শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বিস্ময়কর ব্যাপার, শরীরে আর ক্যান্সারের কোনো লক্ষণই নেই!

News Sundarban.com :
জুন ৭, ২০১৮
news-image

স্তন-ক্যান্সারের একেবারে শেষ-ধাপ অর্থাৎ চতুর্থ স্টেজে ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জুডি পার্কিনসন। চিকিৎসকরা বলেছিলেন, তার আয়ু হতে পারে বড় জোড় আর তিন মাস। অথচ এরপরও দুই বছর ধরে জুডি বেঁচে আছেন। এর চেয়েও বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, তার শরীরে আর ক্যান্সারের কোনো লক্ষণই নেই।

মার্কিন গবেষকেরা বলছেন, নতুন ধরনের এক থেরাপি আবিষ্কার হয়েছে। যেটির সহায়তায় জুডি বিস্ময়করভাবে বেঁচে আছেন। নতুন এই থেরাপি পদ্ধতিতে তার শরীরে ৯০ বিলিয়ন ক্যান্সার নির্মূলকারী রোগ প্রতিরোধক সেল পাম্প করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউট বলছে, থেরাপিটি এখনো পরীক্ষণ পর্যায়ে রয়েছে। তবে এটিকে সব ধরণের ক্যান্সার চিকিৎসায়ই কাজে লাগানো সম্ভব।

ক্যান্সারকে পরাস্ত করা সেই জুডি বসবাস করেন ফ্লোরিডায়। তাকে চিকিৎসকরা বলেছিল, শরীরের অন্যান্য জায়গায়ও ছড়িয়ে পড়েছে ক্যান্সার। তাই প্রচলিত পদ্ধতিতে থেরাপি দিয়ে তার সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম। তাছাড়া জুডির লিভারে টেনিস বল আকারের একটি টিউমার ছিল।

জুডি জানান, থেরাপি নিতে শুরু করার সপ্তাহখানেক পর তিনি খেয়াল করেন, তার টিউমারটি আকার ছোটো হয়ে এসেছে। এরপর আরো এক-দুই সপ্তাহ থেরাপি নেওয়ার পর টিউমারটি একেবারে মিলিয়ে যায়।

এই থেরাপির পর যখন জুডির শরীর প্রথমবারের মতো পরীক্ষা করা হলো, সেটির প্রতিবেদন পেয়ে হাসপাতালের সব স্টাফরা আনন্দে চিৎকার করছিলো। জুডি এখন সুস্থ্য শরীরে নৌকো চালিয়ে জলপথে নানান জায়গায় ঘুরে বেড়ান।

লিভিং থেরাপি: এই থেরাপির ক্ষেত্রে রোগীর শরীর থেকেই সেল নিয়ে ‘লিভিং ড্রাগ’ প্রস্তুত করে সেন্টার অব ক্যান্সার রিসার্চ। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউটের প্রধান ড. স্টিভেন রোজেনবার্গ বলেন, নতুন এই থেরাপি পদ্ধতিটি পার্সোনালাইজড একটি চিকিৎসা। এটির কথা এতোদিন মানুষ কল্পনা করতো।

এই ইমিউন-থেরাপিতে মূলত রোগীর জেনেটিক এবনরমালিটিজ বা জিনের অস্বাভাবিকতাকে খুঁজে বের করা হয়। এর ওপর ভিত্তি করে হয় পরবর্তী থেরাপির ব্যাবস্থা। জুডির ক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছে। তবে এই থেরাপি এখনো পরীক্ষণ পর্যায়ে রয়েছে। বহুল ব্যবহারের জন্য বাজারে ছাড়ার আগে এটিকে আরো বেশকিছু নিরীক্ষার ভেতর দিয়ে যেতে হবে।

এরই মধ্যে থেরাপিটিকে ক্যান্সার চিকিৎসায় একটি বিরাট বাঁক-বদল হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ড. রোজেনবার্গ বলছিলেন, ক্যান্সার চিকিৎসায় এই অভিনব থেরাপি পদ্ধতি একদমই নতুন। তাই এখনো তারা গবেষণা করে বিষয়টি আরো ভালোভাবে জানার চেষ্টা করছেন।

এই অভিনব চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে ব্রেস্ট ক্যান্সার নাউয়ের গবেষণা পরিচালক ড. সাইমন ভিনসেন্ট বলেন, নতুন এই গবেষণার ফলকে তিনি খুবই উল্লেখযোগ্য বলে মনে করছেন।