শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বাঘের সাথে লড়াই করে প্রাণে বাঁচলো জখম মৎস্যজীবী

News Sundarban.com :
জুলাই ১, ২০১৮
news-image

-প্রত্যন্ত সুন্দরবনের জঙ্গলের নদীখাড়িতে মাছ-কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমনে জখম হলেন এক মৎস্যজীবি।জখম মৎস্যজীবির নাম ভবতোষ বারুই।এর আগে ও দুবার বাঘের সাথে লড়াই করে প্রাণে বেঁচে ছিলেন ছোট মোল্ল্যাখালির ভবতোষ বারুই।ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার সুন্দরবনের কোষ্টাল থানার ছোট মোল্ল্যাখালির বাগনা ফরেষ্টের ঝিলা নদীতে।
গত বৃহষ্পতিবার সুন্দরবন কোষ্টাল থানার ছোট মোল্ল্যাখালির বাসিন্দা ভবতোষ বারুই,ঝন্টু বারুই,অরবিন্দু মন্ডল,প্রতীশ মাঝি,হরিপদ মাঝিরা সুন্দরবনের নদী-খাড়িতে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। শুক্রবার পর্যন্ত নদীখাড়িতে তেমন মাছ না পাওয়ায় শনিবার ভোরে সুন্দরবনের বাগনা ফরেষ্টের ঝিলা নদীর খাড়ীতে মাছ ধরতে জঙ্গল লাগোয়া তাদের জেলে নৌকা ভিড়িয়ে মাছ-কাঁকড়া ধরতে থাকেন।দুদিন পর মাছ পাওয়ায় অাপন মনে সকলে নদীর স্রোতের দিকে তাকিয়ে ছিলেন,এমন সময় শনিবার ভোর নাগাদ আচমকা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার ভবতোষ বারুইয়ের বুকে থাবা বসিয়ে জঙ্গলে টেনে নিয়ে গেলে ভবতোষ বাবুর সঙ্গী সাথীরা প্রাণভয়ে পালিয়ে গিয়ে একটি গাছে উঠে পড়ে।এরপর দীর্ঘক্ষণ বাঘের সাথে চলে যমে-মানুষের লড়াই।মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী ভেবেই ভবতোষ বারুই বাঘের সাথে লড়াই করতে থাকেন।বাঘও শিকার ছাড়তে নারাজ।পরে ভবতোষ বারুই নিজের ডান হাত বাঘের মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে দিলে বাঘও কিছুক্ষণ পর যন্ত্রণায় কাৎরাতে থাকে এবং ঐ মৎস্যজীবির  হাতে,মাথায়,বুকে,পিঠে একের পর এক থাবা বসাতে থাকে বাঘ।মিনিট কুড়ি এমন রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের পর পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে রণে ভঙ্গদেয় সুন্দরবনের হিংস্র দক্ষিণরায়।রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় জঙ্গল থেকে ভবতোষ বারুই কে নৌকার কাছাকাছি আসতে দেখে সঙ্গীসাথীরা গাছ থেকে নেমে ঐ মৎস্যজীবিকে উদ্ধার করে মুহুর্তে চিকিৎসার জন্য তাকে নৌকায় করে নিয়ে যান ছোটমোল্ল্যাখালি গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে বেশকিছুক্ষণ চিকিৎসা চলার পর ভবতোষ বাবুর অবস্থা আশাঙ্কা জনক হওয়ায় শনিবার রাতেই তাকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
ভবতোষ বারুই বলেন “সুন্দরবনের নদীখাড়িতে এর আগেও দুবার বাঘের আক্রমনে পড়েছিলাম,মৃত্যু নিশ্চিত জেনে সেই সাহস ও মনোবল নিয়ে বাঘের সাথে নিজের প্রাণ বাঁচানোর জন্য লড়াই করি।বেগতিক বুঝে বাঘ ভয়ে জঙ্গলে পালিয়ে গেলে তারপর কোনক্রমে সঙ্গীদের কাছে পৌঁছালে তারা চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যায় তারপর আর কিছুই মনে নেই”।