বৃহস্পতিবার, ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পালিত কন্যা বললেও হানির সঙ্গে রাম রহিমের শারীরিক সম্পর্ক ছিল

News Sundarban.com :
সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৭
news-image

দুই অনুসারীকে ধর্ষণের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিম সিংয়ের পালিত কন্যা হানিপ্রীত ইনসানের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিশ জারি করেছে হরিয়ানা পুলিশ। একই সঙ্গে হরিয়ানা রাজ্যে সিরসার ডেরার মুখপাত্র আদিত্য ইনসানের বিরুদ্ধেও এই নোটিশ জারি করা হয়েছে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার হানিপ্রীত ও আদিত্যর বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিশ জারির পর বিমানবন্দর, বাসস্ট্যান্ড এবং দেশের সব কটি রেলস্টেশনসহ দেশ থেকে পালানোর বিভিন্ন রুটে সতর্ক প্রহরা রাখা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আদালত গত ২৫ আগস্ট রাম রহিমকে ধর্ষণ মামলায় দোষী প্রমাণিত করার দিন আদালত চত্বর থেকে তাঁকে নিয়ে পালানোর ছক করেছিলেন হানিপ্রীত। কিন্তু সে পরিকল্পনা সফল হয়নি। এরপর থেকে হানিপ্রীতের কোনো খোঁজ নেই পুলিশের কাছে।

হরিয়ানার পঞ্চকুলার জেলার পুলিশপ্রধান মানবীর সিং বলেন, আদালত চত্বর থেকে রাম রহিমকে নিয়ে পালানোর ষড়যন্ত্র করায় হানিপ্রীতকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ২৫ আগস্ট রাম রহিমের অনুসারীদের সহিংস ঘটনা ঘটাতে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে ডেরার মুখপাত্র আদিত্য ইনসান ও ধীমান ইনসানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ধীমানকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালত তাঁকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

 

পঞ্চকুলার পুলিশ কমিশনার এ এস চাওলা বলেন, ঘটনার পর থেকে হানিপ্রীত ও আদিত্য আত্মগোপনে আছেন। তাঁদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিশ জারি করা হয়েছে। তাঁরা যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন, সে কারণে বিমানবন্দর, বাসস্ট্যান্ড ও দেশের সব কটি রেলস্টেশনসহ বিভিন্ন রুটে সতর্ক প্রহরা রাখা হয়েছে।

এ এস চাওলা আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে ধীমান ইনসান জানিয়েছেন যে হানিপ্রীত ইতিমধ্যেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারেন। তিনি ২৫ আগস্টের সহিংস ঘটনার ষড়যন্ত্রেও জড়িত।

রাম রহিমের নিত্য ছায়াসঙ্গী ছিলেন তাঁর পালিত কন্যা হানিপ্রীত ইনসান। ‘বাবা’র ভক্তরা তাঁকে ‘বাবার দেবদূত’ বলে চেনেন ও মানেন।

হানিপ্রীতের আসল নাম প্রিয়াঙ্কা তানেজা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তাঁর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। ফেসবুকে তাঁর ভক্তের সংখ্যাটাও অবাক করার মতো, পাঁচ লাখ। রাম রহিমের ভক্তরা অনেকেই মনে করেন, হানিপ্রীতের সিদ্ধান্তই তাঁর ‘বাবা’র সিদ্ধান্ত। পালিত কন্যা হলেও বাবার খুবই ঘনিষ্ঠ। আর তাই খুব অল্প সময়েই তাঁর উত্থান। হিসারের ফতেহাবাদের এক সাধারণ ঘরে জন্ম প্রিয়াঙ্কার। ১৯৯৯-এ সিরসার এক ডেরা ভক্ত বিশ্বাস গুপ্তের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। সেই সময় থেকেই রাম রহিমের সঙ্গে পরিচয় এবং ঘনিষ্ঠতা। প্রিয়াঙ্কা থেকে তিনি পরিচিত হন হানিপ্রীত নামে। রাম রহিমই প্রিয়াঙ্কাকে এ নাম দেন।

রাম রহিমের ভক্তদের দাবি, ‘বাবা’র কাছে শ্বশুরবাড়ির পণ নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন হানিপ্রীত। এরপরই নাকি ২০০৯ সালে হানিকে দত্তক নেন রাম রহিম। তখন থেকেই বাবার ছায়াসঙ্গী হানি।

তবে হানিপ্রীতের সাবেক স্বামী বিশ্বাস গুপ্তের অভিযোগ, তিনি কখনো স্ত্রী হানিপ্রীতের সঙ্গে থাকতে পারেননি। তাঁর স্ত্রী থাকতেন রাম রহিমের বিলাসবহুল ডেরায়। পালিত কন্যা বললেও হানির সঙ্গে রাম রহিমের শারীরিক সম্পর্ক ছিল। আর একদিন তিনি নিজ চোখে তা দেখেও ফেলেছিলেন।