মহরমের দিন কেন বিসর্জন করা যাবে না, হাইকোর্টে শুনানি সোমবার

চাপে পরে কলকাতা হাইকোর্টে মুখ্যমন্ত্রীর নিষেধাজ্ঞা বদলে ফেলল রাজ্য সরকার। নেতাজী ইনডোর স্টেডিয়ামের পুজো কমিটি গুলোর এক সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায় বলেছিলেন মহরমের দরুন ৩০ সেপ্টেম্বর, বিজয়া দশমীর দিন সন্ধ্যা ৬ টার পর কোনও বিসর্জন করা যাবে না। বিসর্জন করা যাবে না পরদিন ১লা অক্টোবর, একাদশীর দিনও। মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জনস্বার্থে মামলা হয় হাইকোর্টে। শুক্রবার ছিল প্রধান বিচারপতি নিশিথা মাত্রে এবং বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার শুনানি। সেখানেই রাজ্য সরকারের পক্ষে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত রাজ্য সরকারের একটি বিজ্ঞপ্তি দেখান। যাতে বলা হয়েছে সন্ধ্যা ৬ টা নয়, ৩০ সেপ্টেম্বর রাত ১০টা পর্যন্ত দুর্গাপুজোর বিসর্জন করা যাবে। কিন্তু ১ লা অক্টোবর মহরমের দিন কেন বিসর্জন করা যাবে না, এই প্রশ্নে আবার আগামী সোমবার মামলার শুনানি হবে বলে জানিয়ে দেন প্রধান বিচারপতি নিশিথা মাত্রে।
দুর্গাপুজোর বিসর্জন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জনস্বার্থে মামলা দায়ের করা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। শুক্রবার অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি নিশিথা মাত্রের এবং বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলা ছিল চোদ্দ নম্বর আইটেম।
আজ শুনানি শুরু হলে মামলার আইনজীবী স্মরজিৎ রায় চৌধুরি বলেন, বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে,দশমীর দিন রাত্রি ১ টা ৩৬ পর্যন্ত বিসর্জন দেওয়া যাবে। কিন্তু রাত ১২ টার পর থেকে মহরম পরে যাচ্ছে। তাহলে সরাসরি নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী বিসর্জন দেওয়া যাবে না। তাই ১ টা ৩৬ পর্যন্ত বিসর্জন করার অনুমতি দেওয়া হোক। আর যারা ওইদিন রাতে দিতে পারবেন না, তাদের জন্য মহরমের দিন কিছুটা সময় শিথিল করা হোক। পারলে মহরম আর বিসর্জনের আলাদা আলাদা নির্দিষ্ট পথ বেঁধে দেওয়া হোক।
রাজ্য সরকারের পক্ষে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, রাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রধান সচিব এক ১৪ সেপ্টেম্বর এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলেছেন, ৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত বিসর্জন করা যাবে বলে ৯ সেপ্টেম্বর যে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে, তাতে টাইপের ভুল ছিল। তাই নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। ১৪ তারিখের এই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে রাত্রি দশটার মধ্যে বিসর্জন দিতে হবে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে সই করেছেন কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার সদর সুপ্রিম সরকারও।
তখন প্রধান বিচারপতি নিশিথা মাত্রে বলেন, কেন রাত্রি দশটার মধ্যে বিসর্জন দেওয়া যাবে না। জবাবে আইনজীবী স্মরজিৎ রায়চৌধুরি বলেন, আমার বাড়ি সাবর্ণ রায়চৌধুরিদের পুজো কলকাতার সবচেয়ে প্রাচীন পুজো। এক জায়গায় সাতটি দুর্গাপুজো হয়। রাত দশটার মধ্যে সমস্ত প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া সম্ভব নয়। এটা ব্যক্তিগত ইস্যু নয়। এটা সকলেরই সমস্যা।