শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সুন্দরবনের জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে মৃত এক মৎস্যজীবী,নিখোঁজ এক

News Sundarban.com :
অক্টোবর ১৮, ২০১৯
news-image

বিশ্লেষণ মজুমদার

কাঁকড়া ধরতে গিয়ে আবার বাঘের আক্রমণে মৃত্যু হল এক মৎস্যজীবীর। নিখোঁজ তার এক সঙ্গীও।  মৃত ওই মৎস্যজীবীর নাম শম্ভু মন্ডল(৫২)।  নিখোঁজ মৎস্যজীবীর নাম রাধাকান্ত আউলিয়ার (৪৫)।ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার বিকালে প্রত্যন্ত সুন্দরবনের পঞ্চমুখানি দুই নম্বর জঙ্গলে।সুন্দরবনের গোসাবা ব্লকের লাহিড়ীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে মঙ্গলবার ওই দুজন মৎস্যজীবী নৌকায় চেপে রওনা দিয়েছিল সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে। বৃহস্পতিবারই দু’জন কাঁকড়া ধরার সময় আচমকাই জঙ্গল থেকে বাঘ ঝাঁপিয়ে পড়ে শম্ভু  মন্ডলের উপর,নিজের চোখের সামনে সঙ্গীকে বাঘ ধরতে দেখে তাকে বাঁচাতে যায় রাধাকান্ত আউলিয়া আর সেই মুহূর্তে আচমকা বাঘটি শম্ভুকে ছেড়ে দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে রাধাকান্তর ওপর। এদিকে বৃহস্পতিবার বিকালের দিকে ওই এলাকা দিয়ে নৌকায় চেপে যাওয়ার সময় অন্যান্য মৎস্যজীবীদের নজরে পড়ে নদীর পাড়ে বাঁধা নৌকাটি। ধীবরদের সন্দেহ হওয়ায় তারা সেখানে গিয়ে দেখতে পায় যে কাদামাটি মাখা অবস্থায় শম্ভুর মৃতদেহটি  দেখতে পায় । খোঁজ পাওয়া যায়নি অপর মৎস্যজীবী রাধাকান্তর । এরপর তারাই খবর দেন় বন দপ্তরের বসিরহাট রেঞ্জের অফিসে। খবর যায় স্থানীয় সুন্দরবন উপকূল থানায়ও। এরপর পুলিশ ও বনকর্মীরা দ্রুত জলপথে পৌঁছে যায় ঘটনাস্থলে এবং সেখান থেকে মৃত ওই ধীবরের রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসে। গোসাবার বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর বলেন,’লাহিড়ীপুরের দু’জন ধীবর কাঁকড়া ধরতে গেলে বাঘের হামলার মুখে পড়ে একজনের দেহ পাওয়া গেলেও বাকি একজনের দেহের  খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি ‘এবিষয়ে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা নীলাঞ্জন মল্লিক বলেন,’একজন ধীবরের দেহ পাওয়া গিয়েছে । অন্য জনের জন্য খোঁজ চালানো হচ্ছে। ”

গভীর জঙ্গলে বারবার বাঘের আক্রমণে মৎস্যজীবীদের মৃত্যুর ঘটনায় সুন্দরবন মৎস্যজীবী রক্ষা কমিটির ক্যানিং মহকুমার সভাপতি শম্ভু সাহা বলেন “জীবন জীবীকার তাগিদে দরিদ্র মৎস্যজীবীরা জঙ্গলে মাছ কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে মারা যাচ্ছেন এবং কেউ কেউ আবার চিরতরে নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছেন। সরকার যদি এই সমস্ত মৎস্যজীবীদের চিহ্নিত করে বিকল্প ব্যবস্থা করেন কিংবা জঙ্গলে মাছ কাঁকড়া ধরার সময় মৎস্যজীবীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা যায় তাহলে বাঘের আক্রমণে এমন মৃত্যুর ঘটনা অনেকাংশ কমবে। ”