শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আর্জেন্টিনা যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে রাশিয়া বিশ্বকাপে হয়তো দেখা না-ও যেতে পারে মেসিকে!

News Sundarban.com :
সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৭
news-image

এ যেন নিয়ম হয়ে যাচ্ছে! প্রতি বিশ্বকাপের আগেই শঙ্কা জাগে, বিশ্বের সেরা দুই খেলোয়াড় কি থাকবেন বিশ্বকাপে? লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো—এ শতাব্দীর সেরা দুই খেলোয়াড়। কিন্তু বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের শেষ পর্যায়ে এসেও বলা যাচ্ছে না, এঁদের দুজনকে দেখা যাবে রাশিয়ায়। রোনালদোর ক্ষেত্রে তবু এবার আশঙ্কাটা কম। তবে আর্জেন্টিনা যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে রাশিয়া বিশ্বকাপে হয়তো দেখা না-ও যেতে পারে মেসিকে!

নিজেদের মাঠে ভেনেজুয়েলার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে আর্জেন্টিনা। দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের সবচেয়ে দুর্বল দলটিকে আর্জেন্টিনা আগের লেগেও হারাতে পারেনি। তবে সেটি ভেনেজুয়েলার মাঠ বলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখেছেন অনেকে। কিন্তু এবার নিজেদের মাঠে, জিততেই হবে এমন ম্যাচে পয়েন্ট ভাগাভাগি মেনে নেওয়া কঠিন। বিশেষ করে একটি দলের আক্রমণভাগে যখন পাওলো দিবালা কিংবা মাওরো ইকার্দির মতো স্ট্রাইকার থাকেন। অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া আর মেসির কথা তো বাদই। সে সঙ্গে আরেকটি বিষয়ও চাইলে মাথায় রাখতে পারেন, গঞ্জালো হিগুয়েইন ও সার্জিও আগুয়েরোর মতো স্ট্রাইকারও কিন্তু আর্জেন্টিনা দলেরই সদস্য!
তারকাখচিত এমন আক্রমণভাগ থাকা সত্ত্বেও ঘরের মাঠে গোল করতে পারেনি আর্জেন্টিনা। ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে সমতা এনে দেওয়া গোলটিও এসেছে প্রতিপক্ষের উপহার হয়ে! স্ট্রাইকারদের ব্যর্থতাতেই ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে এমন হারের ‘সমান’ ড্র মেনে নিতে হলো মেসিদের। তবে এ ম্যাচেই যে মেসিদের রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলা দুরাশা হয়ে গেছে, তা বলার সময় এখনো আসেনি। এখনো রাশিয়া যাওয়ার সুযোগ আছে আর্জেন্টিনার এবং সেটা প্লে-অফের ঝক্কি এড়িয়েই।
কাজটা কিন্তু খুব কঠিন নয়। আগামী দুই ম্যাচেই জিততে হবে আর্জেন্টিনাকে। তাহলেই চারে থাকা পেরুকে টপকে যাবেন মেসিরা এবং বাকি দলগুলো যা-ই করুক না কেন, রাশিয়া যাওয়া নিয়ে তখন আর কোনো চিন্তা করতে হবে না আর্জেন্টিনাকে। কিন্তু ঝামেলা তো এখানেই, হোর্হে সাম্পাওলির দলের জন্য টানা দুই ম্যাচে জয় পাওয়াটাই যে কঠিন ব্যাপার! এবারের বাছাইপর্বে শুধু দুবার টানা দুই ম্যাচে জয় পেয়েছে আর্জেন্টিনা। সে চারটি ম্যাচ ছিল ঘরের মাঠে। আর আর্জেন্টিনা বাছাইয়ের শেষ ম্যাচটি খেলবে ইকুয়েডরের মাঠে। উচ্চতার জন্য এমনিতেই ইকুয়েডরে গিয়ে খেলা কঠিন, আর এবার তো এই ইকুয়েডরের কাছে ঘরের মাঠেই ২-০ ব্যবধানে হেরেছে আর্জেন্টিনা।
নিজেদের মাঠে পেরুর বিপক্ষেও খুব একটা এগিয়ে থাকবে না মেসিরা। পেরুর বিপক্ষে আগের লেগ শেষ হয়েছিল ২-২ সমতায়। আর এরই মধ্যে পেরু আর্জেন্টিনাকে ডিঙিয়ে উঠে গেছে চতুর্থ স্থানে। বিশ্বকাপকে চোখের সামনে দেখতে পাওয়া পেরু কি আর ছেড়ে কথা বলবে? আর্জেন্টিনা কোচ সাম্পাওলি অবশ্য এখনো আশা হারাননি, ‘আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে এবং খেলোয়াড়দের শক্তি জোগাতে হবে।’
তবে শক্তির জায়গায় গোল জোগাড় করতে পারলেও সম্ভবত খুশি হবেন সাম্পাওলি। বাছাইপর্ব এলেই যে গোল করতে ভুলে যান আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডরা। বাছাইপর্বে ১৬ ম্যাচে ১৬ গোল আর্জেন্টিনার, এর মধ্যে একটি আবার আত্মঘাতী। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলে আর্জেন্টিনার চেয়ে কম গোল করেছে শুধু বলিভিয়া! মেসি-দিবালার নামের সঙ্গে এ পরিসংখ্যান একদমই যায় না।
পেরু-ইকুয়েডরকে হারাতে না পারলে অবশ্য কলম্বিয়া ও ব্রাজিলের সমর্থক বনে যেতে হবে আর্জেন্টিনাকে। কারণ পেরু ও চিলিকে আটকানোর দায়িত্ব তখন এ দুই দলের হাতেই ছেড়ে দিতে হবে মেসিদের!