বুধবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সমকমী সন্দেহে হস্টেল ছাড়ার নির্দেশ

News Sundarban.com :
সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৭
news-image

এক অন্ধ কলেজ ছাত্রীকে আবাসন ছাড়ার নির্দেশ দিল হস্টেল কর্তৃপক্ষ। সমকামী সন্দেহে ওই মেয়েটিকে হস্টেল ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে বলে উঠছে অভিযোগ। এদিকে হস্টেল কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের পরই শুরু হয়েছে বিতর্ক। কোন রকম তদন্ত কমিটি না বসিয়ে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত না হওয়ার আগেই, একতরফা ভাবে মেয়েটির উপর এই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে হস্টেল সূত্রে জানা গিয়েছে।
মেয়েটিকে হস্টেল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তাকে কলেজে বহাল রাখা হয়েছে। জানা গিয়েছে, মেয়েটি মহিলা মহাবিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। কলেজটি বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা অনুমোদিত। সহকারী অধ্যাপক নীলম আর্ত্রি জানান, হস্টেলের ১৬ জন আবাসিক তাকে মেয়েটির স্বভাব ও চরিত্র নিয়ে আঙুল তুলে লিখিত ভাবে জানিয়েছে। এমনকী মেয়েটির চাহিদা পূরণ না করলে আত্মহত্যার হুমকি দেয় সে। এরপরই মেয়েটির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসাবে হস্টেল ছাড়ার নির্দেশ দেন নীলম আর্ত্রি।
যদিও সমকামী হওয়ার জন্যই মেয়েটিকে হস্টেল ছাড়া করা হয়েছে তা নিয়ে মন্তব্য এড়িয়ে গিয়েছেন ওই সহকারী অধ্যাপক। নীলম আর্ত্রি জানান, মেয়েটি সহকারী আবাসিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করত। তাদেরকে দিয়ে নিজের কাজ করতে বাধ্য করত। মেয়েটি নিজেও সুস্থ নয়। সে মানসিক অবসাদে ভুগতো। মেয়েটির পরিবারকে তাকে ভালো ডাক্তার দেখানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মেয়েটির স্বাস্থ্যের উন্নতি হলে তাকে আবার হস্টেলে ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানান নীলম আর্ত্রি।
আরেক অধ্যাপকও মেয়েটির সমকামীতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, যে ব্যবহার সে প্রকাশ করেছে তা একেবারেই প্রথম ধাপ। সেখান থেকে এই সিদ্ধান্তে আসা কঠিন যে মেয়েটি সমকামী। কিন্তু হস্টেলের আরও আবাসিকদের সুরক্ষার কথাও চিন্তা করতে হবে। অন্যান্য আবাসিকরা লিখিত ভাবে জানিয়েছে যে, মেয়েটির ব্যবহার তাদের অস্বস্তি বোধ করে তোলে। তাদেরকে প্রথমে মেয়েটির সঙ্গে মানিয়ে চলার কথা বলা হয়। কিন্তু গত সপ্তাহ ধরে এত অভিযোগ আসতে শুরু করেছে যে মেয়েটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই হল।
যদিও হস্টেল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অভিযোগ প্রমাণে কোনও তদন্ত কমিটি না বসিয়ে হস্টেল কর্তপক্ষ একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়ায় শুরু হয়েছে বিতর্ক। আবাসনের এক ছাত্রী জানিয়েছে, মেয়েটি এক চোখে দেখতে পায় না। আবাসন কর্তৃপক্ষের তার প্রতি আরও যত্নশীল হওয়া উচিত ছিল। এই অভিযোগের পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে মেয়েটি ও তার পরিবার। কোনও তদন্ত কমিটি না বসিয়ে মেয়েটি বিরুদ্ধে অভিযোগের সতত্য প্রমাণিত না হওয়ার আগে, তাকে হস্টেল থেকে তাড়িয়ে দিয়ে ঠিক কাজ করেনি।