কেমন আছো “আ-য়-লা” ??

দক্ষিণ ২৪ পরগণা ঃ—“আ-য়-লা” তুমি কেমন আছো ?
কেমন আর থাকবো ? একদম ভালো নেই। ২০০৯ সালের ২৫ মে সোমবার থেকে আজ অবধি স্বামী সাইক্লোনের অত্যাচারে জর্জরিত অায়লা একদমই ভালো নেই!থানা-পুলিশ-কোর্ট-কাছারী অনেক কিছুই হয়েছে কিন্তু দুর্ভাগ্য “আ-য়-লা” র জীবনে পরিবর্তন এলো কই ?এক সময় “আ-য়-লা”-সাইক্লোনের সাংসারিক বিবাদ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ভিন্ন ভিন্ন ভাবে লিখে আলোড়িত করেছিল কিন্তু প্রায় ৯ বছর অতিক্রম হয়ে গেল তাদের সংসারে কোন পরিবর্তন নেই।
যৌতুক হিসাবে যা কিছুই ছিল তা সবই শেষ। এখন বাচ্চা-কাচ্ছা নিয়েই বেঁচে থাকাই বড় দায়। পুকুরে জল নেই,খাবার নেই,মাঠে ফসল নেই,গৃহস্থে গরু-ছাগল-হাঁস-মুরগি নেই!জঙ্গলে মধু নেই,নদীতে বাঁধ নেই তায় আবার দক্ষিণ রায়ের হিংস্র আক্রমণ থেকে প্রাণ বাঁচানোই দায়।তারপর নিজেদের বসবাসের কোন স্থায়ীত্ব নেই!এমন অসহ্য জ্বালা-যন্ত্রণা আর ভালো লাগে না। নিজের ঘরটা ৩৫০০ কিমি বেড়াদিয়ে সুন্দরভাবে সাজিয়েছিল সাইক্লোন। তা আবার ২০০৯ সালে ২৫ মে সোমবার নিজেদের মধ্যে গন্ডগোল করে রাগের বশে বেড়া ভাঙতে ভাঙতে ৭৭৮ কিমি বেড়া ভেঙেই ফেলেছে। আজ অবধি সেই বেড়া সঠিক ভাবে মেরামত হয় নি।হবেই বা কি করে এখানেও তো রাজনীতির খেলা। তাই সামনে বর্ষা অার অমাবস্যা কিংবা পূর্ণিমার কোটাল নদীতে জল বাড়লে ভয় লাগে,যেকোন মুহুর্তে আবার নিজের কুঁড়ে ঘরটা(সুন্দরবন) ভেঙে না যায়। নিজেদের পারিবারিক অশান্তির পর প্রতিবেশীরা(কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার)বলেছিল ৭৭৮ কিমি বেড়াটা কংক্রীটের করে দেবে আর নিজেদের থাকার জন্য ঘর বানিয়ে দেবে,না হলে এক কালীন দশ হাজার টাকা দেবে। কিন্তু কোথায় কি ?এই সামান্য টাকার জন্য সাইক্লোন(“আ-য়-লা” র স্বামী)কে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের কর্মকর্তাদের কাছে ছোটাছুটি করতে হয়েছে যাতে করে পাশবইটা হয়।পাশবইটি যদিও বা হল কিন্তু টাকা কোথায় ?আর যদিও বা টাকা এল রাজনৈতিক দাদারা ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা করে আয়লার পরিবারের কাছে চাইলো।
না হলে টাকা দেওয়া হবেনা। এতসব ঝামেলার মধ্যে চলছে “আ-য়-লা”-সাইক্লোনের ভেঙে চুরমার হয়ে যাওয়া একান্নবর্তী সংসার।
আয়লা-সাইক্লোন দুজনেই দাপুটে,কেউই কম যায়না। তারপর দুজনেরই রাশির কোন মিলনেই। উভয় উভয়েরই শত্রু রাশি। স্বামী-স্ত্রীতে মিল নেই ভালো ভাবও নেই!
“আ-য়-লা” এমন দাপুটে মেয়ে যে,গন্ডগোলের পর বাড়ীর সমস্ত গাছ-পালা কেটে ধ্বংস করেছে পরিবেশ। সেই সাথে নদীতে যত্রতত্র আবর্জনা ফেলা,বেআইনি ভাবে মীনধরা এসব তো চলছেই। এইসব বাজে কাজ করে প্রাকৃতিক সম্পদও নষ্ট করছে। এসব ঝামেলা সহ্য করেও মান-সম্মান দিকে তাকিয়ে সাইক্লোন “আ-য়-লা” কে নিয়ে সংসার করতে চায়!কিন্তু কিছুতেই তো হচ্ছে না!
এতসবের পর প্রতিবেশীরা বলাবলি করছে আগামী দিনে “আ-য়-লা”-সাইক্লোনের রাশিফল খুবই খারাপ দুজনেরই ভাগ্যে গ্রহরাজ শনি অবস্থান করছে ফলে,দুজনেই যদি ক্ষেপে উঠে বচসা বাধায় তাহলে আয়লা-সাইক্লোনের একান্নবর্তী পরিবার(সুন্দরবনের ১০২ দুটি দ্বীপের মধ্যে যে ৫৪টির অস্তিত্ব রয়েছে)ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।
এহেন গ্রহের দশা কাটাতে “আ-য়-লা”-সাইক্লোনের মধ্যে মতের মিল আনতে হবে। আর তা না হলে প্রতিবেশীরা(রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার)কেউই “আ-য়-লা” র পরিবার(সুন্দরবন) কে রক্ষা করতে পারবে না।পৃথিবীর মানচিত্র থেকে বিলীন হয়ে যেতে পারে আয়লার সংসার(সুন্দরবন)।
যাতে করে “আ-য়-লা” -সাইক্লোনের পরিবার সকলে(সুন্দরবনের মানুষ ও পশুপাখি) পৃথিবীতে সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকতে পারে তার জন্য প্রতিবেশী অর্থাৎ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে সঠিক ভাবে অগ্রনি ভুমিকা নিয়ে গাছপালা লাগাতে হবে সঠিক পদ্ধতিতে নদীবাঁধ মেরামতি করে রক্ষা করতে হবে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ব-দ্বীপ সুন্দরবন অর্থাৎ “আ-য়-লা” র পরিবার কে। আর এ দায়িত্ব আমাদের সকলের।