শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মেসিকে কেউ বার্সার অনুমতি ছাড়া কিনতে চাইলে তাদের খরচ করতে হবে ৭০ কোটি ইউরো

News Sundarban.com :
নভেম্বর ৩০, ২০১৭
news-image

বার্সেলোনার সঙ্গে ২০২১ সাল পর্যন্ত নতুন চুক্তি করেছেন লিওনেল মেসি। ২০২১ সালের ৩০ জুনের আগ পর্যন্ত মেসিকে কেউ বার্সার অনুমতি ছাড়া কিনতে চাইলে তাদের খরচ করতে হবে ৭০ কোটি ইউরো। নতুন চুক্তিতে ক্লাবের ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়ের ‘রিলিজ ক্লজ’ বার্সা নির্ধারণ করেছে ৭০০ মিলিয়ন ইউরো (৭ হাজার ৬১ কোটি টাকা)। বেশ ‘অল্প’!

এখন ধরে নেওয়া যাক, কোনো ক্লাব এ দামে মেসিকে কিনে নিল। তখন এই বিপুল অর্থ দিয়ে কী করবে বার্সা? চাইলে বিশ্বের সবচেয়ে দামি ২০টি দলের মধ্যে ৯টির যেকোনো একটিকে কিনে ফেলতে পারবে বার্সা।

ক্লাব চালানোর যে ঝক্কি, তাতে ক্লাব কেনার কোনো ইচ্ছা না-ও জাগতে পারে বার্সার। তাদের ইচ্ছে হতে পারে অন্য কোনো খেলায় নজর দিতে। সে ক্ষেত্রে কিন্তু মেসির ‘রিলিজ ক্লজ’ দিয়ে তারা কিনতে পারবে যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারের (এমএলএসের) সব খেলোয়াড়কে! সে রকম কোনো ইচ্ছা না থাকলে নিজেদের ৫০ লাখ জার্সির দাম চুকিয়েও দিতে পারবে বার্সা।

নেইমারের দলবদলের পর ঠেকে শিখেছে বার্সা। নতুন চুক্তির আগে মেসির ‘রিলিজ ক্লজ’ ছিল ৩০ কোটি ইউরো আর নেইমারের ২২ কোটি ২০ লাখ। নেইমারকে দল বদলের বিশ্ব রেকর্ড (২২ কোটি ২০ লাখ ইউরো) গড়ে টেনে নিয়েছে প্যারিস সেন্ট জার্মেই। এ কারণে মেসির আগের ‘রিলিজ ক্লজ’কে নিরাপদ মনে করেনি কাতালান ক্লাবটি। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডকে ধরে রাখতেই ‘রিলিজ ক্লজ’টা আকাশে তুলেছে বার্সা।

সে যাই হোক, বিস্ময়ে থ বনে যাওয়ার মতো এ মূল্যেও মেসিকে কেনার সামর্থ্য রাখে বিশ্বের কিছু ক্লাব। মেসি যদি সত্যিই বার্সা ছাড়তে চান, তখন এ দাম চুকিয়েই তাঁকে কিনতে হবে। আর সেই দামের ওজন এতটাই বেশি যে খ্যাতনামা সাময়িকী ‘ফোর্বস’ বলছে, মেসির মূল্য দিয়ে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ৯টি ধনী ক্লাবকে কেনার পরও আরও কিছু টাকা হাতে থাকবে বার্সার।

‘ফোর্বস’ বলছে, বিশ্বের শীর্ষ ২০ ক্লাবের মধ্যে ১১টির দাম ৭০ কোটি ইউরোর কিছু বেশি। এসব ক্লাবের মধ্যে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, এসি মিলান এবং বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের দাম বেশ কম। চমকের এখানেই শেষ নয়। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মতো ক্লাব এক বছরে যে পরিমাণ আয় করে থাকে, মেসির ‘রিলিজ ক্লজ’ মূল্য তার চেয়ে বেশি! ‘ডেলয়েট মানি লিগ’-এর জরিপে ২০১৫-১৬ মৌসুমে সর্বোচ্চ ৬৮ কোটি ৯০ লাখ ইউরো আয় করেছিল ইউনাইটেড। মানে, এরপরও আরও ১ কোটি ১০ লাখ ইউরো হাতে থাকবে বার্সার।

বলা হচ্ছিল, এমএলএসের সব খেলোয়াড় কেনার কথা। মেসিকে বিক্রির টাকা দিয়ে বার্সার জন্য সেটা করা হবে ‘বাঁ হাতের খেল’! ফুটবল বাজার বিশ্লেষক জার্মান প্রতিষ্ঠান ‘ট্রান্সফার মার্কেট’-এর হিসাব বলছে, এমএলএসের ২২টি দলের মোট খেলোয়াড়দের বাজারমূল্য ৪০ কোটি ৭০ লাখ ইউরো। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় লিগটির সব খেলোয়াড়কে কেনার পরও ২৯ কোটি ৩০ লাখ ইউরো হাতে থাকবে কাতালান ক্লাবটির।

‘ট্রান্সফার মার্কেট’ অনুযায়ী মেসি বাদে বার্সা স্কোয়াডের বাকি সব খেলোয়াড়ের মোট দাম ৫৮ কোটি ৬০ লাখ ইউরো। মানে, লুইস সুয়ারেজ-মাচেরানোরা সবাই মিলেও টাকার অঙ্কে তাঁর ধারেকাছে আসতে পারবেন না। শুধু তা-ই নয়, মেসিকে বিক্রি করে বার্সা চাইলে স্প্যানিশ লা লিগার অর্ধেক খেলোয়াড়কে কিনতে পারে। ট্রান্সফার মার্কেট বলছে, লা লিগার অর্ধেকসংখ্যক খেলোয়াড়ের মোট দাম ৬২ কোটি ২০ লাখ ইউরো!

মেসিকে এত দাম দিয়ে যে সব ক্লাবই কিনতে চাইবে, তা কিন্তু নয়। কোনো ক্লাব চাইলে এ টাকা দিয়ে আর্সেনালের এমিরেটস স্টেডিয়াম কিনতে পারবে এবং এরপরও প্রায় ১০ কোটি ইউরো হাতে থাকবে তাদের!

কিন্তু প্রশ্ন হলো, মেসিকে এত দাম দিয়ে কেউ কিনবে কি না, অথবা মেসি কখনো বার্সা ছাড়তে চাইবেন কি না? অনিবার্য কিছু না ঘটলে জবাবটা কিন্তু সবারই জানা! অন্তত শেষ প্রশ্নটির ক্ষেত্রে একটাই জবাব, সেটা সম্ভবত ‘না’! -ডেকান ক্রনিকল।