মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাস সরিয়ে ছত্রপতি শিবাজীর প্রতিষ্ঠিত সাম্রাজ্যের ইতিহাস

মহারাষ্ট্রের স্কুলের পাঠ্যবই থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাস।
ভারতের একটি বড় অংশে প্রায় তিনশ বছর রাজত্ব করা মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাস সরিয়ে সেখানে নিয়ে আসা হচ্ছে হিন্দু শাসক ছত্রপতি শিবাজীর প্রতিষ্ঠিত সাম্রাজ্যের ইতিহাস।
এ নিয়ে ভারতের পশ্চিম-মধ্যাঞ্চলীয় রাজ্যটিতে বিতর্ক শুরু হয়েছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ভারতের বেশিরভাগ সৌধ মুঘল আমলে তৈরি হয়েছিল। মুঘল সাম্রাজ্য দেশটির ইতিহাসের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু মহারাষ্ট্রের অনেক স্কুল পড়ুয়াদের কাছে সেই ইতিহাসের কোনও গুরুত্ব নেই।
তাদের সিলেবাস থেকে পুরোপুরি বাদ দেওয়া হয়েছে মুঘল আমলের ইতিহাস। পরিবর্তে ইতিহাসের বইগুলোতে ছত্রপতি শিবাজীকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সপ্তদশ শতকে শিবাজী মুঘলদের পরাজিত করে মারাঠা সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই রাজত্ব মহারাষ্ট্রের সীমা ছাড়িয়ে আরও বেশ কিছু অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিল।
ছত্রপতি ছিলেন হিন্দু। আর মুঘলরা ছিলেন মুসলমান। কিন্তু ইতিহাস পাঠ্যপুস্তক কমিটি বলছে, এই সিদ্ধান্তের পেছনে ধর্মীয় বা রাজনৈতিক কোনও কারণ নেই।
কমিটির চেয়ারম্যান সদানন্দ মোরে বলেন, ‘আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। তাই মারাঠা ইতিহাসের সঙ্গে তাদের সরাসরি যোগ আছে। সমস্যাটা হল বইয়ে পৃষ্ঠা সংখ্যা সীমিত। তাই দুটো ইতিহাসই রাখা কঠিন, আবার মুঘল ইতিহাস রেখে মারাঠা ইতিহাস তো সরিয়ে দেওয়া যায় না!’
দক্ষিণপন্থি রাজনৈতিক দলগুলি মুঘলদের ‘মুসলিম আক্রমণকারী’ হিসাবে চিহ্নিত করে। তাদের কথায়, হিন্দুদের ওপরে অনেক অত্যাচার করেছে মুঘলরা।
বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই বক্তব্য আরও জোরালো হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু মুঘল শাসক ইসলামের প্রসারের চেষ্টা করেছেন ঠিকই কিন্তু বাকিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু রাজত্বগুলোর ওপরে শান্তিতেই কর্তৃত্ব করেছেন।
তাদের মতে, মুঘল সম্রাটদের শাসন ক্ষমতা বা দক্ষতার নিরিখেই তাদের বিচার করা উচিত, ধর্মের ওপর ভিত্তি করে নয়।