বিশ্বভারতীর এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে একইমঞ্চে মমতা-মোদী-হাসিনা
বিশ্বভারতীর এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত তৈরি হতে চলেছে। একইমঞ্চে এদিন থাকছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।শান্তিনিকেতনের মঞ্চ থেকেই ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও মজবুত করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বারদ্ঘাটনের মঞ্চে এসেই আবেগবিহ্বল হয়ে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তিনি বলেন, আমায় আমন্ত্রণ করায় গর্বিত ৷ ভারত ও বাংলাদেশ চিরকাল পাশাপাশি থাকবে ৷ আজ বঙ্গবন্ধুর কথা খুব মনে পড়ছে ৷ শেখ হাসিনা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলতে চান ৷ এই বার্তা পেতেই দ্রুত বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ শনিবার একান্তে বৈঠকে আবারও মুখোমুখি হতে চলেছে মমতা-হাসিনা ৷ এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি হাসিনাকে খুব ভালবাসি ৷ উনিও আমাকে খুব স্নেহ করেন ৷ আর এই আন্তরিকতা আমাদের চিরকালের ৷ অনেক ক্যাবিনেট মিনিস্টারও আসছেন ৷ ওনাদের সবাইকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি ৷
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মত, এক দেশের প্রধানমন্ত্রী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক একটি বড়সড় কূটনৈতিক চমক ৷ দুই নেত্রী মুখোমুখি হলে বাংলাদেশ নির্বাচনের আগে তিস্তা চুক্তি নিয়ে বৈঠক হবেই ৷ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও কয়েকটি অনুরোধ করতে পারেন শেখ হাসিনা ৷ এছাড়াও অনুপ্রবেশ এবং নিরাপত্তা নিয়েও আলোচনা হতে পারে দু’পক্ষে ৷ এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ৷প্রাইভেট হেলিকপ্টারে চেপে আজ সকালেই শান্তিনিকেতন পৌঁছেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৷ তাঁকে শান্তিনিকেতনে স্বাগত জানাতে উপস্থিত হয়েছিলেন মমতা ৷
শান্তিনিকেতনে বহু প্রতিক্ষীত বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধন করলেন নরেন্দ্র মোদী ও শেখ হাসিনা। উদ্বোধন অনুষ্ঠানের বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভারতের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এদিন হাসিনার বক্তব্যজুড়ে ছিল দু’দেশের যৌথ ঐতিহ্য ও বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের প্রতি ভারতের নানা অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতা। তিনি আরও বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছিটমহল নিয়ে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেখানে ভারত ও বাংলাদেশ যেভাবে ছিটমহল বিনিময় করেছে, তার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান হাসিনা। হাসিনা বলেন, ‘‘ভারত আমাদের প্রতিবেশী, আমাদের বড় বন্ধু। ভারতের অবদান আমরা ভুলব না। যে কোনও সমস্যা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মাধ্যমে সমাধান করতে পারব। আমাদের উন্নয়নে ভারত সহযোগিতা করে যাচ্ছে।’এর পাশাপাশি তিনি আবেগঘন হয়ে বলেন, ১৯৭৫ সালের কথা উল্লেখ করেন, কীভাবে সেসময় তাঁদের পরিবারের ওপর হামলা চলেছিল, কীভাবে তাঁর আত্মীয়রা প্রাণ হাতে নিয়ে ভারতে এসেছিলেন, সেসময় কীভাবে ভারত পাশে দাঁড়িয়েছিল, তারই স্মৃতিচারণা করেন তিনি। হাসিনা বলেন, ‘সেইসময় ভারত যদি আমাদের পাশে না দাঁড়াত, তবে জানি না আমাদের কী হত। সেসময় ভারতের স্নেহছায়া যদি না পেতাম, যদি আমাদের জীবন অন্যদিকে মোড় নিত।’ রোহিঙ্গা প্রসঙ্গও উঠে আসে হাসিনার কথায়। তিনি বলেন, ‘প্রায় ১১ লক্ষ রোহিঙ্গাকে আমরা আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। আমরা তাদের তাড়াতে পারিনি। এক্ষেত্রেও আমরা ভারতকে পাশে পেয়েছি। ভারত বাংলাদেশ বন্ধুত্ব দীর্ঘজীবী হোক-এ কথায় বলে নিজের বক্তব্য শেষ করেন হাসিনা। প্রসঙ্গত, এদিনের অনুষ্ঠানে কথার বলার মাঝে, একবার তিস্তা প্রসঙ্গ উত্থাপন করেননি শেখ হাসিনা। তিস্তা জলবণ্টন চুক্তি এখনও রূপায়িত হয়নি।
বিস্তারিত আসছে