগত্যা অভিভাবকদের ডেকেও বিভিন্ন রকমারী পিঠেপুলি আর নলেন গুড় খেতেদেন।আর পৌষের শেষে বিদ্যালয়ে এমন রকমারী পিঠেপুলির আয়োজনে অভিভাবক মহল খুশি।
কেন এমন পিঠেপুলির আয়োজন? এ বিষয়ে চুনাখালি হাটখোলা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিমাই মালী বলেন “সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এই বাসন্তী ব্লক পিছিয়েপড়া। আর সেই কারণে পৌষ পার্বণে পিঠে পুলি উৎসব হয় ঠিকই। কিন্তু যাদের দিন আনা দিন খাওয়া। সেইসব মানুষগুলি পিঠে কি জিনিস তা জানেন না।আর সেই কারণে তাদের শিশুদের মুখে নানান ধরনের পিঠেপুলি তুলে দেওয়ার জন্য এই আয়োজন।“