শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জালিয়াতি ও রেকর্ড হয়রানিতে জেরবার প্রত্যন্ত সুন্দরবনের বাসন্তী ব্লকের মানুষজন

News Sundarban.com :
আগস্ট ৫, ২০১৮
news-image

জালিয়াতি ও জমির রেকর্ড করা নিয়ে হয়রানীতে জেরবারে অতিষ্ট দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার প্রত্যন্ত সুন্দরবনের বাসন্তী এলাকার বাসিন্দারা। সাধারণ মানুষের জমি-জমা রক্ষা করতে চরম হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে।অভিযোগ শতবার চেষ্টা করে ও হচ্ছে না জমির রেকর্ড,নামপত্তন,তবে হচ্ছে কেবল মাত্র দালালরাজের জালিয়াতি। এইসব দালাল চক্রের জন্য সাধারণ নিরুপায় বড়ই অসহায়। দলিল আছে অথচ রেকর্ড হচ্ছে না,আবার একজনের রেকর্ড অন্যজনের নামে হয়ে যাচ্ছে।অভিযোগ প্রতিবাদ করলে নানান কাগজপত্র চেয়ে হেনস্থা চলে। এত সব স্বচক্ষে দেখেও বাসন্তীর BLRO নির্বিকার।চলছে সাধারণ মানুষের হয়রানীর লীলাখেলা।
বহুদিন পর রাজ্য সরকার নতুন নতুন আইন এনেছে।কৃষি জমিতে শতকে ১টাকা,বর্তমানে নতুন আইনে তা বেড়ে হয়েছে ৪০টাকা এবং ঐকর পিছু ৪০০০ টাকা। অকৃষি,অবাণিজ্যিক অর্থাৎ বাস্তু বাগানের শতকপিছু ১০টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০০টাকা হয়েছে। বাণিজ্যিক বা শিল্পের জন্য শতকে ২০টাকার পরিবর্তে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০০টাকা(দশ শতক পর্যন্ত)।
এমন রাজস্ব্য ফি বাড়ানোর জন্য সাধারণ অসহায় মানুষ যেমন সংকটে পড়েছে আবা অন্যদিকে রাজ্য সরকার খাজনা মুকুব করে। এই গগনচুম্বী DCR(Duplicate Carbon Receipt Book) বাড়িয়েছে ,যার ফলে রেকর্ড বা নামপত্তন কিংবা জমির চরিত্র বদল করতে গেলে সমস্ত খাজনা ও DCR কাটতে হয়। এছাড়াও ব্যাঙ্ক চালানে টাকা জমা  করে আবেদন পত্র দিতে হয় BL&RO অফিসে। এরপর শুরু হয় ভুতুড়ে খেলা যা চলে দীর্ঘকাল।সেটা করে BL&RO এবং মুহূরীরা। আবার এরা দেয় পার্টী এবং বোথ পার্টী কে রেকর্ড এবং অন্যান্য কাজ ও নামপত্তনের নোটিশ।এরপর নির্দিষ্ট তারিখে হেয়ারিং হয়। যে পার্টীর মুহূরী এবং BL&RO কে ধরবে তার কাজ ততই গুরুত্ব সহকারে তাড়াতাড়ি হবে।কারণ এতে করে মুহূরী ও অফিসারদের বাড়তি উপরি আয়।আবার যেসব ব্যাক্তি এমন  ভাবে কাজ না করবেন তাদের কপালে ভোগান্তীর কোন শেষ থাকবে না। ঠিক এমনই ভাবে সাধারণ মানুষ কে হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে দিনের পর দিন।
এমনই হয়রানীর শিকার হয়েছেন বাসন্তী ব্লকের ভরতগড় গ্রামপঞ্চায়েতের সরদার পরিবারের সদস্যরা।
পিতার নামের সম্পত্তি ওয়ারিশগণদের মধ্যে নামপত্তনের জন্য আপত্তিকারী হিসাবে পরিবারকে গত ৮ জুলাই  একটি নোটিশ দেন BL&RO মুহূরীর মাধ্যমে “১১ জুলাই BL& RO অফিসে হাজীর হওয়ার জন্য”। আশ্চর্য্যের বিষয় এমন বিষয় সরদার পরিবারের নুরুল ইসলাম সরদার কোন অাপত্তি জানাননি BL&RO কে।উল্লেখ্য নোটিশে আরও কোন স্বাক্ষর নেই এবং নুরুল ইসলাম সরদারের সই নকল করে নোটিশ পাঠিয়েছে। অভিযোগ এই সই নকলের ব্যাপার নুরুল ইসলাম সরদার BL& RO এবং মুহূরী কে জিঞ্জাসা করলে একে অপরের নামে দোষারপ করে।


এখানেও জালিয়াতির শেষ নয়। মৃত ব্যাক্তির ডেথ সার্টিফিকেটও গ্রামপঞ্চায়েত প্রধানের সই নকল। আর এতসব মিথ্যার উপর নির্ভর করে বাসন্তী BL&RO চলছে সমস্ত কাজকর্ম। এমন সব ভুতুড়ে কান্ডকারখানা দেখে নুরুল ইসলাম সরদার BL&RO, মুহূরী এবং নকল ডেথ সার্টিফিকেটের বিরুদ্ধে বাসন্তী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ২২জুলাই।
উল্লেখ্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী মানুষের দুর্দশার কথা ভেবে একটি নির্দিষ্ট সময়ে মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশিকা জারী করেছিলেন। কিন্তু কে শোনে কার কথা। ফলে জালিয়াতি কারবারের রমরমা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
এ বিষয়ে বাসন্তী ব্লকের BL&RO শঙ্কর পাঁজা কে জিঞ্জাসা করা হলে তিনি বলেন ”এমন ধরনের  কোন বিষয় তার জানা নেই তবে অভিযোগ পেলেই খতিয়ে দেখবো। ”