শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ক্যানিংয়ের বদুকলার ভাঙা কাঠের ব্রীজে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত

News Sundarban.com :
জুলাই ২৯, ২০১৮
news-image

দীর্ঘ কয়েক যুগের আঁধারের এক অধ্যায় ঘুঁচে গেলেও বর্তমানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার করতে হয় এলাকার অসহায় সাধারণ গ্রামবাসী সহ অন্যান্যদের। দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার ক্যানিং মহকুমার গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বদুকুলা গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে মধ্যযুগের দাপুটে ভয়াল ভয়ংকর নদী পিয়ালী। বর্তমানে নদীবাঁধ বেঁধে ফেলায় পিয়ালী হারিয়েছে তার দাপটের ঐতিহ্য। এই পিয়ালী নদীর উপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খেয়াপারাপার হয়ে খুব কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতেন   গোপালপুর,মেরীগঞ্জ, কুলতলি,জয়নগর,বারুইপুর সহঅন্যান্য  এলাকার সাধারণ মানুষজন। তখনই খেয়া নৌকা চলতো হাতে টানা দড়ি দিয়ে।নৌকায় উঠতে হতো বাঁশের তৈরী মাচা বেয়ে। যে কোন মুহূর্তে পা পিছলে নদী বক্ষে পড়ে গেলেই মৃত্যু নিশ্চিত। এমনকি অসংখ্য দুর্ঘটনায় দুই ব্যাক্তির মৃত্যুও হয়েছে বিগত দিনে।গ্রামবাসীরা মিলিত ভাবে ২০১১ সালের আগের সরকারের বিভিন্ন দফতরে একাধিকবার বিষয় জানালেও লাভের কিছুই হয়নি।  অবশেষে বদুকুলা গ্রামের বাসিন্দার নিজেরাই চাঁদা দিয়ে পিয়ালী নদীর উপর একটি কাঠের সেতু তৈরী করেন।২০১২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে। তৎকালীন সময়ে কাঠের সেতুটি তৈরী করতে খরচ হয় পাঁচ লক্ষ টাকা। প্রশাসনের নির্ভরতা ছেড়ে এভাবেই নিজেদের সমস্যা সুরাহা করে কাঠের ব্রীজ দিয়ে চলাচল শুরু করেন ২০১২ সালের এপ্রিল মাসের শেষ দিকে।
ভবিষ্যতে বদুকুলার কাঠের ব্রীজটি রক্ষণা-বেক্ষণ করার জন্য সাধারণ যাত্রীদের থেকে একটাকা করে নেওয়া হতো বলে জানা গেছে।এই একটাকা করে নিয়ে বেশ কয়েকবার ব্রীজটি সংস্কারও করা হয়েছে বলে জানাগেছে।
২০১৬ সালের শেষ দিকে এই খেয়াপারাপারের জন্য একটাকা না নিয়ে ফ্রীতে যাতে সাধারণ মানুষ যাতায়াত করতে পারে তার জন্য শুরু হয় গন্ডগোল।গন্ডগোলের পর থেকে ব্রীজেের  বীজ্রের রক্ষণা-বেক্ষণ কিংবা কোনরুপ সংস্কার না হওয়ায় বীজ্রটি ধ্বংসের মুখে।
২০১৩ সাল থেকে প্রশাসনিক স্তরের সমস্ত আধিকারিকদের নজরে বিষয়টি আনলে ও কোন ফল মেলেনি। এই ব্রীজদিয়ে বর্তমানে এলাকার কয়েকটি হাইস্কুল,মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রী,আইসিডিএস,সহ সাধারণ যাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করেন। এছাড়াও সন্ধ্যার পর কোন খেয়াঘাটে কোন আলো না থাকায় বিপদ আরো গুরুতর হয়ে ওঠে। স্থানীয় গ্রামবাসী ইছাহার মন্ডল,আক্রাম হালদাররা জানান সবারই তো অসুবিধা হয়,এছাড়াও প্রসূতি মায়েদের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য অতিরিক্ত ১৫ কিমি রাস্তা ঘুরে যেতে হয় এই ভাঙা কাঠের ব্রীজদিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না।
এবিষয়ে ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক শ্যামল মন্ডল কে জিঞ্জাসা করা হলে তিনি বলেন “এবিষয়ে আমাকে কেউ অবগত করেনি। তবে বিষয় তিনি বলেন আপাতত সাধারণ মানুষ যাতে ভালো ভাবে চলাচল করতে পারে তার জন্য একটি কাঠের ব্রীজ তৈরী করে দেওয়া হবে এবং পরবর্তী কালে সুন্দরবন উন্নয়ণ পর্ষদের অধীনে একটি কংক্রীটের ব্রীজ যাতে তৈরী করা যায় তার জন্য সুপারিশ করা হবে।