ডিএ কোনও দয়ার দান নয়

মহার্ঘভাতার অধিকার আইনি অধিকার। রোপা আইন অনুযায়ী একজন কর্মচারী ডিএ পেয়ে থাকেন। এটা কোনও সরকারের দয়া নয়। ডিএ মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে খারিজ হয়ে গেল স্যাটের রায় ৷ শুক্রবার বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত এবং বিচারপতি শেখর ববি শরাফের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিল মহার্ঘভাতা সরকারি কর্মীদের আইনি অধিকার, দয়ার দান নয় ৷ মামলা ফেরানো হল স্টেট অ্যাডিমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালে ৷
বকেয়া ডিএ নিয়ে ২০১৬-র ২১ নভেম্বর স্যাটে মামলা করেন সরকারি কর্মীরা। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল রায় দেয়, মহার্ঘ ভাতা দয়ার দান। ডিএ দেওয়া বা না দেওয়া সম্পূর্ণটাই নির্ভর করে সরকারের উপর। সেই রায় নিয়ে বিতর্ক মাথাচাড়া দেয়। আদালতের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে গত বছর মার্চে হাইকোর্টে মামলা করে একাধিক কর্মী সংগঠন।
গত ১৬ মাস ধরে আইনি যুক্তি, পাল্টা যুক্তির লড়াই শেষে এদিন সরকারি কর্মীদের মহার্ঘভাতা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ রায় শোনাল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ সরকারি কর্মীদের মহার্ঘভাতা আইনসিদ্ধ অধিকার এই দাবিতে সিলমোহর দিল আদালত ৷ ২০১৭ সালে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল (স্যাট)-এ মহার্ঘভাতা নিয়ে মামলার শুনানির সময় রাজ্য সরকার জানিয়েছিল ডিএ সরকারি কর্মীদের অধিকার নয়। মহার্ঘ ভাতা দেওয়া না দেওয়া সরকারের ইচ্ছের অধীন ৷ সরকারের এই দাবিতে সিলমোহর দিয়েছিল স্যাটও ৷ এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন ৷ সেই মামলাতেই এল এই রায় ৷
নতুন করে রায় পর্যলোচনা করার জন্য দুটি বিষয় স্যাটের কাছে ফেরত পাঠিয়েছে হাইকোর্ট ৷ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারি কমর্চারীরা সমান হারে ডিএ পাবেন কিনা? দিল্লি ও চেন্নাইয়ে কর্মরত রাজ্যের কিছু সরকারি কর্মচারী, এ রাজ্যে কর্মরত সরকারি কর্মচারীদের থেকে বেশি হারে মহার্ঘ ভাতা পান ৷ ফলে একই পদে কাজ করা সত্ত্বেও তৈরি হচ্ছে বেতন বৈষম্য ৷ এক্ষেত্রে প্রশ্ন তাদের সমানহারে ডিএ কি পাবেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা?
দুই মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে স্যাটকে ৷
এক বছর ধরে হাইকোর্টে বিচারাধীন ছিল রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ মামলা ৷ এর মাঝেই মামলা চলাকালীন নতুন হারে ডিএ ঘোষণা করে রাজ্য সরকার ৷ তবে সেই ডিএ লাগু হবে ২০১৯ জানুয়ারি থেকে ৷ এখন রাজ্য সরকারি কর্মীরা ১০০ শতাংশ ডিএ পান আর কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা পান ১৪৭ শতাংশ। এখনও ফারাক ৪৭ শতাংশ।