বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বেহাল রাস্তা,চরম দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ থেকে স্কুল ছাত্র ছাত্রীরা,সংস্কারের দাবীতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্কুলে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ

News Sundarban.com :
জুলাই ২৯, ২০১৮
news-image

দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার ক্যানিং ১নং ব্লকের  গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের যামিনী মোড় থেকে ঢোষা পর্যন্ত প্রায় আট কিমি যাতায়াতের রাস্তার বেহাল দশা।
সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটু সমান কাদা-জল মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হয় স্কুল ছাত্র-ছাত্রী,শিক্ষক- শিক্ষিকা,নিত্য অফিস যাত্রী থেকে শুরু করে এলাকার সাধারণ মানুষজনদের কে। এমন কি ঐ কাদা জলের জন্য ব্যাগের মধ্যে অতিরিক্ত পোশাক রাখতে হয়,পাছে রাস্তার কাদা জলে পড়ে গিয়ে জামা কাপড় নোংরা হয়। সামান্য বর্ষায় ঐ রাস্তাটি সুন্দরবনের নদীর আকার ধারণ করেছে।
স্থানীয় মানুষের দাবী এই রাস্তা সংস্কারের জন্য একাধিকবার  বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করা হলেও টনক নড়েনি। এছাড়াও সরকারী উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নজরেও একাধিক বার আনা হলে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।  তারপর গ্রামপঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে নিজেদের পকেটে ভোট টানার জন্য সাময়িক ভাবে লোক দেখানোর জন্য নির্বাচনের পর রাস্তা সারাই হবে বলে জানিয়েছিলেন পার্টী নেতারা। নির্বাচনের বৈতরনী পার হয়ে গেলে ও রাস্তার কোন হাল ফেরেনি বরং রাস্তার অবস্থা আরো শোচনীয় হয়েছে। ফলে এলাকার স্কুল ছাত্র ছাত্রীরা স্কুলে তালা ঝুলিয়ে স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের দাবী স্কুলে যেতে গেলে প্রতিদিনই জামাকাপড় কাদা হয়ে যায়, বইপত্র ব্যাগ পড়ে গিয়ে নোংরা হয়ে যায় এবং সব সময় ঐ কাদা জল মাড়িয়ে স্কুলে যাওয়া সম্ভব হয় না ফলে যত দিন না তাদের যাতায়াতের রাস্তা সংস্কার হচ্ছে ততদিন অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্কুলে যাওয়া বন্ধ থাকবে। এমন কি রাস্তা এতটাই জঘন্য যে রাস্তা দিয়ে কোন যান চলাচল করতে পারে না।
এই রাস্তা দিয়ে এলাকার দুটি হাইস্কুল,প্রাইমারী স্কুল,অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্র,বাজার সহ বিভিন্ন অফিস থাকায় ছাত্র ছাত্রী,শিক্ষক শিক্ষিকা,অফিস যাত্রী সহ সাধারন মানুষজন যাতায়াত করে ভাঙাচোরা খানাখন্দে ভরপুর রাস্তা দিয়ে।এই রাস্তা দিয়ে সহজে কম সময়ে বারুইপুর জয়নগর  যাওয়া যায়। রাস্তা খারাপ হওয়ায় প্রায় ত্রিশ কিমি পথ ঘুরে যেতে হয় ঢেষা,জয়নগর ,বারুইপুর। আবার চরম বিপাকে পড়তে হয় সাধারন মানুষজন থেকে রোগীদের কে। এমন কি এই রাস্তাদিয়ে গর্ভবতী মায়েদের কে চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া এক প্রকার মৃত্যু মুখে ফেলে দেওয়া।
এলাকার মানুষের আরো দাবী রাস্তা আগের থেকে বর্তমানে আরো ভয়ংকর খারাপ হয়েছে। আমতলা মোতিরাম হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মনোজ বিশ্বাস বলেন “যাতায়াতের রাস্তা অত্যন্ত খারাপ হওয়ায় স্কুলের ১৫০০ ছাত্র ছাত্রীরা স্কুলে আসার সময় প্রায়ই রাস্তায় পড়ে গিয়ে স্কুল পোশাক,বই পত্র নোংরা হয়ে যায়,ফলে যতদিন না রাস্তা সংস্কার হবে ততদিন পর্যন্ত তারা স্কুলে অাসবেনা বলেই স্কুলে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।আমরা শিক্ষকরা ও অনেক সময় রাস্তা পড়ে গিয়ে পোশাক নোংরা হয়ে যাওয়া স্কুলে যেতে সমস্যা হয়।“
স্থানীয় বাসিন্দা হাসান মোল্ল্যা বলেন “যামিনী মোড় থেকে ঢোষা পর্যন্ত ৮ কিমি রাস্তা জঘন্য । পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এলাকার বিধায়ক,জেলাপরিষদ সদস্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নির্বাচনের পর রাস্তা সংস্কার হবে। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতিই সার।”
অবিলম্বে রাস্তা সারাই না হলে আরো বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসী সহ স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা।
এই রাস্তার বিষয়ে সদ্য জেলাপরিষদে নির্বাচিত সদস্য তপন সাহা বলেন “রাস্তা টি সত্যিই খুব খারাপ । জেলাপরিষদ গঠন হয়ে গেলে রাস্তাটির কথা জেলা পরিষদে উত্থাপন করে যাতে শীঘ্রই রাস্তাটি সংস্কার হয় তার জন্য বিষয় টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের গোচরে আনবো।”