ভিড় সামলাতে ঢাকা ছাড়ছে ১০০ নৌযান

ঈদুল আজহা উপলক্ষে দক্ষিণাঞ্চলের ঘরমুখী মানুষের ভিড় বাড়ছে। অতিরিক্ত ভিড় সামলাতে সোমবার ঢাকা ছাড়বে ১০০টির বেশি নৌযান। একই সঙ্গে আজ শুরু হচ্ছে সরকারি ব্যবস্থাপনায় স্পেশাল সার্ভিস।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিআইডব্লিটিএ-এর যুগ্ম পরিচালক (ট্রাফিক) জয়নাল আবেদিন রাইজিংবিডিকে বলেন, গতকাল নিয়মিত ও বিশেষ সার্ভিস মিলিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের উদ্দেশে ঢাকা থেকে মোট ৮১টি ছোট-বড় লঞ্চ ছেড়ে গেছে। আজ ভিড় বেশি হওয়ায় ১০০টির বেশি লঞ্চ ও স্টিমার ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাবে। এর মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিশেষ সার্ভিস রয়েছে।
তিনি বলেন, আজ শুরু হচ্ছে সরকারিভাবে স্পেশাল সার্ভিস। আজ সরকারি দুইটি লঞ্চ স্টিমার ঢাকা-বরিশাল রুটে ছেড়ে যাবে। যদিও এখনো পর্যন্ত ঠিক হয়নি কোন দুই স্টিমার ঢাকা ছেড়ে যাবে।
বিআইডব্লিটিএ সূত্র জানায়, এবারে ঈদুল আজহায় ঢাকা-বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের ২৮টি নৌরুটে সরাসরি দিন ও রাত্রিকালীন সার্ভিস মিলিয়ে ২২টি লঞ্চের পাশাপাশি ঈদ বিশেষ সার্ভিসে আরো ২৪ থেকে ২৬টি লঞ্চ ঢাকা-বরিশাল রুটে সরাসরি যাতায়াত করবে। তবে বিশেষ লঞ্চগুলো অতিরিক্ত যাত্রীদের চাহিদা বিবেচনা করে চলাচল করবে।
বিআইডব্লিউটিএ-এর সূত্র জানায়, ঈদ সার্ভিসের লঞ্চগুলোর মধ্যে সুন্দরবন-৮, ১০, ১১, ১২, সুরভী-৭, ৮, ৯, পারাবত-২, ৯, ১০, ১১, ১২, এমভি টিপু-৭, এমভি ফারহান-৮, কীর্তনখোলা-১, ২, দীপরাজ, কালাম খান-১, তাসরিফ-১, ৪, অ্যাডভেঞ্চার-১, দেশান্তর ও গ্রিনলাইন ২ ও ৩ সহ ২৪টি লঞ্চ থাকবে।
লঞ্চের পাশাপাশি অতিরিক্ত সার্ভিস দেওয়ার জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রস্তুত রাখা ৬টি স্টিমারগুলো হলো- পিএস টার্ন, এমভি মধুমতি, পিএস মাহসুদ, এমভি বাঙ্গালী, পিএস অস্ট্রিচ ও পিএস লেপচা। প্রথমবারের মতো বহরে রাত্রিকালীন সার্ভিসে যুক্ত হবে অ্যাডভেঞ্চার-১ ও আধুনিকায়ন শেষে সুন্দরবন-১১ লঞ্চ। নিয়মিত লঞ্চ সার্ভিসের পাশাপাশি প্রতিদিন ৫ থেকে ৭টি বিশেষ লঞ্চ সার্ভিস প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ঈদের সময় ছোট-বড় মিলিয়ে লঞ্চগুলো প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৩৫টি ট্রিপ দেয়। যাত্রী ভোগান্তি দূর করতে নতুন পন্টুন, নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা ও বিশেষ নিরাপত্তা টিম কাজ করছে। এবা বিলাসবহুল লঞ্চ কোম্পানিগুলোতে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করে।
বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের যাত্রী মিজানুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, বাড়িতে কোরবানির ঈদ উদযাপন করতে ঢাকা ছাড়ছি। সকাল থেকে অনেক ভিড় দেখছি লঞ্চ টার্মিনালে। লঞ্চে অতিরিক্ত ভিড় দেখতে পাচ্ছি। বাড়ি যেতে হবে তাই ঝুঁকি নিয়েও লঞ্চে উঠেছি।
লঞ্চে ভাড়ার বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা যায়, আসন ব্যবস্থাপনা অনুসারে ছোট-বড় লঞ্চসমূহে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। বড় আকারের লঞ্চগুলোতে ডুপ্লেক্স ও ভিআইপি কেবিনের ভাড়া ৩ হাজার টাকা থেকে ৬ হাজার টাকা হয়ে থাকে। যেখানে দুটো বেড, এসি, রেফ্রিজারেটর, টিভি, ডাইনিং সুবিধা রয়েছে।
দুই বেড সুবিধায় ডাবল কেবিনের ভাড়া ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা, এক বেডের সুবিধায় সিঙ্গেল কেবিন ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, সোফা-কাম-বেডের ক্ষেত্রে ৫০০ থেকে থেকে ৭০০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়ে থাকে। এখানেও এসি কিংবা ফ্যান ও টিভির সুবিধা রয়েছে।
এ ছাড়া লঞ্চের ডেকেও (লঞ্চের খোলা স্থান) যাত্রা করা যায়। বড় অনেক লঞ্চে কার্পেট দেওয়া রয়েছে। তবে চাদর-বালিশ যাত্রীকে সঙ্গে বহন করতে হয়। এখানে ভাড়া ২০০ থেকে ২৫০ টাকা।