বৃহস্পতিবার, ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিশুর কথায় প্রাণে বাঁচলো তিন  শিশু

News Sundarban.com :
ডিসেম্বর ২৪, ২০১৯
news-image

বছর ছয়েকের একরত্তি  কন্যা শিশুর কথায় প্রাণে বাঁচলো তিনজন কন্যা শিশু।ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ক্যানিং থানার ইটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের গোলাবাড়ীর উত্তর সন্দেশখালি গ্রামে।স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে বুলবুল ঝড়ে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয় উত্তর সন্দেশখালি গ্রামের ঘরামী পরিবারের। সেই সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে,খরা চাষে হাত লাগান তোয়েব ঘরামীর পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। যথারীতি মাঠে হাল চষে খরা চাষের জন্য ধানের বীজতলা ফেলেছিলেন। গ্রামের হাঁস,মুরগী,গোরু ও ছাগলের হাত থেকে বীজতলা বাঁচানোর জন্য জাল দিয়ে ঘিরেও রেখেছিলেন।ধানের বীজতলা একটু বড় হতেই শুরু হয় ইঁদুরের উপদ্রব। অগত্যা ইঁদুরের হাত থেকে বীজতলা রক্ষা করার জন্য কোন উপায় না পেয়ে,বাড়ীর অদূরে বীজতলার চারিদিকে আলুর চপে ইঁদুর মারার বিষ মিশিয়ে বীজতলার চারপাশে দিয়ে আসেন তোয়েব ঘরামীর এক ভাই।সেই সময় বাড়ীর অদূরে ধানের বীজতলার কাছে খেলা করছিল তোয়েবের  ৬ ও ৪ বছরের দুই কন্যাশিশু সেরিনা ঘরামী, তসলিমা ঘরামী ও তার ভাইয়ের এক ৫ বছরের কন্যাশিশু তুহিনা ঘরামী।খেলা করার সময় ছোট্ট বোন বীজতলায় দেওয়া বিষ মাখানো আলুর চপ খেয়ে ফেলে।বিষ মেশানো চপ খেয়ে যথারীতি  তিনবোন বাড়ীতে ফিরে আসে। বেশ কিছুক্ষণ পর তসলিমা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। এবং পরক্ষণেই সেরিনা ,তুহিনা ও অসুস্থ হয়ে পড়ে। এক সাথে তিন শিশু আচমকা গুরুতর  অসুস্থ হয়ে পড়লে,পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়ে।গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় বছর ছয়েকের সেরিনা তার বাবা-মা কে জানায় ‘তারা তিন বোন মিলে বীজতলা থেকে আলুর চপ তুলে খেয়েছে’।পরিবারের সদস্যরা তৎক্ষণাৎ বুঝতে পারের বিষ মেশানো চপ বীজতলায় দেওয়া হয়েছিল ইঁদুর মারা জন্য। আর সেই চপ খেয়েই অসুস্থ হয়ে পড়েছে তিন বোন।মুহূর্তে ঘরামী পরিবারে সদস্যরা তিন শিশু কন্যা কে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে তিনজনের অবস্থা আশাঙ্কা জনক হলে রাতেই ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায় তিনজন কে।ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল সুত্রে জানাগেছে তিনজনই এখন পুরোপুরি বিপদ মুক্ত তবে তাদের চিকিৎসা চলছে।

তোয়েব ঘরামী বলে “বড় মেয়ে সেরিনা বিষ মাখানো চপ খাওয়ার কথা না জানালে বিপদের শেষ থাকতো না। কপাল ভালো সেরিনার জন্য আজ ওরা তিন বোন প্রাণে বাঁচলো”।প্রবাদে আছে ‘রাখে হরি,মারে কে?’ এমন প্রবাদ যে বাস্তবে বাক্য মিলে যেতে পারে।এমন কথাটি কেউ ঘুণাক্ষরে ভাবতে পারেন নি।মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যাওয়া তিন শিশু কন্যার পরিবারের লোকজন সহ প্রতিবেশীরাও হতবাক এমন কান্ডে।

তবে ইঁদুর মারা কিংবা অন্য কোন কাজে এমন ভাবে আর বিষ প্রয়োগ করতে রাজী নয় ঘরামী পরিবারের সদস্যরা।