বারুইপুরে মারণ রোগে আক্রান্ত পুজোর উদ্যোক্তারা

এ পুজো অন্য পুজো, অন্য পুজো অন্য ভাবে। সমাজের আর পাঁচটা পুজোর মত নয় এই দুর্গাপুজো। কারণ সমাজের আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো নয় এই পুজোর উদ্যোক্তারা। এই পুজোর উদ্যোক্তারা কেউ মারণ রোগ এইচআইভিতে আক্রান্ত তো কেউ মানসিক বা শারীরিক প্রতিবন্ধী। কিন্তু এই সমস্যা যে কোন কিছুর প্রতিবন্ধকতা হতে পারে না। তা আরও একবার প্রমানিত হল এই শিশুদের হাত ধরে। অন্য পুজো অন্য ভাবে আয়োজন করে এই শিশুরা বুঝিয়ে দিল তারাও পারে। ১৯৯৮ সালে দক্ষিণ ২৪ পরগণার বারুইপুর থানার গোবিন্দপুরে অফার নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হাত ধরে জন্ম হয় আপনজনের। মূলত মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য তৈরি এই হোমে তাদের নতুন করে বাঁচতে শেখার রশদ জোগানো হয়। কয়েকবছর পরেই উদ্যোক্তারা এর পাশেই আনন্দঘর নামে আরও একটি হোমের সূচনা করেন এইচ আই ভি আক্রান্ত শিশুদের জন্য। এদেরকে সমাজের আর পাঁচটা সাধারণ শিশুদের মত করে বাঁচতে শেখান হোম কত্রিপক্ষ। কিন্তু মনটা খারাপ হয়ে যেত দুর্গাপূজা এলে। এই পুজোর সময় যখন সমাজের আর পাঁচটা সাধারণ শিশু ভীষণ আনন্দ করবে, ঠাকুর দেখতে যাবে নতুন জামা কাপড় পড়ে ঠিক তখন এই আপনজন, আনন্দঘরের শিশুরা এই হোমের চার দেওয়ালের মধ্যে বন্দী হয়ে থাকবে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই বারো বছর আগে হোম কত্রিপক্ষ এখানে শুরু করেন দেবী দুর্গার আরাধনা। পঞ্জিকা মেনেই রথযাত্রার দিন কাঠামো পুজো দিয়ে শুরু হয় প্রতিমা তৈরির কাজ। ধীরে ধীরে এখানেই এই সমস্ত শিশুদের সামনেই খড়, মাটিতে রূপ পায় মা দুর্গা।